দেশজুড়ে
ধ্বংসের মুখে নীলফামারীর মৃৎশিল্প
তারা মাসজুড়ে হাঁড়ি-পাতিল, সরা, লোটা, কলস, ঝাঁঝর, ফুলের টবসহ বিভিন্ন ধরনের মাটির সামগ্রী তৈরি করে। শুকানোর পর আগুনে পুড়িয়ে সেগুলো বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
কিন্তু বর্তমানে এ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও স্টিলের জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে মৃৎশিল্পটি বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। শত অভাবের মধ্যেও এ সম্প্রদায়ের অনেকেই এখনো পূর্বপুরুষের এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন।
এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনন্ত কুমার পাল, নারায়ণ চন্দ্র পাল, কালিদাস পাল, হরিদাস পাল ও কমলা রানী পাল নীলফামারীনিউজ-কে বলেন, জ্বালানী কাঠ, মাটি, শ্রমিকের মজুরি, রং, পোড়ানো ও পরিবহনসহ প্রতিটি কাজ করতেই টাকার দরকার হয়। ফলে এ পেশা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এ পেশার উৎকর্ষতা ধরে রাখার জন্য সরকার যে ঋণ চালু রেখেছে তার সুফল এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা পাচ্ছেন না।
তারা আরও জানান, বাজারে এখন আর আগের মতো মাটির জিনিসপত্রের চাহিদা নেই। এর স্থান দখল করেছে দস্তা, এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্র। ফলে বিক্রেতারা মাটির জিনিসপত্র আগের মতো আগ্রহের সঙ্গে নিচ্ছেন না। সে কারণে অনেকই পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ রিকশা চালিয়ে কেউবা দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সরেজমিন কুমোরপাড়ামোরপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই ব্যস্ত আছেন হাঁড়ি-পাতিল, কলস, চাড়িসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরিতে। ঔ গ্রামের কালিদাস পাল বলেন, ‘সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে যান অনেকেই। কিন্তু পরে আর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। দুঃখ-কষ্টের মাঝে দিন কাটলেও মৃৎশিল্পীরা স্বপ্ন দেখেন, একদিন আবার কদর বাড়বে মাটির পণ্যের। সেদিন হয়তো আবারও তাদের পরিবারে ফিরে আসবে সুখ ও শান্তি। সেই সুদিনের অপেক্ষায় আছেন তারা। বিডিপত্র/আমিরুল