নেপালে নতুন সংবিধান নিয়ে পার্লামেন্টে তুলকালাম
নেপালে নতুন খসড়া সংবিধান নিয়ে পার্লামেন্টে মারামারি-ধস্তাধস্তিতে তুলকালাম কান্ড হয়েছে। সরকার সংবিধান চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে মারমুখী হয়ে ওঠেন বিরোধীদলীয় এমপি’রা। চেয়ার, মাইক্রোফোন ছুড়ে মেরে তারা চড়াও হন স্পিকারের ওপর। নেপালে বিরোধীদলগুলোর সাধারণ ধর্মঘট চলার মাঝে মঙ্গলবার সকালের দিকে পার্লামেন্টে ঘটে এ সহিংস ঘটনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেছেন স্পিকার। মাওবাদী বিরোধীদলের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন জোট মাওবাদী সমর্থনের তোয়াক্কা না করে নিজেদের প্রস্তাবগুলোই প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ২২ জানুয়ারির মধ্যে নেপালে নতুন সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করার সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে। এ সময় শেষ হয়ে আসার মুহূর্তে নতুন করে এ হট্টগোল হল। রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ২০০৮ সালে নেপালে প্রথম নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসে। তখন থেকেই দেশের নতুন একটি সংবিধানের জন্য সমঝোতায় পৌঁছার চেষ্টা করে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এ খসড়া সংবিধান তৈরির সময়সীমা বরাবরই পিছিয়ে গেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করেছিল মাওবাদী গেরিলারা। যার মাধ্যমে নেপালে প্রায় এক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। ওই গৃহযুদ্ধে ১২ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। মাওবাদীরা চায় একটি চুক্তিতে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান নিয়ে আলোচনা চলুক। কিন্তু জোট সরকার চায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করতে। ৬০৫ আসনের নেপালের পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনও তাদের পক্ষে। তাই সরকার মাওবাদীদের সমর্থন ছাড়াই নতুন সংবিধান সংসদে পাশ করাতে চাইছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে ধর্মঘট করছে মাওবাদী- নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট। মঙ্গলবার নেপালের কলকারখানা, স্কুল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে পার্লামেন্টে হট্টগোলের পরই রাজধানী কাঠমাণ্ডুর অনেক রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। নিরাপত্তা জোরদার করতে রাজধানীতে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সরকার বিরোধীরা যানবাহনে আগুন দিয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত অর্ধশত ব্যক্তিকে আটক করেছে।