আন্তর্জাতিক
ইউক্রেইনে অস্ত্রবিরতি শুরু
শান্তিচুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেইনীয় প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো সরকারি বাহিনীকে গোলাবর্ষণ বন্ধ করার আদেশ দেয়ার পর হঠাৎকরেই মধ্যরাতে পূর্ব ইউক্রেইনে গোলাবর্ষণ বন্ধ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সামরিক বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডারের পোশাক পড়ে রাজধানী কিয়েভ থেকে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে পোরোশেঙ্কো ওই আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার জার্মানি ও ফ্রান্সের উদ্যেগে ইউক্রেইন সরকার ও দেশটির রুশপন্থি বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী শনিবার দিনশেষে রোববার শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুপক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনী প্রধান ভিক্টর মুঝেনকো’কে পাশে নিয়ে পোরোশেঙ্কো বলেন, “রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য দীর্ঘ এবং কঠিন শান্তি প্রক্রিয়ার শেষ সুযোগটি বৃথা যাবে না বলে আমি আশা করছি।” “এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমি এখন ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীকে ০০:০০ ঘন্টা, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অস্ত্রবিরতি করার আদেশ দিচ্ছি।” পূর্ব ইউক্রেইনের দেবালতসেভ’র পরিস্থিতির বিষয়ে বিদ্রোহীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, “যদি এক গালে চপেটপাঘাত করা হয়, তাহলে অপর গাল পেতে দেয়া হবে না।” অস্ত্রবিরতি শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত দেবালতসেভে সরকারি বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে রেখেছিল বিদ্রোহীরা। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ভ্লাদিস্লাভ সেলেজিনোভ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের আদেশের সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেইনীয় সশস্ত্র বাহিনী আদেশ পালন করেছে। অপরদিকে ওই একই সময় থেকে দোনেৎস্ক ও পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী অধিকৃত অন্যান্য অংশ থেকেও গোলাবর্ষণ বন্ধ করা হয়। বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তি অনুযায়ী, দুপক্ষ যার যার ভারী সমরাস্ত্র সরিয়ে নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে একটি নিরপেক্ষ “বাফার জোন” গড়ে তুলবে। মধ্যরাতে অস্ত্রবিরতি শুরু হওয়ার আগে প্রতি পাঁচ সেকেন্ড পরপর ভারী কামানের গোলায় ও নিক্ষিপ্ত রকেটের বিস্ফোরণে কেঁপে কেঁপে উঠছিল রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রধান শক্তিকেন্দ্র দোনেৎস্ক ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা। প্রায় এক বছর আগে শুরু হওয়া পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী লড়াইয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৫,০০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। এই লড়াইকে কেন্দ্র করে ‘শীতল যুদ্ধের’ পর রাশিয়া ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর সম্পর্ক সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।