আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস
নিজস্ব প্রতিনিধি:
আজ ২৬ মার্চ; মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনটিতে আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটেছিল বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। দীর্ঘ নয় মাস বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা। জাতি পেয়েছিল একটি দেশ, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতের মতো অন্যন্য পুরষ্কার। আর সেই আনন্দেই গোটা দেশ আজ মেতে উঠবে স্বাধীনতা উৎসবের আমেজে। এ উপলক্ষে দেশের সকল সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে আজ সরকারি ছুটির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে স্বাধীনতার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা শুরুর পর মধ্যরাতে, অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণাকরেন। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবন থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতারের আগমুহূর্তে দেওয়া সে ঘোষণায় বঙ্গবন্ধু শত্র“সেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ ও নির্দেশ দিয়েছিলেন। তৎকালীন ইপিআরের ওয়্যারলেস থেকে সে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় দেশের সর্বত্র। পরদিন ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার আরেকটি ঘোষণাটি পুনরায় প্রচার করা হয়। ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা আমবাগানে শপথ নেয় স্বাধীন বাংলার অস্থায়ী সরকার। এ আমবাগানকে পরে ‘মুজিবনগর’ নামকরণ করে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত এ বিপ্লবী সরকারের নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক কাঠামো লাভ করে।
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় হানাদার বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আÍসমর্পণের মাধ্যমে এই মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালী জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ৩০ লাখ মানুষের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বিশ্ব মানচিত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের আÍপ্রকাশ ঘটে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ছাড়াও সব সড়ক ও সড়কদ্বীপকে জাতীয় ও রঙিন পতাকায় সজ্জিত করা হবে। সূর্যোদয়ের সময় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পু®পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এ ছাড়া দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। হাসপাতাল, সরকারি শিশু সদন, এতিমখানা ও কারাগারে বন্দিদের দেওয়া হবে উন্নত খাবার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন দিবসটি পালন উপলক্ষে নিয়েছে নানা কর্মসূচি।