‘প্রথমে মিনতি করবা, পরে বুলডোজার চালাবা’

বিডিপি ডেস্ক: হাঁটার জন্য ফুটপাত ছেড়ে দিতে দখলকারীদের কাছে আগে ‘মিনতি’ করতে ও এতে কাজ না হলে পরে বুলডোজার চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেন, ফুটপাত থেকে দখলদার উচ্ছেদ খুবই কঠিন কাজ। তবে এরপরও ঢাকার সব ফুটপাত থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হবে। আমার লোকজনকে আমি বলেছি প্রথম দিন যাবা, হাতে ধরবা, বলবা ‘স্যার আমার জায়গা ছেড়ে দেন’। দ্বিতীয় দিন যাবা, বলবা ‘স্যার, আপনি অনেক বড়লোক, ফুটপাত বোধ হয় ভুলে দখল হয়ে গেছে, স্যার আপনি মনে হয় টের পান নাই, স্যার ছেড়ে দেন’। তৃতীয় দিন গিয়া পায়ে ধরবা, বলবা ‘গরিবের ফুটপাত স্যার ছেড়ে দেন’। তাও না ছাড়লে চতুর্থ দিন গিয়া বুলডোজার চালাইয়া দিবা। উই ডোন্ট কেয়ার। ইনশাল্লাহ আপনারা দেখবেন, উই উইল টেক আউট দিস।”
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি রাজধানীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এই কঠোর বার্তা দেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র আনিসুল হক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনকে উদ্দেশ করে বলেন, “মন্ত্রী মহোদয়কে এখনি বলছিলাম। এখানে তো প্রকাশ্যে বলতে পারব না, কারা দখল করে আছে। একটি স্বাস্থ্যকর ও প্রাণবন্ত শহর প্রতিষ্ঠা করতে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে, যেগুলো চাইলেও অতিক্রম করা কঠিন। আগামী তিন বছর সাত মাস পর তার মেয়রের দায়িত্ব ছাড়ার সময় ঢাকা একটি ‘অন্যরকম শহর’ হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে তেজগাঁওয়ে সাত রাস্তা থেকে ফার্মগেইট-কারওয়ান বাজারমুখী সড়ক দখলমুক্ত করতে গিয়ে ট্রাক শ্রমিকদের রোষের মুখে পড়লেও সফল হয়েছিলেন আনিসুল হক।
‘নগর এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় আরবান ডায়লগ’ শীর্ষক দুই দিনের কর্মশালাটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ। একটি বাসযোগ্য নগর হিসেবে গড়তে হলে ঢাকার উপর থেকে চাপ কমাতে জোর দেন মন্ত্রী মোশাররফ। এজন্য ঢাকার বাইরের শহরগুলোয় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার তাগিদ দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকার বাইরে ভালো আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে ঢাকার ওপর চাপ কমবে। সরকার বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পে ১ লাখ আবাসিক ফ্ল্যাট তৈরি করছে বলে জানান মোশাররফ হোসেন। এর ফলে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত লোকজন কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান এস এম মাকসুদ কামাল, হ্যাবিটেট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ-এর পরিচালক জন আর্মস্ট্রং প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।