পাওনা টাকা আদায়ে ৬ বছরের শিশু অপহরণ
শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম: ব্যবসায়িক পার্টনারের কাছে সাড়ে ১০ হাজার টাকা না পেয়ে তার ৬ বছরের শিশু সন্তানকে অপহরণ করল অপর পার্টনার মোন্নাফ আলী। পরে আটক সন্তানকে উদ্ধার করতে এসে স্ত্রীসহ সহযোগিদের আটকে রাখল মাতব্বররা। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় ওই পরিবারে আতংক বিরাজ করছে।
জানা যায়, উপজেলার বালিয়ামারী এলাকার ব্যাপারী পাড়া গ্রামের মৃত: কালু মিয়ার পূত্র ছায়েদ আলীর সাথে গাইবান্ধা জেলার কঞ্চিপাড়া গ্রামের মৃত: আইজল হকের পূত্র মোন্নাফ আলী ব্যবসায়িক পার্টনার ছিল। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পরও ছায়েদ আলীর কাছে সাড়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করে আসছিল মোন্নাফ আলী। এনিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
গত রোববার মোন্নাফ আলী রাজিবপুরে আসে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য। রাতে ছায়েদ আলীর বড় ভাই ছয়িম মিয়ার বাড়িতে রাত যাপন করে সে। সোমবার সকালে ছায়েদের কাছে টাকা চাইলে সে আরো সময় চায়। এনিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক হয়। পরে কৌশলে ছায়েদের ৬ বছরের পূত্র রুমনকে অপহরণ করে গাইবান্ধার কঞ্চিপাড়ায় নিয়ে যায় সে।
ছায়েদ আলী জানান, সকালে ছেলেকে অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে রাজিবপুর থানায় অভিযোগ করি। পরে স্ত্রী ও দু’জন আত্মীয়কে নিয়ে গাইবান্ধায় মোন্নাফ আলীর বাড়িতে যাই। প্রথমে মোন্নাফ বিষয়টি অস্বীকার করে। এরপর কঞ্চিপাড়া ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রেজাউল করিম এর সহযোগিতায় ছেলের সন্ধান পাই।
কিন্তু সন্তান পাওয়ার পর উক্ত ইউপি সদস্য ও গ্রামের বেশ কয়েকজন মাতাব্বর মোন্নাফের সাথে যোগসাজসে ৬৮ হাজার টাকা দাবি করে। উপস্থিত শালিসী বৈঠকে মাতাব্বরগণ এক তরফা বিচার করে ছায়েদ আলীর নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে বলে ১৫০ টাকার ষ্টাম্পে স্বীকারোক্তি লিখে নেন। এরপর টাকার জন্য ছায়েদের পরিবারকে মোন্নাফের বাড়িতে আটকে রাখে স্থানীয়রা।
বুধবার দুপুরে লুকিয়ে বড় ভাই ছয়িম মিয়ার কাছে মোবাইল ফোনে ঘটনা খুলে জানায় ছায়েদ। বর্তমানে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকী দেয়া হচ্ছে। নিজের স্ত্রী ও সন্তানের নিরাপত্তার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য কামনা করছে সে।
রাজিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রিপিস কুমার রায় জানান, এ ব্যাপারে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।