Connect with us

জাতীয়

এটা গণহত্যা চালাচ্ছে -প্রধানমন্ত্রী

Published

on

প্রধানমন্ত্রীস্টাফ রিপোর্টার:

বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট হরতাল অবরোধের নামে ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত কাল দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এ সময় ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ ও হরতালে চলা সহিংসতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আসলে এটাতো মানুষ খুন করা। এরাতো খুনের দায়ে অভিযুক্ত। এটা গণহত্যা করা। গণহত্যা করে যাচ্ছে এই বিএনপি জামায়াত জোট।” কখনও কোনো মানুষের পক্ষে এ অবস্থা মেনে নেওয়া সম্ভব না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যারা আজকে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, অন্তত আল্লাহ তাদের সুমতি দিক। তারা যেন মানুষ পুড়িয়ে মারা বন্ধ করে, এ বীভৎস কর্মকাণ্ড বন্ধ করে।” বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “এটাতো কোনো রাজনীতি না। এটা সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড। তিনি আরো বলেন, একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যেটা অত্যন্ত অমানবিক। চিন্তাই করা যায় না, এভাবে মানুষ মানুষকে পুড়িয়ে মারবে তারা। এটা বীভৎস।”
গত ছয় বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষের ভিতরে একটা স্বস্তি আছে, শান্তি আছে। মানুষ উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে। তাহলে এই তাণ্ডব হঠাৎ করে কিসের জন্য? কার স্বার্থে? জনগণের স্বার্থে নিশ্চয়ই না। এটা ব্যক্তি স্বার্থে। সাধারণ মানুষ কেন কষ্ট ভোগ করবে? কেউ যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে তাহলে সেই ভুলের মাসুল কি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ দেবে? জনগণ দেবে? জনগণ কেন দেবে?” -–প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যদি দেশ চালাতে ব্যর্থ হতাম, তাহলে বুঝতাম তারা এজন্য সরকারের উৎখাতের আন্দোলন করছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোথাও ব্যর্থতার কোনো চিহ্ন নেই। বিশ্বব্যাপী চলা মন্দা মোকাবেলা করে আমরা ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্বে যে কয়টি দেশ উচ্চহারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। বিশ্ব অর্থনেতিক মন্দা থাকা সত্ত্বেও আমাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ১৯০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আমাদের রির্জাভ ২২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা মূল্যস্ফীতি হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়েছে”, বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আগুন লাগলে ও দগ্ধ হলে করণীয় বিষয়ে মানুষকে আরো সচেতন করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ন ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এতো বেশি সংখ্যক মানুষ প্রতি বছর দগ্ধ হচ্ছে, আমাদের এজন্য আরো ডাক্তার প্রয়োজন, নার্স প্রয়োজন। এজন্য আমাদের একটা ইন্সটিটিউট করতে হবে।”
আগামীতে প্রত্যেক জেলায় বার্ন ইউনিট করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় আমরা বার্ন ইউনিট করে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক জেলায় বার্ন ইউনিট করা হবে।” উপজেলা পর্যায়ে অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসা কার্যক্রম সম্প্রসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যন্ত আমাদের এ চিকিৎসা সম্প্রসারিত হওয়া দরকার। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকার পরও অগ্নিদগ্ধদের আন্তরিকতার সঙ্গে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ডাক্তারদের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি হরতাল-অবরোধের সহিংসতায় অগ্নিদগ্ধ ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ গাড়ি মালিকদের ধারাবাহিকভাবে আর্থিক সহায়তার প্রদানের বিষয়টিও তুলে ধরেন।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জনস অব বাংলাদেশের সভাপতি ডা. সামন্ত লাল সেন, সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম, সহ সভাপতি ডা. অঞ্জন কুমার দেব।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *