নিয়ামতপুরের শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজ ১২ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি
নিয়ামতপুর প্রতিনিধি, নওগাঁ:
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার আদিবাসীদের নামে একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজ ১২ বছরেও এমপিও ভুক্ত হয় নি।
বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারিতে বিদ্যালয়টির শুভ সূচনা হয়। ৫শ’ ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করা শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজ আজও এমপিওভুক্ত হয় নি। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়া ছাড়াও নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে।
উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪শ’ ৬৬ জন। বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। লেখাপড়ার মান সন্তোষজনক বলে এলাকাবাসী জানান।
বিগত তিন বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১২ সালে জেএসসিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল ৭৬ জন, পাশ করেছিল ৬০ জন, ২০১৩ সালে জেএসসিতে অংশগ্রহণ করেছিল ৪৪ জন, পাশ করেছিল ৩৯ জন, ২০১৪ সালে জেএসসিতে অংশগ্রহণ করেছিল ৬৩ জন, পাশ করেছিল ৬০ জন এবং বর্তমান ২০১৫ সালে জেএসসিতে অংশ নেবে ১শ’ ৩৬ জন। শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজ ২০১৪ সালে প্রথম নিজ নামে এসএসসিতে অংশগ্রহণ করেছিল, ফলাফল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৩২ জন পাশ করেছিল ২৫ জন। ফলাফলে দেখা গেছে সন্তোষজনক। বিদ্যালয়ে কোন বিল্ডিং নেই। নিজস্ব অর্থায়নে টিন শেড কিছু ঘরে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত বেঞ্চের অভাবে একটি বেঞ্চে ৬-৭ জন করে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া করছে। প্রতিষ্ঠানে আজ পর্যন্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারে নি। বিদ্যালয় ১১ জন শিক্ষক এবং ৪ জন কর্মচারী দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান জীবন আহমেদ বলেন, আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমস্যার শেষ নেই। তবে মূল সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন নিয়ে পাঠদান করছে, অথচ আমরা একই রকম পাঠদান করছি বিনা বেতনে, এ রকম আর কতদিন চলবে? সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিনতলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস করার সমস্ত কার্যক্রম শেষ করে এনেছেন। অনতিবিলম্বে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. এনামুল হক তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিদ্যালয়ের উন্নতি কল্পে ৫০ হাজার টাকা এবং জেলা প্রশাসক ১ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সুনজর রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি, কিন্তু তারপরেও ১২ বছরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীবৃন্দ।
এলাকাবাসী, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীবৃন্দের দাবি অবিলম্বে শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজেটিকে এমপিওভুক্ত করা হোক।