জানা যায়, ৩০ জুন শিক্ষা সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ১৯৯ টি কলেজকে জাতীয়করণের লক্ষ্যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীকরণের শর্তানুযায়ী শিক্ষার গুনগত মানসম্পন্ন উপজেলার শ্রেষ্ঠ কলেজটি জাতীয়করণের কথা উল্লেখ রয়েছে।সরকারের শর্তানুযায়ী উপজেলার সৈকত ডিগ্রি কলেজ সকল শর্তপূরন করেছে। অথচ জাতীয়করণের শর্তকে উপেক্ষা করে পিছিয়ে পড়া চরজববর ডিগ্রি কলেজকে জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় সৈকত ডিগ্রি কলেজ একমাত্র জাতীয়করণের দাবীদার।
এদিকে ১৯৯৩ সালে সৈকত ডিগ্রি কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলে দরিদ্র পরিবারে আলো ছড়াতে শুরু করে ।এখানের কোন পরিবার দারিদ্রতার কারণে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়নি। অনেক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানেরা বিনা বেতনে এ কলেজের গন্ডী পেরিয়ে দেশের নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠত হয়েছে।
শুরু থেকে ভালো ফলাফল, খেলাধুলা, স্কাউটিং বিতর্ক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সমুজ্জল ভাবে এগিয়ে চলছে এই প্রতিষ্ঠান। কলেজটির শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় জেলার হাতিয়া, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সন্দীপ, রামগতি উপজেলার ছাত্রছাত্রীরা এ কলেজে লেখাপড়া করছে, যা অন্য কলেজে নেই। কলেজকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক গুলো স্কুল, ব্যাংক, বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
সৈকত ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মো:মোনায়েম খান জানান, কলেজের বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি । উপজেলা থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো। বাকি তিনটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রী যথাক্রমে, চরজব্বর ডিগ্রি কলেজ প্রায় পাঁচশত জন, পূর্বচরবাটা স্কুল এন্ড কলেজ প্রায় দুইশত পঞ্চাশ জন এবং ডেসটিনি কলেজ (একরামুল করিম চৌধুরী কলেজ) ২শ পঞ্চাশ জনের কিছু বেশি। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে থেকে পর্যায়ক্রমে সৈকত ডিগ্রি কলেজে বর্তমানে বাংলা, ব্যবস্থাপনা, হিসাব বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্সে ৩৬১ জনসহ মোট সাড়ে চার হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।
সৈকত ডিগ্রি কলেজ ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল জলিল জানান, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সম্মিলিতভাবে ৩বার চ্যাম্পিয়ন, ১০ বার রানার্স-আপ হয়েছে। পোলবোল্টে সারা বাংলাদেশে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ণপদক জিতেছে এই কলেজের শিক্ষার্থী সঞ্জয় মজুমদার। বিশ্বনাথ নামের একজন শিক্ষার্র্থী পরপর দুইবার কুমিল্লা বোর্ডে (আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।এই কলেজের ছাত্রী মারজাবানা পারভীন ২০১০ সানের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএস(পাশ) পরীক্ষায় সারা দেশের মধ্যে ৫ম স্থান অধিকার করে।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সৈকত ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এ,এইচ ,এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম জানান,এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো: একরামুল করিম চৌধুরী এমপি ২০১৪ সালের একটি ডিও লেটার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দাখিল করেন।যার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ১১জুন-২০১৫তারিখ এক স্মারকে কলেজটি যাচাই বাচাইয়ের মাধ্যমে জাতীয়করণের নিদের্শ দেন। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নিদের্শ মোতাবেক সরকারিকরণে লক্ষ্যে ১৬ জুন ২০১৫খ্রি: থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর নির্দেশক্রমে নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলায় সৈকত ডিগ্রি কলেজটি সরকারিকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমানে মহাপরিচালক ড: এস,এম ওয়াহিদুজ্জামান ও সহকারি পরিচালক তাজিব উদ্দিন গত ১২জুলাই২০১৫খ্রি: সৈকত ডিগ্রি কলেজটি পরিদর্শন করেন। যথারীতি পরিদর্শন প্রতিবেদন জমা দেন।
সরকারের জাতীয়করণের নীতিমালা অনুযায়ী সকল শর্ত পূরণ করেছে সুবর্ণচর উপজেলায় একমাত্র সৈকত ডিগ্রি কলেজ। এ উপজেলার সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈকত ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছে এ অবহেলিত জনপদের , ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক ও শিক্ষানুরাগীসহ সর্বস্তরের মানুষ।