রাজৈরের চৌয়ারী বাড়ি ভেন্নাবাড়ি মতিলাল উচ্চ বিদ্যালয়। নম্বর বাড়িয়ে পরীক্ষার ফল জালিয়াতি সহ বিভিন্ন দূর্নীতির অভিযোগ ॥ অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ ॥
মোঃইব্রাহীম রাজৈর(মাদারীপুর)প্রতিনিধি।।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরের চৌয়ারী বাড়ি-ভেন্নাবাড়ি মতিলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত, দূর্নীতির মাধ্যমে পরীক্ষার ফল জালিয়াতি, বিদ্যালয়ের জমি লিজ দিয়ে অর্থ লোপাট, ক্যাশ বহি অন্যের দ্বারা লেখা সহ বিভিন্ন অযোগ্যতা ও অদক্ষতার ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। অনেক অবিভাবক তাদের ছেলে মেয়েকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছে। যে কারনে বিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও তদন্ত কমিটির সদস্য ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, উল্লেখিত বিদ্যালয়ের পলি বিশ্বাস নামের ষষ্ঠ শ্রেনীর এক ছাত্রী গত বার্ষিক(২০১৬) পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে সপ্তম শ্রেনীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি বিশ্বাস ও নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পূর্ন চন্দ্র বাড়ৈ পরস্পর যোগসাজসে তৃতীয় স্থান অধিকারী দোলা মন্ডল কে নম্বর বাড়িয়ে সাধারন বিজ্ঞানে ৭৪ নম্বরের পরিবর্তে ৭৮ এবং চারুকারু বিষয়ে ২৪ এর পরিবর্তে ৩৪ নম্বর দিয়ে রেজাল্টসীট প্রকাশ করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়। এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রতীক বাড়ৈর জানান, আমরা এ সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি বিশ্বাস ও নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পূর্ন চন্দ্র বাড়ৈ পরস্পর দূর্নীতির মাধ্যমে রেজাল্ট পরিবর্তন করেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার বালার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জালিয়াতির মাধ্যমে রেজাল্ট পরিবতর্নের বিষয়টি আমার কাছেও এসেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ম্যানেজিং কমিটিকে বলা হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্যরা জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি বিশ্বাস ও নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পূর্ন চন্দ্র বাড়ৈ বিদ্যালয়ের যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছে। এর আগে প্রধান শিক্ষক ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ৩২ হাজার টাকা আত্মসাত করে। পরে অডিটে ধরা পড়লে কমিটির কাছে ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পান। বিগত সালের ২৩ অক্টোবর রবিবার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদের কাউকে না জানিয়ে ব্যাংকে হিসাব খোলার নাম করে প্রধান শিক্ষক সকল শিক্ষক কর্মচারী নিয়ে উপজেলা সদরে অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে এসে শ্রেনী কক্ষে তালা বদ্ধ দেখে বাড়ি ফিরে যান। এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ কোন নোটিশ ছাড়া শ্রেনী কক্ষে তালা ও বিভিন্ন অদক্ষতা এবং আর্থিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষককে শোকস করলেও তিনি তার সদোত্তর দিতে পারেনি।
গত ১ জানুয়ারী থেকে ১৯ জানুয়ারী পর্যন্ত বিদ্যালয়ের আয়-ব্যায়ের হিসাবে প্রচুর গরমিল পাওয়া যায়।এতে দেখা যায় বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ব্যক্তিগতভাবে প্রধান শিক্ষক ২৩২৭৪/- টাকা আত্মসাত করেছে। এ মর্মে পরিচালনা পর্ষদ আর্থিক তহবিল তসরুফের অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষককে কারন দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে উচ্চমান সহকারী পূর্ন চন্দ্র বাড়ৈ বিদ্যালয়ের জমি লিজ দেয়ার টাকা আত্মসাত করে ধরা পড়ে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও ধুরন্ধর টাইপের নি¤œমান সহকারী পূর্ন চন্দ্র বাড়ৈ কমিটির কাছে দোষ স্বীকার ও আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিলে পরিচালনা পর্ষদ তাকে ক্ষমা করে দেয়।
প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি বিশ্বাস বিশ্বাস ও নি¤œমান সহকারী পূর্ন চন্দ্র বাড়ৈ তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, দুর্নীতি নয় – কিছু কিছু বিষয়ে ভুল হয়ে ছিল-তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করায় অভিযোগকারি অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে। স্থানীয় দলাদলির কারনে আমাদের অপসারন করে এ পদে অন্যদের নিয়োগ দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
#####