”ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় সচেতনতার বিকল্প নেই”
রাজু আহম্মেদ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেছেন, চট্টগ্রামসহ সারা দেশ ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। অন্যান্য দুর্যোগের মত ভূমিকম্প জানান দিয়ে না আসলেও ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই। এ জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম ও পুনর্বাসন সহ সকল ক্ষেত্রে আমাদেরকে ভূমিকা রাখতে হবে।
বুধবার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত নগরীর সরকারী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভূমিকম্প সচেতনতা বিষয়ক মহড়ার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ভূমিকম্প মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। একটি হচ্ছে-বিল্ডিং কোড মেনে চলার সাথে যারা জড়িত তাদেরসহ জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, গণপূর্ত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নিয়ে একটি সভা করে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত বিল্ডিং চিহ্নিত করে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমিকম্প মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে সতর্ক বাণী সম্বলিত বড় বড় ফেস্টুন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগানো হবে এবং বিশেষজ্ঞ দ্বারা তৈরিকৃত পর্যাপ্ত পরিমাণে লিফলেট বিতরণ করা হবে। একই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ভূমিকম্প মোকাবেলা বিষয়ে মহড়ার আয়োজন করা হবে। এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের বাবা-মাকে ভূমিকম্প মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে পারবে। এছাড়া মসজিদে খুৎবার আগে ইমামদের মাধ্যমে লিফলেটগুলো বিতরণসহ পড়ে শোনানোর ব্যবস্থা করা হবে। মূলতঃ ভূমিকম্প মোকাবেলায় মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগ।
তিনি ফায়ার সার্ভিসের জিনিসপত্রের ঘাটতির ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভূমিকম্প সচেতনতা বিষয়ক মহড়ায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মমিনুল হক, ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (চট্টগ্রাম) মো. ইয়াহিয়া, উপ-সহকারী পরিচালক (চট্টগ্রাম) মো. কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, উপ-সহকারী পরিচালক (কক্সবাজার) মো. জসিম উদ্দিন, উপ-সহকারী পরিচালক (পটিয়া) মো. আব্দুল মালেক, সিনিয়র স্টেশন অফিসার (কালুরঘাট) পূর্ণচন্দ্র মুৎসুর্দ্দী, জেলা শিক্ষা অফিসার হোসনে আরা বেগম, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অঞ্জনা ভট্টাচার্য ও সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী। মহড়ায় জেলা প্রশাসনের বিভিন্নস্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ফায়ার সার্ভিস ও রেড ক্রিসেন্টের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নিভিয়ে মহড়ার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। এর পর পর ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলা, উদ্ধার কাজ ও অগ্নিকান্ড রোধে করণীয়সহ জনসচেতনতা বিষয়ক দফায় দফায় মহড়া প্রদর্শন করা হয়। অতিথিবৃন্দরা ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের মহড়ার দৃশ্য দেখেন।