উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইসলাম করিমভ মারা গেছেন
উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইসলাম করিমভ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শুক্রবার সারাদিন অনেক গুজবের পর উজবেকিস্তানের সরকার শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ইসলাম করিমভের মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেছে। ৭৮ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট করিমভের অবস্থা গত কিছুদিন ধরেই বেশ সংকটজনক ছিল। আগামীকাল শনিবার নিজ শহর সমরখন্দে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার সারাদিন ধরে উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইসলাম করিমভ মারা গেছেন বলে তীব্র জল্পনা চলছিল।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী প্রথম জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট করিমভ মারা গেছেন এবং তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। কিন্তু উজবেকিস্তান থেকে তখনো পর্যন্ত কোন সরকারি ঘোষণা আসেনি। প্রেসিডেন্ট ইসলাম করিমভের স্বাস্থ্য নিয়ে তীব্র জল্পনা-কল্পনা চলছে গত কয়েকদিন ধরে।
ইসলাম করিমভ গত ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে উজবেকিস্তান শাসন করেছেন। তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। ইসলাম করিমভের নিজের শহর সমরখন্দের রাস্তাঘাট পরিস্কার করছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। সেখানে এমন জল্পনা চলছে যে এসব তাকে শেষ বিদায় জানানোর প্রস্তুতি।
এদিকে কাজাখাস্তানের প্রেসিডেন্ট নুরসুলতান নাজারবায়েভ চীনে তার সফর সংক্ষিপ্ত করে উজবেকিস্তানে যাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর সেখান থেকে বেরিয়ে আসা উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাবেক কমিউনিষ্ট নেতা ইসলাম আবদুগানিয়েভিচ করিমভ। উজবেকিস্তানে সেটাই ছিল সর্বশেষ সত্যিকারের নির্বাচন।
ক্ষমতায় আসার পর তিনি সমালোচক এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের জেলে ভরতে শুরু করেন, অনেককে নির্বাসনে পাঠানো হয়।
কট্টরপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে সন্দেহে হাজার হাজার মুসলমানকে তিনি কারাবন্দী করেন। তিনি দাবি করেন যে উজবেকিস্তান তাদের মতো করে গণতন্ত্রের চর্চা করছে। তবে এই গণতন্ত্রে বাকস্বাধীনতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার কোন বালাই ছিল না। ১৯৯৯ সালে ইসলাম করিমভ এক হত্যা প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যান।
কিন্তু এরপর তিনি বিরোধীদের ওপর দমন-নিপীড়ন আরও তীব্র করেন। ২০০৫ সালে আনদিজানে এক সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভ দমন করা হয় নির্মমভাবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানায়, সেখানে শত শত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীকে সৈন্যরা হত্যা করে।
তার অবর্তমানে কে উজবেকিস্তানের হাল ধরবেন সেটা এখন বড় প্রশ্ন। একসময় তার বড় মেয়ে গুলনারাকেই সম্ভাব্য উত্তরসুরি বলে ভাবা হতো। কিন্তু নানা রকম ব্যবসায়িক কেলেংকারি এবং বিলাসবহুল জীবন যাপনের কারণে তার সেই সম্ভাবনা আর নেই, তাকে এখন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।
সম্ভাব্য উত্তরসুরী হিসেবে এখন যে দুজনের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শাভকাত মিরজিয়ায়েভ এবং ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী রুস্তাম আজিমভ।