Connect with us

Highlights

বঙ্গবন্ধুর উন্নত ব্যক্তিত্ব-মাধুর্য চরিত্র মুগ্ধ করতো সবাইকে

Published

on

শোকাবহ আগষ্ট মাসের অষ্টম দিন আজ। ১৯৭৫ সালের এই দিনেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সদা উৎফুল্ল একজন মানুষ। যিনি আমাদের বাঙালী ও বাংলাদেশী জাতিসত্তার প্রধান রূপকার। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করেছিল। বাঙ্গালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে ওই নির্বাচনটিই ছিল মাইলফলক। কিন্তু তৎকালীন পশ্চিম পকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী নির্বাচনের রায়ে জনমতের প্রতিফলনকে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। তাই সমগ্র পূর্ব বাংলা জুড়ে গণবিস্ফোরণ ঘটে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রাম।

আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুই ছিলেন পুরোধা। তিনিই প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। এছাড়াও বাঙ্গালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ছিল অবিস্মরণীয় ভূমিকা। দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে অন্যায়ের সাথে তিনি কখনই আপোষ করেননি। ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন অসাধারণ সহজ, সরল, নিরহঙ্কারী ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন অমায়িক মানুষ। তার বিশাল ব্যক্তিত্বের কাছে তৎকালীন বহু জাদরেল নেতাও নিপ্রভ ছিলেন। তার উন্নত ব্যক্তিত্ব, চরিত্র মাধুর্য মুগ্ধ করতো সবাইকে। তিনি ছিলেন প্রচণ্ড এক জাতীয়তাবাদী নেতা। তার স্বদেশ প্রেম ছিল প্রশ্নাতীত। দেশের বাইরে সফরে গেলে তিনি সাধারণত বিদেশী খাবার খেতেন না। রাষ্ট্রীয় ভোজসভায়ও সবসময় তিনি বাঙ্গালি খাবারের খোঁজ করতেন।

বঙ্গবন্ধুর নিত্যসহচর ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। দেশ-বিদেশের প্রায় প্রত্যেকটি সফরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়েছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পৃথিবীর যে প্রান্তে যখনই গেছেন বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা তাদের বাসা থেকে স্বদেশী খাবার এনে বঙ্গবন্ধুকে পরিবেশন করতেন। তিনি রাষ্ট্রীয় দফতরে সরকারি রন্ধনশালার খাবার খেতেন না। বিশেষ করে দুপুরের খাবার নিয়মিতভাবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসা থেকে তার প্রিয় সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব রান্না করে পাঠাতেন। বঙ্গবন্ধু মুজিব সহকর্মীদের নিয়ে সে খাবার খেতেন। তোফায়েল আহমেদ জানান, বঙ্গবন্ধুর নিজ বাসার পরিবেশ ছিল একেবারেই পারিবারিক। সকালেও অনেক সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই নাস্তা গ্রহণ করতেন তিনি। তাদের দাওয়াত করে আনা হতো। জীবনে একাকী খাওয়ার রেকর্ড তার খুব বেশি নেই। ব্যক্তিগত গুণাবলীর এই দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের আর কোন রাজনীতিকেরই ছিলনা এবং বর্তমানেও নেই।

দেশের বর্ষিয়ান রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ আরো জানান, বঙ্গবন্ধুর হৃদয় ছিল আকাশ ছোঁয়া। শুধু নিজ দলের নয়, বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী এমনকি সাধারণ মানুষের বিপদে-আপদে বঙ্গবন্ধু সাহায্য করতেন। প্রায় প্রতিদিনই দেশের নানা এলাকা থেকে আসা সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতেন তিনি। এ সময় অত্যন্ত মনযোগ দিয়ে বঙ্গবন্ধু তাদের সুখ-দুঃখের কথা শুনতেন। কোন প্রটোকলের ধার ধারতেন না। তার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, বাংলার মানুষ তাকে মারতে পারে না। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ওই কালরাত্রিতে এই সরল সোজা মানুষটিকে গুটিকয়েক উচ্চাভিলাষী, বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে আমাদের ইতিহাসকে করেছে কলঙ্কিত।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *