স্কটল্যান্ড ম্যাচও কঠিন হবে
সব চোখ এখন নেলসনে। ৫ মার্চ ভোর চারটায় মাশরাফি টস জেতেন না হারেন, সে প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছে করছে এখনই। কিন্তু সে উপায় যখন নেই, তখন চোখ বন্ধ করে কল্পনা করা যাক কী হতে পারে সেদিন! কল্পনা করুন, মাশরাফি ধীরে ধীরে মাঠে প্রবেশ করছেন। সঙ্গে দুই আম্পায়ার এবং স্কট কাপ্তান মমসেন। টস হল। মাশরাফি জিতলেন। ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এবার ব্যাটে নামার পালা। দাঁড়ান! চোখ এবার খুলতেই হবে। কেননা ওপেনিংয়ে কে কে যাবেন, তা নিয়ে তো প্রশ্ন আছে। তামিম-এনামুল, নাকি তামিম-সৌম্য, নাকি এনামুল-সৌম্য। সম্ভাব্যতা সূত্র বলে তিন ওপেনারের ভেতর সৌম্য থাকছেন। সৌম্যকে অবশ্য এখন ওপেনার বলা যায় না। নিজস্ব পরিচয় বদলে তিনি এখন ‘ওয়ান ডাউনা’র। তামিমকে মনে হয় বাদ দেয়া হবে না। খড়গটা নামতে পারে এনামুলের ওপর। আচ্ছা, আবার চোখ বন্ধ করুন। ধরে নিন তামিমের সঙ্গে সৌম্য অথবা এনামুল আছেন। ক্রিজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম বল মোকাবিলা করার পালা। আবার চোখ খুলতেই হবে। তবে আপনার না। আপনার চোখ পরে খুললেও হবে। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের খুলতে হবে এখনই। কিন্তু কেন। কারণ এই স্কটল্যান্ডের ভয়ঙ্কর কিছু বোলার আছে। যারা যে কোনো সময় ম্যাচের ভোল পাল্টে দিতে পারেন। এবারের বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল নিউজিল্যান্ডকে তারা কাঁপিয়ে দিয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ডানেডিনে মাত্র ১৪২ রান করে অলআউট হয়ে যায় স্কটল্যান্ড। এই মামুলি পুঁজি তাড়া করতে নেমে কিউই রাঘববোয়ালদের হিমশিম খেতে হয়েছিল। সাত উইকেট হারিয়ে তবেই জয় পায় তারা। অন্যদিকে এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারানো আফগানিস্তান তাদের বিরুদ্ধে শিহরণ জাগানো ম্যাচে কোনোমতে বেঁচে যায়। সেদিন আগে ব্যাট করে ২১০ রান তোলে স্কটল্যান্ড। আফগানরা জয় পায় ঠিকই; তবে হারতে হারতে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেন শাফুর জাদ্রানরা! সেখান থেকে সামিউল্লাহ সেনওয়ারি দলকে টেনে তোলেন।
শেষ দিকে জাভেদ এবং শাফুর ম্যাচ শেষ করে দেন। আগামী বৃহস্পতিবার টাইগার ব্যাটসম্যানদের জন্য হুমকি হতে পারেন রিচি ব্রিংটন। পুরো নাম রিচার্ড ডগলাস ব্রিংটন। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেয়া এই স্কটিশের বলে বেশ কাজ আছে। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে উইকেটশুণ্য থাকলেও জ্বলে ওঠেন আফগানদের বিরুদ্ধে। ৪০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। ব্যাট হাতেও দারুণ কার্যকরী এই ডানহাতি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেছিলেন অর্ধশতক। বল হাতে তামিমদের জন্য হুমকি হতে পারেন ইয়ান ওয়ার্ডল-ও। এখন পর্যন্ত মাত্র ২০টি ওয়ানডে খেলা এই ফাস্ট মিডিয়াম বোলার নিয়েছেন ৩৪টি উইকেট। তার ইকোনমি রেটই (৫.৩০) বলে দেয় তার যোগ্যতা। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বল হাতে জ্বলে ওঠেন তিনি। ১৭ ফেব্রুয়ারি কিউইদের বিপক্ষে ৩ উইকেট নেন। ২৪ বছর বয়সী আরেক পেসার জোস ডেভিও প্রতিনিয়ত নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন। কাউন্টি খেলা এই ডানহাতি এখন পর্যন্ত ২১ ওয়ানডে খেলে ৩৭টি উইকেট দখল করেছেন। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই তিনি দারুণ বল করছেন। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছেন ৩ উইকেট, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪টি এবং আফগানদের বিরুদ্ধে ২টি। অনেক মহারথীরাও বিশ্বকাপের এই আসরে এখন পর্যন্ত ৯টি উইকেট দখল করতে পারেন নি। এতো গেল প্রতিপক্ষের কথা। বাংলাদেশ যে নিজেদেরই বড় প্রতিপক্ষ! সব ঠিক থাকতে থাকতে খেই হারিয়ে ফেলা যাদের স্বভাব, তাদের নিয়ে তাই চিন্তায় থাকতেই হয়। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বাজে ব্যাটিং-বোলিং থেকে শিক্ষা না নিলে স্কটিশরা ফায়দা লুটতে ভুল করবে না। ওহহ! ফিল্ডিংয়ের কথা ভাবছেন। ওটা মনে করিয়ে দিয়ে আপনার রক্তে আর আগুন জ্বালাতে চাই না!