কাঠগড়ায় মৃত্যুশিবির আউশভিৎসের হিসাবরক্ষক
বয়স ৯৩ হলেও সাবেক অনেক নাৎসির মত অতীতের পাপ পিছু ছাড়েনি অস্কার গ্রোয়েনিংয়ের। মৃত্যুশিবির আউসভিৎসে ৩ লাখ মানুষকে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এপ্রিলে জার্মানিতে বিচার শুরু হচ্ছে তার। ১৯৪৪ সালের দিকে নাৎসি অধিকৃত পোল্যান্ড থেকে ওই শিবিরে আনা বন্দিদের মালপত্র থেকে পাওয়া টাকার হিসাব রাখতেন গ্রোয়েনিং।পরে সেই টাকা বার্লিনে পাঠানো হত। ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ জানায়, ১৯৪৪ সালেরই মে থেকে জুলাইয়ের মধ্যে অধিকৃত পোল্যান্ডের ওই শিবিরটিতে ৪২৫,০০০ জনকে নির্বাসিত করার অভিযোগ আছে গ্রোয়েনিংয়ের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে অন্তত ৩ লাখ মানুষকে গ্যাস চেম্বারে রেখে হত্যা করা হয়েছিল। এ মৃত্যুর সঙ্গে গ্রোয়েনিং জড়িত বলে অভিযোগ জার্মান সরকারি কৌসুলিদের। ২১ এপ্রিলে উত্তরাঞ্চলীয় লুনেনবার্গ শহরের আদালতে তার বিচার হবে। এর মধ্য দিয়ে ফের খুলবে জার্মানির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়ের খাতা। বিচারে উপস্থিত থাকবে মূলত ওই হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া এবং বেঁচে যাওয়াদের স্বজনরা। কৌসুলিদের মতে, হত্যার শিকার হওয়াদের মালপত্র সরিয়ে ফেলেও নবাগতদের জন্য গণহত্যার চিহ্ন মুছে ফেলায় জড়িত ছিলেন গ্রোয়েনিং। তাছাড়া, মূলত কাজের জন্য অনুপযুক্ত ইহুদি বন্দিদেরকে সরাসরি আউশভিৎসের গ্যাস চেম্বারে নিয়ে মারার কথাও গ্রোয়েনিং জানতেন বলে উল্লেখ করেছেন কৌসুলিরা। আউশভিৎসে কাজ করার জন্য অবশ্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন গ্রোয়েনিং। জার্মানির বিল্ড পত্রিকায় তিনি বলেছেন, বহু দশক পরও গ্যাস চেম্বারে মানুষের আর্তনাদ তার কানে বাজত। ওই ঘটনার জন্য এখনো লজ্জিত বলে উল্লেখ করেছেন গ্রোয়েনিং। তবে অনুশোচনায় দগ্ধ হলেও সরাসরি কাউকে খুন করেননি বলেই দাবি করেছেন গ্রোয়েনিং। তিনি বলেন, “আমি কাউকে হত্যা করিনি। আমি বরং এই ঘটনার অংশ ছিলাম”। একথা অবশ্য মানছেন জার্মান কৌসুলিরাও। তাই তার বিরুদ্ধে বন্দিদের হত্যার সঙ্গে পরোক্ষোভাবে জড়িত থাকা এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।