Connecting You with the Truth

কে এই খালেদ সাইফুল্লাহ, যার মুক্তির শর্ত দিয়েছিল জঙ্গিরা?

Khaled Saifullahঅনলাইন ডেস্ক: পুলিশের কাছে আটক জঙ্গি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ জামিলকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আইএস। শুক্রবার রাতে জঙ্গিরা গুলশানের রেস্তোরাঁয় বিদেশিদের জিম্মি করে নিজেদেরকে আইএস দাবি করে পুলিশের হাতে রিমান্ডে থাকা খালেদ সাইফুল্লাহ জামিলকে মুক্তির শর্তসহ তিনটি শর্ত দেয়।

শর্ত তিনটি ছিল :
১. ডেমরা থেকে আটক জেএমবি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহকে মুক্তি দিতে হবে।
২. তাদেরকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে দিতে হবে এবং
৩. ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের এই অভিযানের স্বীকৃতি দিতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ডেমরার মাতুয়াইল ইউপি বাদশা মিয়া রোড এলাকা থেকে মাদারীপুরের সরকারি নামিজউদ্দিন কলেজের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যাচেষ্টার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে খালিদ সাইফুল্লাহ জামিলকে গ্রেফতার করা হয় বলে শুক্রবার সকালে দাবি করেছে পুলিশ।
ওইদিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক সিরাজুম মুনীর আসামি সাইফুল্লাহ জামিলকে হাজির করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ১০ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম নূর নবী পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুক্রবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ জামিলকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, খালেদ সাইফুল্লাহ মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান কাজী বেলায়েত হোসেনের বড় ছেলে। তাদের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের বলসা গ্রামে।

গুলশানে নিহত জঙ্গিদের লাশ

খালেদের পিতা কাজী বেলায়েত হোসেন ১৯৯৩ সালের ১৫ নভেম্বর মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। খালেদ সাইফুল্লাহ জামিল এক সময় জেলার শিবচর উপজেলার পাচ্চর ‘জামিয়াতুস সুন্নাহ’ নামে একটি মাদসার ছাত্র ছিলেন।
ওই মাদরাসা থেকে ২০০৯ সালের ১২ জুলাই পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য, আলোচিত জঙ্গি শেখ ওবায়দুল্লাহ ওরফে আবু জাফরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
খালেদ সাইফুল্লাহ জামিল ২০১৫ সালে ফরিদপুর মার্কাজ মাদরাসায় ভর্তি হন। এবার রমজান মাস শুরু হলে সে মাদারীপুর জেলার কালকিনির গোপালপুর বড় মসজিদে তারাবি নামাজ পড়ানোর জন্য ইমামতি করার দায়িত্ব পান।
এদিকে, খালেদ সাইফুল্লাহর বাবা ও মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান কাজী বেলায়েত হোসেনের ও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন খালেদের মামা।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে খালেদের মামা গোলাম রসুল বলেন, ‘খালেদের বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা কোথায় আছেন জানি না।’
গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে জামিল ওরফে আফিফ কাইফি ওরফে পথভোলা পথিক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য।
জঙ্গি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহর গ্রেপ্তারের সঙ্গে শুক্রবারের গুলশানে রেস্তারায় হামলার যোগসাজশ থাকতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে, খালেদ সাইফুল্লাহ কিংবা গুলশানে হামলাকারীরা জঙ্গিরা মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংঘটন আই এস এর সদস্য কিনা তা এখনও পর্যন্ত কোন নিরেপেক্ষ সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, গুলশানের ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন।

Comments
Loading...