Connect with us

দেশজুড়ে

জাতীয়করণে বঞ্চিত সৈকত ডিগ্রি কলেজ, জনমনে চরম ক্ষোভ

Avatar photo

Published

on

Saikat Degree College  (1)ঠাকুর চন্দ্র দাস, সুবর্ণচর প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ঐহিত্যবাহি সৈকত ডিগ্রী কলেজ ১৯৯৩ সাল থেকে তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে সৈকত ডিগ্রি কলেজ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হলেও রহস্যজনক ভাবে জাতীয়করণে বঞ্চিত হয়েছে। এতে জনমনে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, ৩০ জুন শিক্ষা সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ১৯৯ টি কলেজকে জাতীয়করণের লক্ষ্যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীকরণের শর্তানুযায়ী শিক্ষার গুনগত মানসম্পন্ন উপজেলার শ্রেষ্ঠ কলেজটি জাতীয়করণের কথা উল্লেখ রয়েছে।সরকারের শর্তানুযায়ী উপজেলার সৈকত ডিগ্রি কলেজ সকল শর্তপূরন করেছে। অথচ জাতীয়করণের শর্তকে উপেক্ষা করে পিছিয়ে পড়া চরজববর ডিগ্রি কলেজকে জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় সৈকত ডিগ্রি কলেজ একমাত্র জাতীয়করণের দাবীদার। Saikat Degree College  (2)উল্লেখ্য, সুবর্ণচরে ৪টি কলেজ রয়েছে। এগুলো হলো- সৈকত ডিগ্রি কলেজ , চর জব্বার ডিগ্রি কলেজ , পূর্বচরবাটা স্কুল এন্ড কলেজ, ডেসটিনি কলেজ (প্রস্তাবিত একরামুল করিম চৌধুরী কলেজ)। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে সৈকত ডিগ্রি কলেজকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পদক দেয়া হয় এবং কলেজ অধ্যক্ষ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন।
এদিকে ১৯৯৩ সালে সৈকত ডিগ্রি কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলে দরিদ্র পরিবারে আলো ছড়াতে শুরু করে ।এখানের কোন পরিবার দারিদ্রতার কারণে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়নি। অনেক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানেরা বিনা বেতনে এ কলেজের গন্ডী পেরিয়ে দেশের নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠত হয়েছে।
শুরু থেকে ভালো ফলাফল, খেলাধুলা, স্কাউটিং বিতর্ক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সমুজ্জল ভাবে এগিয়ে চলছে এই প্রতিষ্ঠান। কলেজটির শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় জেলার হাতিয়া, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সন্দীপ, রামগতি উপজেলার ছাত্রছাত্রীরা এ কলেজে লেখাপড়া করছে, যা অন্য কলেজে নেই। কলেজকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক গুলো স্কুল, ব্যাংক, বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
সৈকত ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মো:মোনায়েম খান জানান, কলেজের বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি । উপজেলা থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো। বাকি তিনটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রী যথাক্রমে, চরজব্বর ডিগ্রি কলেজ প্রায় পাঁচশত জন, পূর্বচরবাটা স্কুল এন্ড কলেজ প্রায় দুইশত পঞ্চাশ জন এবং ডেসটিনি কলেজ (একরামুল করিম চৌধুরী কলেজ) ২শ পঞ্চাশ জনের কিছু বেশি। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে থেকে পর্যায়ক্রমে সৈকত ডিগ্রি কলেজে বর্তমানে বাংলা, ব্যবস্থাপনা, হিসাব বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্সে ৩৬১ জনসহ মোট সাড়ে চার হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।
সৈকত ডিগ্রি কলেজ ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল জলিল জানান, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সম্মিলিতভাবে ৩বার চ্যাম্পিয়ন, ১০ বার রানার্স-আপ হয়েছে। পোলবোল্টে সারা বাংলাদেশে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ণপদক জিতেছে এই কলেজের শিক্ষার্থী সঞ্জয় মজুমদার। বিশ্বনাথ নামের একজন শিক্ষার্র্থী পরপর দুইবার কুমিল্লা বোর্ডে (আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।এই কলেজের ছাত্রী মারজাবানা পারভীন ২০১০ সানের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএস(পাশ) পরীক্ষায় সারা দেশের মধ্যে ৫ম স্থান অধিকার করে।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সৈকত ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এ,এইচ ,এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম জানান,এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো: একরামুল করিম চৌধুরী এমপি ২০১৪ সালের একটি ডিও লেটার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দাখিল করেন।যার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ১১জুন-২০১৫তারিখ এক স্মারকে কলেজটি যাচাই বাচাইয়ের মাধ্যমে জাতীয়করণের নিদের্শ দেন। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নিদের্শ মোতাবেক সরকারিকরণে লক্ষ্যে ১৬ জুন ২০১৫খ্রি: থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর নির্দেশক্রমে নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলায় সৈকত ডিগ্রি কলেজটি সরকারিকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমানে মহাপরিচালক ড: এস,এম ওয়াহিদুজ্জামান ও সহকারি পরিচালক তাজিব উদ্দিন গত ১২জুলাই২০১৫খ্রি: সৈকত ডিগ্রি কলেজটি পরিদর্শন করেন। যথারীতি পরিদর্শন প্রতিবেদন জমা দেন।
সরকারের জাতীয়করণের নীতিমালা অনুযায়ী সকল শর্ত পূরণ করেছে সুবর্ণচর উপজেলায় একমাত্র সৈকত ডিগ্রি কলেজ। এ উপজেলার সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈকত ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছে এ অবহেলিত জনপদের , ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক ও শিক্ষানুরাগীসহ সর্বস্তরের মানুষ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গাজীপুর

