মিউনিখে শপিং মলে বন্দুকধারীর হামলা, নিহত অন্তত ১৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জার্মানির মিউনিখে একটি শপিং সেন্টারে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জার্মান পুলিশ শপিং সেন্টার থেকে মানুষদের সরিয়ে দিচ্ছে। পুলিশ বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার সময় মিউনিখের মোসাক জেলার অলিম্পিয়া-আইনকাউফুজেন্ট্রাম শপিং মলে এ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত ও বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে একাধিক মানুষ নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান এনটিভি জানিয়েছে, বন্দুকধারীর গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত ও দশজন আহত হয়েছেন। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম মিউনেখার আবেন্দজেইটুং-এর বরাত দিয়ে নিহতের সংখ্যা অন্তত ১৫ জন বলে জানিয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন।
শপিং সেন্টারে কাজ করা এক নারী লিন স্টেইন সিএনএনকে জানান, এখনও বন্দুকধারী শপিং মলের ভেতরে রয়েছে। আমি অনেকগুলো গুলির শব্দ শুনেছি। আমি কিছু একটা কিনতে বাইরে এসেছিলাম। আমার সহকর্মী ভেতরে রয়েছে।
লিন আরও বলেন, মানুষ ছুটাছুটি শুরু করে। আমিও বাইরে চলে আসি। অনেক মানুষ দৌড়ে বাইরে আসছেন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জুডয়শ জাইতুং এর খবরে বলা হয়েছে, অনেক মানুষ ভেতরে আটকা পড়েছেন। বের হতে পারছেন না। পুলিশ পাতাল রেল চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
নিজের পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক শপিং সেন্টারে আটকে পড়া এক কর্মচারী ফোনে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, স্রোতের মতো দোকানে মানুষ ঢুকে পড়ে। আমি এক ব্যক্তিকে ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখেছি বেশ আহত অবস্থায়। নিশ্চিতভাবে ওই ব্যক্তি মারা যাবেন। তিনি বলেন, এর বেশি কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই। আমরা স্টোররুমে লুকিয়ে আছি। এখনও পুলিশ আমাদের কাছাকাছি আসতে পারেনি।
টুইটারে স্থানীয় পুলিশ মানুষকে ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। পরে আরেকটি টুইটে পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি এখনও স্পষ্ট নয়। সাধারণ মানুষদের জনসমাগম স্থল এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। জরুরি ফোন পাওয়ার মিনিটের মধ্যেই পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে হামলাকারী শপিং সেন্টার থেকে পালিয়ে নিকটবর্তী পাতাল রেল স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছে।
সোমবার জার্মানির একটি ট্রেনে আফগান কিশোরের কুঠার হামলার পর সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ। এর মধ্যেই শপিং সেন্টারে এ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটলো। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জার্মানিতে কুঠার হামলাটি ছিল প্রথম জিহাদি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে হামলা।
১৯৭২ সালে অলিম্পিক গেমসের সময় দুতলা বিশিষ্টি দ্য অলিম্পিয়া শপিং সেন্টারটি নির্মিত হয়। ওই সময় মিউনিখে এক সন্ত্রাসী হামলায় ১১ ইসরায়েলি ও ১ জার্মান পুলিশ নিহত ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন। সূত্র: সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান, এবিসি নিউজ।