রাজন হত্যা মামলা তদারকি করবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় : চুমকি
নিজস্ব প্রতিনিধি : সিলেটে অমানবিক নির্যাতনে খুন হওয়া শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের পরিবারকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এক লাখ টাকার চেক প্রদান করেছেন। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে তিনি সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামে রাজনের বাড়ি গিয়ে এ চেক প্রদান করেন।
এ সময় রাজনের মা-বাবা ও আত্মীয়দের সঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটান এবং তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। পরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার চেক রাজনের মা-বাবার হাতে তুলে দেন।
সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি সেখানে গিয়েছেন। শিশু রাজনের পরিবারকে সমবেদনা জানানোর ভাষা তার জানা নেই। এটা মানুষের কাজ নয়, নরপিশাচদের কাজ।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে যেন আর কোন শিশু নির্যাতনের শিকার না হয় সেজন্য রাজন হত্যার বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, ‘মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই মামলা তদারকি করবে।’
দেশে শিশু নির্যাতন আগের তুলনায় কমেছে উল্লেখ করে চুমকি বলেন, উন্মুক্ত মিডিয়ার ফলে এখন শিশু নির্যাতনের মতো ঘটনার প্রচার বেড়েছে। যার ফলে নির্যাতনকারিরাও চিহ্নিত হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
এ সময় বাদেআলী গ্রামের বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আয়োজিত সমাবেশে প্রতিমন্ত্রী বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকান্ডের ক্ষমা দুনিয়াতে নেই, আখেরাতেও এর ক্ষমা হবে না’। সরকার এ ধরনের খুন-খারাবি বরদাশত করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ করে শিশুদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। দেশে কোন শিশু নির্যাতন, অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হলে তিনি তা মেনে নিতে পারেন না। তিনি রাজন হত্যার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন।
মেহের আফরোজ চুমকি রাজন হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও সোচ্চার হয়ে ওঠার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কেবল এই এলাকার নয়, এই লজ্জা মানব সমাজের, গোটা দেশের, পুরো জাতির। এর প্রতিবাদ করাও সকলের কাজ।
তিনি আরো বলেন, শিশু রাজন হত্যার বিচারের মাধ্যমে সরকার দেশে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে যাতে ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে। এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, গোবিন্দগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক। আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. কামরুল আহসান, জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদিন, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।