গাজীপুরে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু, আতঙ্কে স্থানীয়রা

Avatar photo

Published

on

গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত ভবনে অননুমোদিতভাবে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ার বিগত ৫ বছরেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বেইলি রোড ট্র্যাজেডির পর রেস্টুরেন্টটিতে পুনরায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রীতিমতো আতঙ্গে ভুগছেন প্রতিবেশীরা। রেস্টুরেন্ট মালিক বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘অগ্নিকাণ্ড’ উল্লেখ করে বীমা কোম্পানি থেকে কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ পেলেও আশপাশের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আজও দাঁড়ায়নি কেউ। উন্মুক্ত আলো-বাতাস বিহীন ওই রেস্তোরাঁর বদ্ধ রান্নাঘরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে ভবনের ভেসমেন্ট লন্ডভন্ড হয়ে যায় এবং কয়েকটি ভবনের মূল কলাম ভেঙ্গে পড়ে।

উল্লেখ্য বিগত ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুর মহানগরীর বোর্ড বাজারে অবস্থিত বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁয় সংঘটিত ওই বিস্ফোরণে ১ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়। ব্যস্ততম বোর্ড বাজার বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষেই মনসুর আলী সুপার মার্কেটের নীচ তলায় রেস্তোরাটি অবস্থিত। বিস্ফোরণে রেস্তোরাঁর ভেতরে থাকা লোকজন ছাড়াও পথচারিরাও আহত হয়। মহাসড়কের বিপরীত পাশে বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়েও বিস্ফোরিত বস্তু আঘাত আনে। মসজিদের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আজও ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণের সাক্ষী হয়ে আছে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কত ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও প্রাণ ঝরলে কর্তৃপক্ষ সজাগ হবে। ওই ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। এ ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়া পর্যন্তই সবার দায়িত্ব শেষ। পরবর্তীতে রেস্তোরাঁ বা ভবনটির কার্যক্রম সম্পর্কে আর কেউ খবর রাখেনি। এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রস্তাবনা-নির্দেশনাও আর বাস্তবায়ন হয়নি। বরং যথাযথ নিয়ম কানুন প্রতিপালন ছাড়াই চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে আগের জায়গায় রেস্তোরাঁ চালুসহ সব ধরনের কার্যক্রম চলছে আরো জোরেশোরে। এতো বড় একটা দুর্ঘটনার পরও যেনতেনভাবে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ায় বিস্ময়ে অবাক স্থানীয়রা। ভবনটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণে রাজউকের অনুমোদন ও ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তি সনদও নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি রেস্তোরাঁ ও ভবন মালিকপক্ষ।ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে কীভাবে আগের মতই সব কার্যক্রম চলছে তা যাচাই করে দেখারও সময় হয়নি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের।

পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকরা জানান, বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতি হলেও রেস্টুরেন্ট মালিক ‘অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাবদ’ বীমা কোম্পানি থেকে এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ লাভ করেন। অথচ ওই রেস্তোরাঁ মালিকের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কাউকেই একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। বিগত ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হওয়ার পর দিনই প্রতিবেশী আতঙ্কগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁর কার্যক্রম পরিচালনা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব‍্যবস্থা গ্রহণ করেননি। সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে রেস্টুরেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধশত প্রাণহানির ঘটনায় গাজীপুর বোর্ড বাজারের আলোচিত বাংলার রাঁধুিন রেস্তোরাঁ সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখন রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, বাংলার রাঁধুনির জরুরি বর্হিনির্গমন ব্যবস্থা না থাকা ভবনের ভেতরে আটকে থাকা মানুষগুলোর পরিণতি যদি নতুন কোনো বেইলি রোড ট্র্যাজেডি তৈরি করে তাহলে তার দায়ভার কে নিবে? বিগত ২০১৯ সালের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোরই বা কি হবে যারা পূর্বের দুর্ঘটনার ঋণের বোঝা এখনো বয়ে বেরাচ্ছেন। রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিব কিন্তু ঠিকই ইন্সূরেন্সের টাকা দিয়ে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন। রাশেদের মতো সন্তান হারানো মায়ের কোল ভরিয়ে দিবে কে?

এদিকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভবনটি যথাযথভাবে সংস্কার করেই আমরা পুনরায় রেস্তোরাটি চালু করেছি। এখন আর কোন ঝুঁকি নেই।

Continue Reading

গাজীপুর

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মেমোরিয়াল ডে-২০২৪ উদযাপন

Avatar photo

Published

on

কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৪” উদযাপন করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।

‘কর্তব্যের তরে, করে গেলে যাঁরা,আত্মবলিদান-প্রতিক্ষণে স্মরি, রাখিব ধরি, তোমাদের সম্মান’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শনিবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম বিপিএম পিপিএম(বার)।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার। পরে ১ মিনিট নীরবতা পালন ও কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading

গাজীপুর

মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ কোনাবাড়ি থানার এএসআইয়ের বিরুদ্ধে

Avatar photo

Published

on

গাজীপুর প্রতিনিধি :

ঘুষ না দেয়ায় মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। তিনি কোনাবাড়ির বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক অন্যায় করে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশকিছু অভিযোগ।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে ওই এএসআই রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দাদা মোঃ লাল মিয়া (৬২) নামে এক ব্যক্তি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি অপরাধ (উত্তর) বিভাগে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এএসআই রুহুল আমিন।

লিখিত অভিযোগে লাল মিয়া জানায়, গেল ৪-ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ি থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসএআই) রুহুল আমিন ও তার সঙ্গী ফর্মা (সোর্স) মিলে লাল মিয়ার নাতী ইমনকে আমবাগ লালঘাট ব্রিজের কাছে থেকে আটক করে।

পরে তাকে ধরে নিয়ে মিতালী ক্লাব সংলগ্ন ভুক্তভোগীর বর্তমান ঠিকানার ভাড়াবাসায় এসে মাদকদ্রব্যের কথা বলে ঘরে প্রবেশ করেন ওই দারোগা এবং তার সোর্স মোঃ শরিফ মিয়া। এ সময় তাদের ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র বিছানা, আলমারি, সুকেশ তল্লাশি করেন তারা। তল্লাশিরকালে ইমনদের বাসায় মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত কোনো কিছুই পায়নি ওই পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক।

এ পর্যায়ে তাদের ঘর তল্লাশি শেষে কিছু না পেয়ে এএসআই রুহুল আমিন ও তার সঙ্গে ফর্মা (সোর্স) ঘরে থাকা স্টিলের আলমারি থেকে নগদ তিন হাজার টাকা, সুকেশ এর ড্রয়ার থেকে আট আনা স্বর্ণের একটি চেইন, আট আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, তিন আনা ওজনের একটি আংটি এবং ব্যবহৃত অপ্পো ব্রান্ডের পুরাতন মোবাইল সেট নিয়ে নেয়।

