আজ বিশ্ব মা দিবস
বিশ্ব মা দিবস ৮ মে (রবিবার)। পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দের নাম ‘মা’। সন্তানের জন্য জগতের যা কিছু কল্যাণকর, নিঃস্বার্থ মমতা ও ভালোবাসার প্রতীক ‘মা’।
সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। ভার্জিনিয়ার আনা জার্ভিসকে বলা হয় মা দিবসের প্রবর্তক। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
মা দিবসের মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া। যে মা জন্ম দিয়েছেন, লালন-পালন করেছেন, তাকে শ্রদ্ধা দেখানোর জন্য দিনটি পালন করা হয়। যদিও মাকে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর কোনো দিনক্ষণ ঠিক করে হয় না- তবুও গোটা বিশ্বে মাকে গভীর মমতায় স্মরণ করা হয় এ দিনে।
কালে কালে একটি কথাই চিরায়ত সত্যিতে পরিণত হয়েছে, আর সেটি হচ্ছে- পৃথিবীতে ‘মা’ শব্দের চেয়ে অতি আপন শব্দ আর দ্বিতীয়টি নেই। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় হলেন মা।
মায়ের গর্ভে সন্তান যেমন রক্ত শুষে নিরাপদে ধীরে ধীরে বড় হয়, তেমনি জন্মের পর মা-ই তার নাড়ি ছেঁড়া ধনকে তিলে তিলে বড় করে তোলেন। মাকে ভালোবাসা আর তার প্রতি হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধার বিষয়টি পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোতে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মেও মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশতের কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য ধর্মেও মাতৃভক্তি আর তার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞান সবার ওপরে স্থান দেওয়া হয়েছে।
জীবনের চরম সংকটকালে পরম সান্ত্বনার স্থল হিসেবে যার কথা প্রথম মনে পড়ে তিনি মমতাময়ী মা। মা প্রথম পৃথিবীর রং, রূপ, শব্দ, গন্ধ, চেনান, দেখান, শেখান। যুগে যুগে কবি-সাহিত্যিকগণ মা বন্দনা করে কত ভালোবাসাই না ঝরিয়েছেন।
আব্রাহাম লিংকন মাকে স্মরণে এনে বলেছিলেন, `আমি যা কিছু পেয়েছি, যা কিছু হয়েছি, অথবা যা হতে আশাকরি তার জন্য আমি আমার মার কাছে ঋণী`। ইংরেজ কবি রবার্ট ব্রাউনিং বলেছেন, `মাতৃত্বেই সকল মায়া-মমতা ও ভালোবাসার শুরু এবং শেষ।`
সেই বিবেচনায় বাংলাদেশে এ দিবসটি ঘটা করে পালনের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। যদিও মাকে সম্মান, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা দেখাতে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে নেওয়ার যুক্তি অনেকের কাছেই সেভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে অনেকেই মনে করেন মাকে সম্মান দেখাতে, তাকে গভীরভাবে স্মরণ করতে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত বিশ্ব মা দিবসের গুরুত্ব রয়েছে। যে কারণে বিশেষত নাগরিক জীবনে দিনটি পালনের ক্ষেত্রে বেশি সাড়া মিলেছে কয়েক বছর ধরে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আজ বাংলাদেশেও দিবসটি নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালন করা হবে।