Connecting You with the Truth

স্ত্রীর পেটে আঘাত করে অনাগত সন্তানকে হত্যা করলো স্বামী

Munshigonjনির্যাতনের শিকার মৃত সন্তান প্রসবকারী আসমা বেগমের আহাজারি, পাষন্ড স্বামী সোহেল রান।

শুভ ঘোষ, মুন্সীগঞ্জ: যৌতুকের দাবিতে অন্ত্দঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে লাথি মেরে অনাগত সন্তানকে হত্যা করলো এক পাষন্ড স্বামী। মর্মমান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে সিরাজদিখান উপজেলার দক্ষিন তাজপুর গ্রামে আসমার সংসারে। যশোহর জেলার কোতোয়ালী থানার সাজিয়ালী গ্রামের মৃত সফিকুল ইসলামের যৌতুক লোভী ছেলে সোহেল রানা (৩৪) তার ১০ মাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী আসমা(৩০) বেগমের উপর এই নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে।
এ ঘটনায় আসমা বেগম, তার মা লুৎফা বেগম ও ভাতিজি মুন্নী আক্তার সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ করতে এলে ঘটনাস্থল এখানে না হওয়ায় সিরাজদিখান থানা পুলিশ কোন অভিযোগ না গ্রহন করলে তারা ওই স্বামীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। ঘটনার পর থেকেই নিজের মোবাইল ফোন রিসিভ করছেন না সোহেল রানা। গত শনিবার রাত একটার সময় ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালে মৃত সন্তান প্রসব করে নির্যাতনের শিকার আসমা বেগম। পরে দিন রবিবার সকালে তার আত্মীয়স্বজনরা মৃত শিশুটিকে সিরাজদিখান থানায় নিয়ে আসলে সিরাজদিখান থানা পুলিশ যশোহরের কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করতে বলেন।
আসমার মা লুৎফা বেগম বলেন, দুবাই এক বছর প্রেম করার পরে বাংলাদেশে এসে গত ২০১৩ সালে আমার মেয়ে আসমার সাথে যশোহর জেলার কোতোয়ালী থানার সাজিয়ালী গ্রামের মৃত সফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের জন্য আসমাকে নির্যাতন করতো সোহেল। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বেশ ক’বার যৌতুকের টাকা ও মোটর সাইকেল কিনার জন্য ২লাখ টাকা হাতে তুলে দেয়া হয়। এরপরও গত ২০ জুলাই বুধবার সকালে যৌতুকের জন্য পুনরায় আসমাকে মারধর শুরু করে সোহেল। এক পর্যায়ে ১০ মাসের গর্ভবতী আসমাকে পেটে লাথি মারে সে। এতে প্রচন্ড রক্তক্ষরন শুরু হয় আসমার। ঘটনার পর স্বামী বাড়ি যশোহর থেকে পলিয়ে সিরাজদিখানে বাবার বাড়ি আসে আসমা। গুরুত্বর আহত অবস্থায় আসমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর চিকিৎসা করা হলে অবশেষে ঘটনার চারদিনের মাথায় মৃত মৃত সন্তান জন্ম দেয় আসমা। আমরা এর বিচার চাই।
আসমা বলেন, দুবাইতে আমরা একই জায়গায় কাজ করতাম। সেখানেই পরিচয় পরে বিয়ে। বিয়ের পরে সোহেল আমার সবটাকা নিয়ে যেতো। বিয়ের পরে আমাকে সোহেল একা দুবাই পাঠিয়ে এখানে আরও তিনটি বিয়ে করে আমার টাকায় চলে।আমি প্রেগন্টে না জেনে দুবাই গিয়ে আমার প্রেগনেন্টর হওয়ার কথা জানলে এক মাসের মধ্যে বিদেশ হতে দেশে চলে আসলে সোহেলের আরও তিন বিয়ের কথা জানতে পারি । তখন থেকেই যৌতুক টাকা দাবি করতে থাকে এবং টাকা না আনলে তার সংসার ছাড়তে বলে।বাবা মাকে টাকা না দিয়ে আমি ওকে টাকা দিতাম আর সোহেল অন্য মেয়ে মানুষ নিয়ে ফুর্তি করতো। দেশে এসে টাকা না দিতে পারায় নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে আমার উপর। আমার পেটে লাথি মেরে মেরে ফেললো আমার ছেলে বাবুকে।

আসমার ভাতিজি মুন্নী আক্তার বলেন, আমার ফুপি আসমা ভালোবেশে দুবাই সোহেলের সাথে সম্পর্ক করে বিয়ে করে সংসার করতে ছিল কিন্তু কুচক্রী সোহেল টাকার জন্য তার বাচ্চা মেরে ফেলেছে। গুরুত্বর আহত হয়ে সিরাজদিখান আসলে আমি প্রথমে সিরাজদিখানের আরাফাত হাসপাতালে পরে ঢাকা মিডর্ফোড হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করে। শুধু যৌতুতের জন্যে ফুপুর সন্তানকে ওরা মেরে ফেলেছে। সিরাজদিখান ধানার ওসি(প্রশাসন) মোঃ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, আসমা বেগম তার আত্মীয় স্বজন নিয়ে রবিবার দুপুরে সিরাজদিখান থানায় অভিযোগ নিয়ে এসে ছিল । আমরা ঘটনা স্খল যশোহর খানায় অভিযোগ দেওযার কথা জানিয়ে দিয়েছি।ওই থানায় অভিযোগ হয়ে আমাদের নির্দেশ এলে সেই মোকাবেক আমার কাজ করবো।

Comments
Loading...