তেরখাদার সদর ও ছাগলাদাহ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন।
গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবে,বিকাল- ৫ ঘটিকায় সাংবাদিক মানিক সাহা মিলনায়তনে তেরখাদার সদর ও ছাগলাদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তেরখাদা উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনেরএক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত সংবাদ সম্মেলনে তেরখাদা উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের পক্ষে-তেরখাদার সদর ও ছাগলাদাহ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কে এম আলমগীর হোসেন বলেন তেরখাদার দুইটি ইউনিয়ন যথাক্রমে- তেরখাদা সদর ও ছাগলাদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পূণঃ তফসিল দাবী জানিয়ে জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করেছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে তাদের মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়পত্র ছিনতাই, সন্ত্রাসী হামলা, হুমকি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ প্রশাসনের নিস্কৃয়তা এবং রিটার্নিং অফিসারের পক্ষপাত দুষ্ট আচারনের যে অভিযোগ এনেছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যমূলক এবং তাদের আজন্ম মিথ্যাচারের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই না। দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদের উৎসব মূখর পরিবেশে চলমান এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে তারা প্রশ্ন বিদ্ধ করা ও প্রার্থী বাছাইয়ে নিজদের ব্যর্থতা ঢাকার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ গত ২৩ ফেব্র“য়ারী তাদের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করে।
তিনি আরো বলেন বিএনপি তেরখাদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের জন্য তাদের দলীয় কথিত প্রার্থী এস এম মহিবুল্লাহ একাধিক মামলার পলাতক আসামী। এছাড়া তিনি ১৫ বছর আগে অজ্ঞাত কারনে তার ডান হাত হারান। অনেকে বলেন তিনি বোমা তৈরীর সময় আবার অনেকেই বলেন বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে তিনি পঙ্গত্ববরণ করেছেন।
এছাড়া তিনি তাদের দলের ভিতরের একটি বিতর্কিত ও অযোগ্য ব্যক্তি। যে কারনে তার নাম প্রস্তাব করা হলে বিএনপি’র সক্রিয় কর্মীরা তাকে মেনে নিতে পারে নাই। যে কারনে তেরখাদা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি কাউছার চৌধুরী গ্র“প ও আর এক প্রভাবশালী সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম হোসেন গ্র“পের মধ্যে চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়। নিজেদের এই দ্বন্দের কারনে এস এম মহিবুল্লাহ মনোনয়পত্র কিনেও ইচ্ছাকৃতভাবে নিজে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়পত্র জমা দেননি। এছাড়া তিনি যেহেতু পলাতক জীবন যাপন করছেন, সেকারনে গ্রেফতারের ভয়ে তিনি নিজেই প্রার্থী হতে চাননি। এই বিষয়গুলি আপনারা তদন্ত করলেই এর সত্যতা পাবেন। এস এম মহিবুল্লাহ কালিয়া থানার কুঞ্জপুর গ্রামের এনামুল শেখ হত্যা মামলার এজাহার নামিয় আসামী, যাহার জি আর নং- ০৫/১৫, তারিখ- ১১/০২/১৫ইং, তেরখাদা থানার মামলা নং- ৪, তারিখ- ১৩/৪/১৫ইং, এর এজাহার নামীয় আসামী। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট, নাশকতা ও অগ্নি সংযোগের অভিযোগ করেন।অন্যদিকে তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউনিয়নে বিএনপি’র কথিত প্রার্থী মানজুর হাসান দারু এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী চরমপন্থী সর্বহারা পার্টির আঞ্চলিক কমান্ডার নাহিদের আপন বড়ভাই। সেও ৩টি মামলায় পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলাগুলি হচ্ছে যথাক্রমে- তেরখাদা থানার মামলা নং- ৪, তারিখ- ১৩/৪/১৫, তেরখাদা থানার মামলা নং-৩, তারিখ- ৯/২/১৫। নাশকতা অগ্নি সংযোগ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে দায়েরকৃত এই দুই মামলা বর্তমানে তদন্তধীন রয়েছে এবং তেরখাদা জি আর ১২৭/১৪ নং মামলাটিতে তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়ায় অভিযোগ পত্র দাখিল হয়েছে এবং মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
এছাড়া এই কথিত প্রার্থী খুলনায় একটি ফ্লাক্সিলোডের ব্যবসা করতেন। দীর্ঘদিন ধরে এলাকা ছেড়ে পলাতক জীবন যাপন করায় এলাকায় মানুষের সাথে জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। তার মত অযোগ্য প্রার্থীর নাম ঘোষনা করায় দলের মধ্যে চরম অন্তোষ ও দন্দের সৃষ্টি হয়। একারনে সেও মনোনয়পত্র দাখিল করেনি। অথচ অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের চ্যাম্পিয়ন বিএনপি নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মনোনয়ন পত্র ছিনতাই, হুমকি, পুলিশের নিস্ক্রিয়তার মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আমরা এর তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি আমরা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও সফল করার জন্য এধরনের মিথ্যাচার না করে নির্বাচনী মাঠে থেকে গনতন্ত্রের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করার আহবান জানাই।
কে এম আলমগীর হোসেন আরো বলেন বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো অভিযোগ করেছে, “অতিতে এসরকার নির্বাচন কমিশনের অধিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, পৌরসভার নির্বাচন কোনটিই সুষ্ঠু হয় নাই”- তাহলে আমাদের প্রশ্ন ঐ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু কিভাবে খুলনা-২ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন? বিগত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কিভাবে মনিরুজ্জামান মনি মেয়র নির্বাচিত হলেন? এছাড়া বিগত পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ ও কয়রা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী বিজয়ী হলেন? বিগত নির্বাচন সমূহের জলন্ত সাক্ষী আপনারা নিজেরাই। খুলনার মতই সারা দেশে বিগত সকল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাস, পেট্রোল সন্ত্রাস, গাছ কাটা সন্ত্রাস, রেল সন্ত্রাস সহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারনে জনবিচ্ছিন্ন ও বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসীদের দলের পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতি ও গণতন্ত্রের পথে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। তাই আপনারাও মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসের পথ পরিহার করে সুষ্ঠু রাজনীতির ধারায় ফিরে আসুন।
জে-খার্টিন/বিপি