কালবৈশাখী ঝড়ে রাজধানীসহ সারাদেশে ১৪ জনের মৃত্যু
ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীর সদরঘাটে একজন, গুলিস্তানে একজন, বগুড়ায় ছয়জন, রাজশাহীতে তিনজন, পাবনায় একজন, নওগাঁয় একজন ও নাটোরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত প্রায় অর্ধশতাধিক। শনিবার বিকেল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
রাজধানীতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে দুইজনের মৃত্যু ঘটে এবং দুইজনকে গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়।
জানা গেছে, রাজধানীর সদরঘাটে বৃষ্টির সময় লঞ্চের সঙ্গে এক নৌকার ধাক্কা লাগলে হানিফ শেখ (৫০) নামের এক মাঝির মৃত্যু হয়।
এদিকে রাজধানীর গুলিস্তানে আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে ঝড়ের কবলে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি বাসের চাপায় জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।
রাজধানীর মৎস্য ভবন এলাকায় ঝড়ে বিলবোর্ড পড়ে বায়েজিদ আলম (৫০) ও তারা মিয়া (৪৫) নামের দু’জন রিকশা চালক আহতবস্থায় ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীর ও আশেপাশের উপজেলার কালবৈশাখীর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ ঝড়ে রাজশাহীতে বৃদ্ধাসহ তিনজনের মৃত্যু ও আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় এ ঝড়। সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি। ঝড়ের শুরু থেকেই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজশাহী মহানগরীর পুরো এলাকা। ঝড়ে আম, লিচুসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে চারঘাট উপজেলায় গাছের ডাল ভেঙে ১৫ জন, মোহনপুর উপজেলায় এক শিশু আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাবনা: কালবৈশাখীর কবলে পড়ে জেলা শহরের চাঁদমারীতে এক চা বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নওগাঁ: জেলার মান্দা উপজেলায় ঝড়ের মধ্যে পড়ে শাহনাজ (৩৪) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। এরমধ্যে ১২ জনকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নাটোর: গুরুদাসপুর উপজেলার পিপলাগ্রামে খোকন (৩৭) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বগুড়া: জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কালবৈশাখি ঝড়ে লণ্ড ভণ্ড হয়েছে শতাধিক টিনের ঘর বাড়ি আর গাছপালা। পাশাপাশি শিলা বৃষ্টিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। ঝড়ের কবলে পড়ে এক নারী ও শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েক জন।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া ঝড় বৃষ্টি চলে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত। এর মধ্যে ৬টা ১ মিনিট থেকে ৬টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার।
মৃতরা হলেন- জেলার শাজাহানপুর উপজেলার রাধানগর গ্রামের সান্না মিয়া (৩২), জেলা শহরের বউবাজার এলাকার হাছিরন (৩৫) ও একই এলাকার এক শিশু (৮) বগুড়া সদর উপজেলার পালশা গ্রামের আইনুল হকের ছেলে পলাশ (১৫), বামুনিয়ার শাহজাহানপুর এলাকার বাবলু মিয়ার ছেলে পায়েল (১৩) এবং সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুল গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে সুজন (৩০)। এদের মধ্যে পলাশ ও পায়েল দেয়ালচাপায় এবং সুজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন।