নোয়াখালীতে নৃশংস হত্যাকান্ড: নিহত হেযবুত তওহীদ সদস্যের স্ত্রীর মামলা দায়ের; ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে পুলিশের মামলা
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হাত-পায়ের রগ ও গলা কেটে হত্যাকান্ড, লাশে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগসহ নৃশংস হামলার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার চাষিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন হামলায় নিহত হেযবুত তওহীদের সদস্য ইব্রাহিম খলিল রুবেলের স্ত্রী মোসাম্মদ হাজেরা আক্তার। অন্যদিকে সোনাইমুড়ি থানা পুলিশ বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে আরো অজ্ঞাত ৫ হাজার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে আগের দিন রাতে একটি মামলা দায়ের করে।
জানা যায়, বুধবার বিকেলে নোয়াখালী আমলি আদালত-৩ (বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী) একটি মামলাটি দায়ের করেন মোসাম্মদ হাজেরা আক্তার যিনি স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাটা গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল রুবেলের স্ত্রী। মামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা হানিফ মোল্লা, মাওলানা নূরুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা জহির, ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি শাহাদাত হোসেন এবং সফিক উল্লা মুন্সিসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসফিকুল হক মামলাটি রজু (এফআইআর) করার জন্য সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফুল ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে সোমবারের হামলা, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, হত্যাকান্ড ও থানায় হামলার অভিযোগে গতকাল চাষিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা হানিফ মোল্লার নাম উল্লেখপূর্বক ৫ হাজার অজ্ঞাত গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সোনাইমুড়ি থানা পুলিশ। বুধবার দুপুরে সোনাইমুড়ি থানার এসআই সাঈদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানা গেছে। সোনাইমুড়ি থানার ওসি কাজী হানিফুল ইসলাম মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের পোরকরা গ্রামে গত সোমবার হিজবুত তাওহীদের সদস্যদের উপর হামলা চালায় স্থানীয় ধর্মব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীরা। এতে হেযবুত তওহীদের তিন সদস্য নিহত হয়। তাদেরকে হাত-পায়ের রগ ও গলা কেটে হত্যা করা হয় এবং হত্যার পর দু’জনের লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালানো হয়। স্থানীয় বাজারে তাদের এক সদস্যের দোকানেও লুট ও ভাঙচুর করা হয়। সোমবার বেলা সাড়ে বারোটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলার এ ঘটনায় আহত হয় হেযবুত তওহীদের শতাধিক সদস্য। তাদের উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয় স্থানীয় পুলিশও। একজন কর্মকর্তাসহ অন্তত ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে ডিসি ও এসপি’র নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়।