Connecting You with the Truth

বিমানবন্দর রেল স্টেশনে চেকের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

উত্তরা প্রতিনিধি:
ঢাকা বিমানবন্দর রেল স্টেশনে টিকিট চেকের নাম করে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কমলাপুর-ঢাকা-বিমানবন্দর রেল স্টেশন থেকে শুরু করে পুরো দেশের রেল টিকিট চেকের নামে একই চিত্র চলছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রেলে ওঠার সময় টিকিট চেক না করে ট্রেন ছাড়ার পর টিকিট চেকের নামে ভাড়ার দ্বিগুণ টাকা আদায় করা হয়। যার কোনো টাকাই সরকারি খাতে জমা হয় না। দ্বিগুণ টাকা দেওয়ার পরও বিমানবন্দর রেল স্টেশনে টিকিট চেকের নামে জোর করে স্টেশন মাস্টার ও টিসি রুমে নিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে যার নিকট যা পায় হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। কেউ যেতে না চাইলে আরএনবির লোকজন পেটাতে পেটাতে টেনে হিঁচড়ে ভিতরে নিয়ে যায় এবং টাকা দিতে রাজি না হলে চর থাপ্পর দিতে শুরু করে। এভাবেই গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় টিকিট না দেখতে পারলে, কোথা হতে এসেছ? কোথায় যাবে? ইত্যাদি জেনে ঝোপ বুঝে কোপ মারে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী অসহায় সাধারণ যাত্রীরা। টাকা আদায়ের পর কোনও রশিদ দেয়া হয় না বলেও জানায় তারা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, কোন যাত্রীর কাছে যদি টিকিট না পাওয়া যায়, তাহালে তার কাছ থেকে সর্বনিু ৩০ এবং সর্বোচ্চ ৭০ টাকা আদায়ের নিয়ম আছে। তবে যদি মোবাইল কোর্ট বসে সেক্ষেত্রে দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার বিধান রয়েছে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই যাত্রীকে রশিদ দেয়ার নিয়ম রয়েছে।
তিতুমির কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র সোহাগ জানায়, আমি জয়দেবপুর হতে বিমানবন্দর এসেছি, স্টেশনে টিকিট চাইলে বলে ট্রেনের ভেতর টিকিট আছে। ট্রেনে টিকিট দেখাতে না পারলে আমার নিকট হতে ডাবল ভাড়া নেয়। তারপরেও টিকিট চাইলে বলে লাগবে না। বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার সময় টিকিট দেখাতে না পারলে নিরাপত্তা কর্মী শরিফুল ইসলাম আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে পেটাতে রুমে নিয়ে গিয়ে জোর কারে পকেটে হাত দিয়ে ৮০০ টাকা নিয়ে নেয়। আমার পরিচয় দিলে বলে, ‘কথা কম ক, বেশি কথা কবি মামলা খাবি।’
আলামিন নামক এক যুবক জানায়, আমার নিকট হতে ২০০ টাকা নিছে, দিতে না চাইলে মামলা দিয়ে জেলে দিব কয়, আমার কাছে আর কোন টাকা নেই এখন যামু কেমনে?”
ভয়ে আতঙ্কিত দুই যুবক জানায়, আমরা বিমানবন্দরে এসেছি, আমার বাবা বিদেশ হতে আসবে। সময় হাতে আছে বিধায় এখানে ঘুরতে এসেছি, আমাদের ঘরের ভিতর নিয়ে ৫০০ টাকা রাখছে। টাকা দিতে চাইনি বলে লাঠি দিয়ে অনেকগুলো বাড়ি দিছে, টাকা না দিলে পুলিশে দিব কইছে, পরে বাধ্য হয়ে টাকা দিয়া দিছি।”
এ ব্যাপারে আরএনবি ওসি মো. আব্দুল মজিদ বলেন, যাদের নামে অভিযোগ উঠেছে তারা তো আমার লোক না। আমরা তো পুলিশের লোক বরং আমরাও এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী। তারা আমাদের নিজস্ব লোকদের নিকট থেকেও অতিরিক্ত ভাড়া নেয়।
এ ব্যাপারে রেইলওয়ে টিসি মো. হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা যে টাকাটা নিয়ে থাকি তা খাতায় জমা করি। যেমন গত কাল চট্টগ্রাম থেকে এক যাত্রী টিকিট ছাড়া আসে তার ভাড়া ৩২০ টাকা এবং জরিমানা ৩২০ টাকা তার নিকট থেকে নিয়েছি। যা খাতায় জমা করা আছে, সাথে রেলের সিরিয়াল নাম্বার এবং গাড়ি নাম্বার দেয়া আছে।
স্টেশন মাস্টার হরি গোপাল সেন বলেন, আমাদের টিসি বা কর্মী যারা আছেন তাদেরকে তো রাখা হয়েছে এগুলো দেখার জন্য এবং যদি টিকিট ছাড়া কোন যাত্রী পাওয়া যায় তার কাছ থেকে ভাড়া এবং ভাড়া সমুদয় জরিমানা নেওয়া হয়। যেমন ১০০ টাকা ভাড়া হলে আরও ১০০ টাকা জরিমানাসহ মোট ২০০ টাকা নেওয়া হয়।
এ ধরনের হয়রানি বন্ধে সরকার অতি শীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এটাই প্রত্যাশা সাধারণ যাত্রীদের।

Comments
Loading...