শ্বাসরুদ্ধকর জয় বাংলাদেশের
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপের বাছাইপর্বের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ডাচদের ৮ রানে হারিয়ে বিশ্বমঞ্চের মিশন শুরু করলো টাইগাররা। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫৪ রানের টার্গেটে ৭ উইকেট হারানো ডাচদের ইনিংস থামে ১৪৫ রানে।
বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে টাইগাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৫৩ রান। দারুণ ব্যাট করেন টাইগারদের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল।
নেদারল্যান্ডসের দলপতি পিটার বোরেন টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ১৩ ম্যাচ খেলা সৌম্য সরকার এবং ৪৭ ম্যাচ খেলা তামিম ইকবাল। প্রথম ওভার থেকে তারা তুলে নেন ৮ রান। দ্বিতীয় ওভার থেকে দুই ওপেনার আরও ৬ রান তুলে নেন।
তৃতীয় ওভারে ৪ রান নিলেও চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। বিদায় নেওয়ার আগে তিনি ১৩ বলে দুটি চারের সাহায্যে করেন ১৫ রান।
দলীয় ১৮ রানের মাথায় ওপেনার সৌম্য সরকার বিদায় নিলেও রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ও তিন নম্বরে নামা ২০ ম্যাচ খেলা ইনফর্ম ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের আসরের সেরা ব্যাটসম্যান সাব্বির ইনিংসের অষ্টম ওভারে এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। আউট হওয়ার আগে তামিমকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে আরও ৪২ রান যোগ করেন সাব্বির। ১৫ বলে এক চার ও এক ছয়ে ১৫ রান করেন তিনি।
ওপেনার সৌম্য সরকারের পর ইনফর্ম ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান বিদায় নেন। এরপর উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবাল। তবে, ব্যাট হাতে আরও একবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ইনিংসের ১১তম ওভারে বোরেনের বলে মাইবার্গের তালুবন্দি হন ৭ বলে ৫ রান করা সাকিব।
ইনিংসের ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এর আগে তার ব্যাট থেকে একটি বাউন্ডারিতে আসে ৯ বলে ১০ রান। ভ্যান ডার গুগটেনের একই ওভারের পঞ্চম বলে রানের খাতা খোলার আগেই বোল্ড হন মুশফিকুর রহিম।
১৮তম ওভারে বলের লাইন বুঝতে না পেরে নাসির ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। বিদায় নেওয়ার আগে ৭ বলে ৩ রান করেন তিনি। পরের ওভারে ফেরেন টাইগারদের দলপতি মাশরাফি। ৫ বলে একটি ছ্ক্কায় তিনি করেন ৭ রান।
৩৬ বলে অর্ধশতক হাঁকানো তামিম ৮৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ২২ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১২ সালে অপরাজিত ৮৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। ডাচদের বিপক্ষে এর আগে অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংসও খেলেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ৮৩ রানের ইনিংস সাজাতে তামিম খেলেন মাত্র ৫৮টি বল। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর ৩টি ছক্কা।
ডাচদের হয়ে ভ্যান ডার গুগটেন নেন তিনটি উইকেট।
বুধবার (৯ মার্চ) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায়।
ডাচদের হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন ২৫ ম্যাচ খেলা স্টিফেন মাইবার্গ ও ৩০ ম্যাচ খেলা ওয়েসলি বারেসি। টাইগারদের হয়ে বোলিং শুরু করেন ১০ ম্যাচ খেলা তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারে নেদারল্যান্ডস ৪ রান সংগ্রহ করে। ১৯ ম্যাচ খেলা আল আমিনের করা দ্বিতীয় ওভারে আরও ৪ রান সংগ্রহ করে ডাচরা।
দলীয় ২১ রানের মাথায় আর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আল আমিন ফিরিয়ে দেন ৯ রান করা বারেসিকে। ইনিংসের নবম ওভারে নাসির বোল্ড করেন ২৯ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ২৯ রান করা মাইবার্গকে।
ইনিংসের ১২তম ওভারে সাকিব ফিরিয়ে দেন ১৫ বলে ২০ রান করা বেন কুপারকে। বোল্ড হওয়ার আগে কুপার তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান। ১৬তম ওভারের শেষ বলে সাকিব তার দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন ডাচদের দলপতি বোরেনকে ফিরিয়ে। নাসিরের হাতে ধরা পড়ার আগে বোরেন করেন ২৮ বলে ২৯ রান।
এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। ১৭তম ওভারে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন মারউই (১)। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই আল আমিন ফিরিয়ে দেন টম কুপারকে। আরাফাত সানির হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি ১৮ বলে ১৫ রান করেন।
বাংলাদেশ একাদশ:
মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, আল-আমিন হোসেন, আরাফাত সানি, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল ও তাসকিন আহমেদ।