কাতারের আমির আইএসের চেয়েও আসাদ প্রশাসন বড় সমস্যা বলে মনে করেন
ইসলামিক স্টেটের’ পাশাপাশি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও জোরালো পদক্ষেপ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কাতারের আমির শাইখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
এই অঞ্চলে আইএসের চেয়েও আসাদ প্রশাসন বড় সমস্যা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০১১ সালে ‘আরব বসন্তের’ সময় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভে নামে সাধারণ মানুষ। রাজপথের গণবিক্ষোভ একপর্যায়ে সশস্ত্র লড়াইয়ে রূপ নিলে সরকার বিরোধী পক্ষগুলোকে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব।
তবে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের কারণে সিরিয়ায় আসাদ বিরোধী অন্যতম দল ‘ইসলামিক স্টেটকে’ জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ।
সোমবার কাতারসহ আরব অঞ্চলের পাঁচটি দেশের সমর্থন নিয়ে সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের দখলকৃত অঞ্চলে বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান ও বাহরাইন ওই অভিযানে প্রত্যক্ষ সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। কাতার সামরিক সহায়তার পরিবর্তে বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে ওই অভিযানে সহায়তা দিচ্ছে।
তবে এই অঞ্চলে আইএসের চেয়েও আসাদ প্রশাসনকে বড় সমস্যা বলে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভাষণে উল্লেখ করেন কাতারের আমির।
তিনি বলেন, “সিরিয়ায় আসাদ প্রশাসনের গণহত্যা যজ্ঞ ও মানুষের ঘরছাড়া হওয়ার মতো অপরাধ অব্যাহতভাবে চলছে। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পদ্ধতিগত ধ্বংসলীলা বন্ধে বিশ্বনেতাদের উদ্যোগ নিতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, সিরিয়ায় আসাদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে তারা বিমান হামলা চালাচ্ছে না, বরং ইরাক ও সিরিয়ার এক তৃতীয়াংশ অঞ্চলের দখল নেয়া ইসলামি চরমপন্থি গোষ্ঠী আইএসর শক্ত অবস্থানে তাদের ওই অভিযান।
হামলা চালিয়ে আইএসকে দুর্বল করে দিলে তা মূলত আসাদ প্রশাসনের পক্ষেই যায়। কারণ আসাদের কাছ থেকেই সিরিয়ার রাক্কা প্রদেশসহ উত্তরাঞ্চলীয় বড় এলাকার দখল নিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা।
‘যুক্তরাষ্ট্রে ওই হামলায় আসাদ সরকার লাভবান হবে’ এমন উদ্বেগ থেকে কাতারের আমির বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত সিরিয়ার মানুষ বুঝতে না পারবে যে, এই লড়াই সিরিয়ার নির্যাতনকারি শাসকের পক্ষে নয় বরং জনগণের পক্ষে হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সন্ত্রাস বিরোধী এই লড়াইয়ে জয় হওয়া যাবে না।
কাতারসহ আরব উপসাগরীয় অধিকাংশ দেশই সিরিয়ায় আসাদ সরকারের শাসনের বিরোধী। তবে কাতার এর আইএস জঙ্গিদের বিভিন্নভাবে জোগান দিয়ে থাকে বলে অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোর অভিযোগ।
তবে ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের সহায়তা করা হচ্ছেনা বলে বুধবার পশ্চিমা দেশগুলোকে নিশ্চিত করে কাতার।
মঙ্গলবার কাতার সরকারের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, আইএসর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন চলামান বিমান হামলা এই অঞ্চলের সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখবেনা বলে তারা মনে করেন।
যেখানে আসাদ সরকার বছরের পর বছর ধরে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে চলেছে, সেখানে কেবলমাত্র আইএস এর বিরুদ্ধে লড়াই চালানোটা ঠিক হচ্ছে না বলে তাদের মত দেন তিনি।