Connecting You with the Truth

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

Kurigram Flood Situation Improved photo-(2) 30.08.15

শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ী থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় ঘরে ফিরতে পারেনি অনেক বানভাসী। শ্রমজীবি মানুষের হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছে তারা। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি বাহিত রোগ-ব্যাধী।

এদিকে পানি কমার সাথে সাথে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার নয়ারহাট, মোহনগঞ্জ, চিলমারী উপজেলার রমনাঘাট ও বাসন্তি গ্রামে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। গত ৩ দিনের ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ী ও ফসলী জমি। এছাড়াও সদর উপজেলার কদমতলা, রাজারহাট উপজেলার, থেতরাই ইউনিয়নে ধরলা ও তিস্তার ভাঙ্গনে ঘর-বাড়ী ফসলী জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিসন্দা সেকেন্দার আলী জানান, বন্যার পানি কমলেও এখনও ঘর-বাড়ী থেকে পানি সরে না যাওয়ায় বাড়ী যেতে পারি নাই। এসময় হাতে কোন কাজকর্ম নাই। চেয়ারম্যান- মেম্বার কোন খোঁজ খবর নেয় না। বউ বাচ্চা নিয়া খুব কষ্টে আছি।

জেলার ৯ উপজেলার ৫৫ ইউনিয়নে ৫৩ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেত দীর্ঘ সময় পানিতে তলিয়ে থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমনের ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে নিতে না পারলে আমন আবাদে বিপর্যয়ের আশংকা করছে কৃষকরা।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের কৃষক রব্বানী জানান, গত ১০ দিন ধরে তার আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে থাকায় সম্পুর্ণ রুপে নষ্ট হয়ে গেছে। এখনও এক হাত পানির নীচে তলিয়ে আছে। আমনের চারাও নাই। শেষ সময়ে বন্যা হওয়ায় আর চারা রোপন করা সম্ভব না। এবার না খেয়ে থাকতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শওকত আলী সরকার জানান, জেলায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন বন্যার পানিতে তলিয়ে ছিল। এরই মধ্যে অনেক ক্ষেতের পানি নেমে গেছে। আসলে কি পরিমান ক্ষেত সম্পুর্ণ রুপে নষ্ট হয়েছে তা নিরুপন করতে কাজ করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। নদ-নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বন্যায় এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে। কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারনে কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রামের সবকটি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সাথে সাথে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন রোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর

Comments
Loading...