নারায়ণগঞ্জে লাঙ্গলবন্দে পুণ্যস্নানে পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নান উৎসবে পুণ্যার্থীদের ভিড়ে পদদলিত হয়ে দশজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরো প্রায় অর্ধশত। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও তিনজন পুরুষ রয়েছেন। যাদের সবার বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো.জাকারিয়া জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল দশটার দিকে মহাষ্টমীর পূণ্যস্নান উৎসবে জেলার রাজঘাট ও প্রেমতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ পূণ্যস্নান শুরু হয়।
এদিকে, এই ঘটনার জন্য দর্শনার্থীদের দুষলেন পূর্ণার্থীরা। ইতোমধ্যে নিহতদের পরিচয় সনাক্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে পঁচিশ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী প্রশাসক।
লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় ১৬টি ঘাটে স্নানের ব্যবস্থা করলেও ‘রাজঘাটে’ স্নানের জন্য পুণ্যার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা দেখা দেয়। ওই ঘাট এলাকায় সকাল সোয়া ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ভিড়ে পদদলিত হয়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া বলেন, শুক্রবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে স্নান উৎসব শুরু হয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে।
‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য তুমি আমার পাপ হরণ কর’- এ মন্ত্র উচ্চারণ করে দূর্বা ঘাস, বেল পাতা, কলা, আম, ডাব ও ফুল দিয়ে পাপ মোচনের বাসনায় ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্যার্থীরা ব্রহ্মার কাছে কৃপা প্রার্থনা করে স্নান করছেন।
শনিবার ভোর ৬টা ৫৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে লগ্ন শেষ হওয়া পর্যন্ত স্নান উৎসব চলবে বলে জানিয়েছেন লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাসু দেব চক্রবর্তী। উৎসব ঘিরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মহিলাদের কাপড় বদলানোর কক্ষ, বিশুদ্ধ পানির জন্য ৫০টি টিউবওয়েল, ৭০টি টয়লেট এবং ৩৫টি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র ও বিনামূল্যে খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া এই উৎসব উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দে তিন দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। প্রতি বছরের মতো এবারও শুক্রবার ভোর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র অষ্টমীস্নান শুরু হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদে হাজারো পূণ্যার্থীর এ স্নান চলবে শনিবার ভোর পর্যন্ত।
পূণ্যস্নান উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকেই বন্দর থানার লাঙ্গলবন্দে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর ঢল নামে। নিজেদের পাপ মোচনের জন্য প্রার্থনায় বিদেশ থেকেও অনেকে এসেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।