দেশজুড়ে
গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতন; মামলার প্রধান আসামিসহ চারজন গ্রেফতার
নড়াইল প্রতিনিধি:
নড়াইলে গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি ববিতার স্বামী শফিকুল শেখকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার সন্ধ্যায় শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়।
নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় গত ৫ মে (মঙ্গলবার) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ববিতার স্বামী শফিকুল শেখসহ সাতজনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন ববিতার মা খাদিজা বেগম। এর আগে শফিকুলের দুই চাচা কালাম শেখ ও হিরু শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার বিবরণে ও ববিতার বাবার বাড়ির লোকজন জানান, গত ৩০ এপ্রিল সকাল ৭ টার দিকে ববিতার শ্বশুরবাড়ি নড়াইলের শালবরাত গ্রামে একটি গাছের সাথে বেঁধে ববিতার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেধড়ক লাঠিপেটাসহ নির্যাতন করা হয়।
ববিতা জানান, স্বামী শফিকুলসহ তার বড় ভাই হাসান শেখ, বাবা ছালাম শেখ, মা জিরিনা আক্তার, চাচা কালাম শেখ ও প্রতিবেশি নান্নু শেখসহ অন্যরা ববিতাকে গাছের সাথে বেঁধে লাঠিপেটা করেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ববিতাকে উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি হলে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মোটরসাইকেলসহ যৌতুকের টাকার দাবিতে তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ববিতা। তিনি (ববিতা) জানান, তার স্বামী সিলেট সেনানিবাসের ৩৮ বেঙ্গলে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনার পর থেকে সে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এদিকে, নড়াইল সদর হাসপাতালে চারদিন চিকিৎসা শেষে নির্যাতিত গৃহবধূ ববিতাকে গত রবিবার (১০ মে) লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে নড়াইলে গৃহবধূ ববিতা নির্যাতনের অন্যতম আসামি ববিতার শ্বশুর ও ভাসুরসহ আরও তিনজনকে আটক করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ। মঙ্গলবার ১২ মে রাত ২টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হল মামলার আসামি ববিতার শ্বশুর মো. সালাম শেখ (৫৬) ববিতার বড় ভাসুর মো. হাসান শেখ (৪২) ও প্রতিবেশি নান্নু শেখ। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান এর নেতৃত্বে এক দল পুলিশ তাদের আটক করে। নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে ১০ মে হাইকোর্ট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এ মামলার মোট ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, উপজেলার শালবরাত গ্রামের ছালাম শেখের ছেলে সেনা সদস্য শফিকুল শেখের (২৬) সাথে তার মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর গোপনে তাদের বিয়ে হয়।