কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি; ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৯ উপজেলার ৬৩ ইউনিয়নের ৫ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার পরিবারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ।
বন্যার পানিতে বসতবাড়ী ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসী মানুষ গুলো। হাতে কাজ না থাকায় এবং ত্রানসহায়তা না পাওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়েছে তারা। চারন ভুমি তুলিয়ে থাকায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় একমাত্র যোগাযোগের ভরসা নৌকা ও কলা গাছের ভেলা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুরের বাসিন্দা ছকিনা বেগম জানান, টানা ১৫ দিন থেকে পানিতে আছি। খাবার নাই, কাজ নাই। নদীতে মাছও পাওয়া যায় না। ছোওয়া-পোয়া নিয়া খুব কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। কোন মেম্বার-চেয়ারম্যান এ পর্যন্ত খোঁজ নেয় নাই।
একই চরের বাসিন্দা আবেদ আলী জানান, বর্তমানে চরত কোন কাজ নাই বাহে। নিজে খাই কি, গরু-ছাগলক খাওয়াই কি। আবাদপাতি তো শেষ হয়া গেছে। বাচার কোন উপায় নাই বাহে। সরকার এগুলা দেখে না।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে। জেলা প্রশাসন থেকে নতুন করে সাড়ে ৪ টন জিআর চাল বরাদ্দ পেয়েছি। যা দু-একদিনের মধ্যে বিতরন করা হবে।
জেলা প্রশাসন থেকে বানভাসী মানুষের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় ২শ ৫০ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় অনেক বানভাসীর ভাগ্যে ত্রান জোটেনি।
জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আবারো অবনতি হওয়ায় নতুন করে ১০ লাখ টাকা ও ৫শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশেরপত্র/ এডি/আর