Connecting You with the Truth

ঠাকুরগাও রাণীশংকৈলে জমে উঠেছে ক্রিকেট জুয়ার আসর

images (8)আনোয়ার হোসেন আকাশ,  রাণীশংকৈল প্রতিনিধি: ঠাকুরগাওয়ের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা, হাট-বাজার, খেলার মাঠ এমনকি গ্রাম্য এলাকা ক্রিকেট জুয়াতে পিছিয়ে নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিয়াঙ্গনে আলোচিত বিষয় ক্রিকেট ফুটবল নিয়ে জুয়া এভাবে চলতে থাকলে সমাজ অবক্ষয়ের আশংকা করছেন অভিভাবক মহল। জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোর শত শত স্পটে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়ার বাজি চলছে। এ সব জুয়াড়ীদের সাথে রিক্সা-ভ্যান চালক, হোটেল কর্মচারী এমনকি স্কুল কলেজের ছাত্ররা ক্রিকেট জুয়ায় মেতে উঠেছে। এতে অনেকে নিস্ব হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি দোকান পাট বিক্রী করে পথের ফকির সেজেছে। সারা বছর অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফুটবলে উয়েফা চ্যাম্পিয়নলীগ, ইংলিশ প্রিমিয়ারলীগ, উয়েফা ইউরোপালীগ, লা-লীগা, কোপা ডেলরে, এফএ কাপ, সিরি-এ, আফ্রিকান নেশনস কাপ, ফেঞ্চলীগ ওয়ান, বুন্দেস লিগা, ক্যাপিটাল ওয়ান কাপসহ একাধিক খেলায় গোল ব্যাবধান-ড্র-ম্যাচে কয়টি গোল হবে, কে গোল দিবে, হ্যাট্রিক হবে কিনা, কত মিনিটে গোল হবে আর ক্রিকেটের টি-২০, টেষ্ট, ওয়ানডে, আইপিএল, বিপিএল, বিগব্যাস, বিশ্বকাপ আসর এমনকি দেশ বিদেশের ঘরোয়া লীগ গুলোকে ঘিরে বাজিকরদের চলে রমরমা বানিজ্য। চলতি বিশ্বকাপকে ঘিরে প্রতিটি এলাকায় প্রকাশ্যে জুয়া খেলার দৃশ্য চোখে পড়ছে। ক্রিকেটে দলগত হার-জিত নির্ধারণ বাজির পাশাপাশি চলে প্রতি ওভার বল বাই বল বাজি, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে, প্রতি ওভারে কয়টি চার, ছক্কা বা কত রান হবে, কোন খেলোয়াড় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্ধারিত হবে, কোন দল কত রান করবে, ম্যাচের ক্যাচ ধরা, কোন খেলোয়াড় বেশি রাণ করবে, খেলায় কার সেঞ্চুরী বা হাফ সেঞ্চুরী হবে আরো অনেক কিছুতে চলে লাখ লাখ টাকার বাজি।

শক্তিশালী দলের সাথে দুর্বল দলের খেলা থাকলে সেক্ষেত্রে দেয়া হয় লোভনীয় অফার। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ক্রিকেট নিয়ে জুয়ার কথা শুনেছি তবে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা তথ্য নেই। তবে এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে। জুয়াড়ীরা সাধারণের দৃষ্টি এড়াতে ৫ হাজার টাকাকে ৫ টাকা ১ হাজার টাকাকে ১ টাকা বলে সংকেতের মাধ্যমে জুয়ার অংক নির্ধারণ করে থাকে। সরাসরি জুয়ার বাজি ধরার মতো মোবাইল ফোনেও জুয়ার বাজি ধরা হয় তবে এ ক্ষেত্রে এক জন মাধ্যম থাকে।
একাধিক সুত্র জানায়, ক্রিকেট বাজি খেলায় উপজেলার নেকমরদ বাজারে অনেক তরুন, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে বাজি খেলায় নিঃস্ব হতে দেখা গেছে। পরিবারের লোকজনের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে তারা ২/৩টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জুয়াড়ি জানায়, শুধু নগদ অর্থে নয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও বিশ্বস্থতার জায়গা থেকে বিভিন্ন জেলার বন্ধুদের সাথে বাজি ধরা হয়। যা নির্দিষ্ট সময়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেন দেন করা হয়ে থাকে। পুরাতনদের সাথে নতুন করে তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। অনেক জুয়াড়ী সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হতে বসেছে, অনেকে আবার ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছে, অনেকে আবার সুদের টাকা নিয়ে খেলছে ক্রিকেট জুয়া। বাড়ছে তাদের পরিবারে অশান্তি। অভিভাবক মহল স্থাণীয় প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছে জুয়াড়ীদের আড্ডায় হানা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে।

Comments
Loading...