রৌমারীতে বড়াইবাড়ী দিবস পালিত
শাহাদত হোসেন,রৌমারী: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী দিবস পালিত হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ী সীমান্ত সংঘর্ষের ১৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঐতিহাসিক এই দিনটি ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার সময় দিবসটি উপলক্ষ্যে বড়াইবাড়ী গ্রামে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ, মিলাম মাহফিল, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রৌমারী ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন,স্থানীয় সংসদ সদস্য মো.রুহুল আমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভার:) মো: ফাউজুল কবীর,সহকারী পুলিশ সুপার মো: সিরাজুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) রুহানী বিপিএম,রাজিবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ: হাই, বড়াইবাড়ী ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার রেজাউল করীম,এমপির এপিএস ইমদাদুল হক, শৌলমারী ইপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান প্রমূখ।
উল্লেখ্য ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ বাংলাদেশী সীমান্তে অনধিকার প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা চালায় ও বাড়ি-ঘর নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেয়। ওই দিন হামলার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছিল বিডিআর-জনতা। আর সেই প্রতিরোধে বিএসএফ এর ১৬ জনের লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরা। শহীদ হয়েছিল ৩৩ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের সিপাহী আঃ কাদের। এছাড়া আহত হয় বিডিআরের হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ন্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহি হাবিবুর রহমান ও সিপাহি জাহিদ নবী । বিডিআর গ্রামবাসীর পাল্টা আক্রমনে বিএসএফ’র ১৬ জোয়ান নিহত হয়। বিএসএফ এর তান্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯ টি ঘরবাড়ি। এ ঘটনার ১৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও সীমান্তে শান্তি ফিরে আসেনি। কাটেনি সীমান্ত আতংক। গ্রামের মানুষ এখনও দুঃসহ স্মৃতিতে হঠাৎ রাতে আতকে উঠে। শেষ হয়নি তাদের দুঃখের দিন। সরকারি আশ্বাস পূরণ হয়নি। দেয়া হয়নি কড়া নিরাপত্তা, নিরাপদ আবাসন হয়নি অনেকেরই। তাই পোড়া ভিটায় পোড়া টিনের চালের নিচে কাটছে অনেকের দুর্বিসহ জীবন। রৌমারীবাসী বড়াইবাড়ী দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায়।