পরে পুলিশের সঙ্গে থাকা সোর্স শরিফ এবং চাঁন মিয়া অভিযোগকারীর নাতী ইমনকে মারধর করে এবং টাকা দিতে বলে। টাকা না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে ইমনের মাকে হুমকী দিয়ে ইমনকে নিয়ে চলে যায়।

লিখিত অভিযোগকারী ইমনের দাদা লাল মিয়া বলেন, এরপর ৫-ফেব্রুয়ারি অনুমানিক রাত দেড়টার দিকে এএসআই রুহুল তার সোর্স মোঃ শরিফ (২০বাসায় পাঠায় এবং ১নং আসামি ইমনের মা রাশেদা বেগমের কাছে (৫০) পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে বলে। ৫০ হাজার টাকা দিলে থানা থেকে তার ছেলে ইমনকে ছেড়ে দেয়া হবে।

অভিযোগকারী লাল মিয়া জানায়, তার ছেলে নুর আলম নাতী ইমনসহ পরিবার নিয়ে বর্তমান ঠিকানায় দুই বছর যাবৎ বসবাস করছেন। ইমনের বাবা নুর আলম নছের মার্কেট এলাকায় ভিভিন্ন ঝুটগুদামে ডেইলী লেবারের কাজ করেন। আর নাতী ইমন বাসায় থেকে সুইং মেশিন চালিয়ে প্যান্ট ও গেঞ্জির কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছে। আমি এবং আমার পরিবারের কেউই কখনো মাদকদ্রব্য সেবন, গ্রহণ এবং ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃত্ততা নেই এমন কি এলাকার কেউ বলতে পারবে না যে, আমার নাতী ইমন মাদকের সংঙ্গে জড়িত।
অথচ দারোগা রুহুল সন্দেহ বশত্ব রাস্তা থেকে আমার নাতীকে গ্রেপ্তার করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা টাকা চেয়েছিল, মূলত টাকা না দেয়ার কারণে আমার নাতিকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে জেলে প্রেরণ করেছেন রুহুল দারোগা। এই বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমার বর্তমান ঠিকানা ভাড়া বাসার সামনে স্থাপনকৃত সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত সব ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ওই ভিডিও ফুটেজে এএসআই রুহুল আমিনসহ সোর্সদের দেখা গেছে ইমনের বাসায় ঢুকতে। ভিডিও ফুটেজে ইমনকে মারপিট করার শব্দও শোনা গেছে।

ইমনের বাবা নুর আলম বলেন, আমার ছেলে ইমনের সঙ্গে মিতালী ক্লাব উত্তরপাড়া এলাকার নয়ন (১৯) কেও গ্রেপ্তার করে হয়। নয়নকে ১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট আর আমার ছেলেকে ২৫পিস ইয়াবা চালান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, রুহুল নয়নের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নয়নকে ১৫পিস ট্যাবলেট দিয়েছে।

ইমনের বাবা বলেন, আমি গরীব মানুষ বিভিন্ন ঝুট-গুদামে লেবারের কাজ করে কোনো মতে সংসার চালায়। আমার ছেলেকে যেদিন গ্রেপ্তার করা হয় সেদিন বরিশালে পীরের দরবারে ছিলাম। বাসায় এসে শুনি আমার ছেলে ইমনকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করে জেলে দেয়া হয়েছে। আমি মেয়ের জন্য আস্তে আস্তে কিছু স্বর্ণের জিনিস করেছিলাম সেগুলোও ওই পুলিশ নিয়ে গেছেন। সোর্স ওবায়দুল ওই গয়না গুলো খুলে নেন। টাকা দিতে পারিনি বিধায় আমার ছেলেকে মাদক মামলায় জড়ানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, ইমনকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর পরে তারা খুব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। এর প্রতিকার চেয়ে দারোগা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বর্ণিত বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী করে লিখিত অভিযোগ করেছি।

তবে এসব অভিযোগ এএসআই রুহুল আমিন অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

জিএমপি কোনাবাড়ি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মহিউদ্দিন ফারুক জানান, অন্যায় করতে পছন্দ করি না, কেউ যদি অন্যায় করে সমর্থনও করি না, পুলিশের কেউ যদি এমন অপরাধ করে থাকে তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে।

Continue Reading