সুন্দরবনে শুরু হয়েছে শুটকি আহরন মৌসুম
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট :বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দুবলাসহ ১৪টি চরে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে শুটকি আহরন মৌসুম। প্রতি বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে মার্চ পর্যন্ত সুন্দরবনের চরে চলে বঙ্গোপসাগর থেকে শুটকির জন্য মাছ আহরন। গত বছর পূর্ব বনবিভাগ শুটকি আহরন
মৌসুমে ৯ হাজার ৮শ ৩৮জন জেলের কাছ থেকে ১ কোটি ৭০ লক্ষ ৮শ ৮৫ টাকা রাজস্ব আদায় করলেও চলতি শুটকি মৌসুমে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে দুই কোটি টাকা। এ বছর পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে শুটকি আহরনকারী জেলে ও বহরদাররা পাস-পারমিট নিয়ে শুক্রবার বাদজুমা নৌকা যোগে রওনা দেয় সুন্দরবনের দুবলারচরে শুটকি পল্লীর উদ্যেশে। সুন্দরবন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও জেরে-বহরদাররা জানান সুত্রে জানাগেছে, সমুদ্রে মৎস্য আহরন ও শুটকি মৌসুমকে ঘিরে এবছর ১০ তেকে ১৫ হাজার জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ী জড়ো হয় সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহেরআলীর চর, আলোরকোল, অফিসকিলা, মাঝেরকিলা, শেলার চর, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয়া, বড় আমবাড়িয়া, মানিকখালী, কবরখালী, চাপড়াখালীর চর, কোকিলমনি ও হলদাখালী চরে। সুন্দরবন অভ্যান্তরে কমপক্ষে ১৫টি মৎস্য আহরন, প্রক্রিয়াকরন ও বাজারজাতকরন কেন্দ্র নিয়ে এই দুবলা জেলে পল্লীতে জেলেরা নিজেদের থাকা, মাছ ধরার সরঞ্জাম রাখা ও শুটকী তৈরির জন্য প্রতি অস্থায়ী ঘর ও মাচা তৈরি করে থাকে। জেলেরা সমুদ্র মোহনায় বেহুন্দীসহ বিভিন্ন প্রকার জাল দিয়ে মাছ শিকার করে তা বাছাই করে জাত ওয়ারী মাছ গুলো শুটকী করে থাকে।
এ পল্লীতে মূলত জেলেদের মৎস্য আহরন ও শুটকি প্রক্রিয়াকরনের ওপর ভিত্তি করেই সুন্দরবন বিভাগের রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। গত বছর প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার কুইন্টাল শুঁটকি আহরিত শুটকি থেকে নয় হাজার ৮৩৮ জন জেলের কাছ থেকে এক কোটি ৭০ লাখ ৮৮৫ টাকা রাজস্ব আদায় করে সুন্দরবন বিভাগ।
এ বছর শুটকি আহরনের জন্য দুবলারচরে ৮০০ বসতঘর ও ৬০টি ডিপো নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এবার শুটকি আহরনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় দুই কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে। এ বছর আশা করা হচ্ছে ৩০ হাজার কুইন্টাল শুঁটকি আহরণ করা হবে।
এবারও জেরেরা সুন্দরবনের কোনো গাছপালা ব্যবহার করা যাবে না বলে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে বন বিভাগ। শুঁটকি মৌসুমকে ঘিরে জেলেদের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগের পাশাপাশি কোস্টগার্ড, র্যাব ও পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সুন্দবনে শুটকি আহরন করতে রওনা দেয়া জেরে-বহরদাররা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শুটকি মৌসুমে জেলে-বহদাররা বনদস্যু আতংক ছাপিয়ে আছে সস্তির মধ্যে।