Connecting You with the Truth

যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার ঘোষণা ভারতের

nuclear

পাকিস্তানের পর এবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার হুঁশিয়ারি দিল ভারত। সোমবার নয়াদিল্লীতে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান দালবির সিং অভিযোগ করেন, জম্মু-কাশ্মীরে অস্থিতিশীলতা ছড়াতে পাকিস্তান নতুন নতুন কৌশল ও পন্থা ব্যবহার করছে।

এদিকে, দুই দেশের মধ্যে গুলি বিনিময়ে ৬ পাকিস্তানি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ হয়েছে কাশ্মীরে। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে গেলে পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে তারা।

গত শুক্রবার জম্মু কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানী ও ভারতীয় বাহিনীর মধ্য গুলি বিনিময়ে পাকিস্তানের ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর জানায়, আহত ৪০ জনের মধ্যে ১১টি শিশুও রয়েছে। গুলিবিনিময়ের ঘটনায় একে অপরকে দুষছে বিএসএফ ও পাকিস্তানি রেঞ্জারস।

সোমবার এ ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদে বিক্ষোভ করে শত শত মানুষ। সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায় তারা।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, ভারত যদি যুদ্ধ চায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীরি জনগণও তার জন্য প্রস্তুত আছে। ভারত ও পাকিস্তান দুটিই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। এই দুই দেশের মধ্যে যদি যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে ২ কোটি মানুষের জীবন হুমকির মধ্যে পড়বে। বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।

এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ইস্যুকে কেন্দ্র করেই সম্প্রতি বাতিল হয়ে যায় দুই দেশের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক। মঙ্গলবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান দালবির সিং বলেন, ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে যুদ্ধ বিরতি চুক্তির পর থেকে পাকিস্তান এ পর্যন্ত ৫৫ বার তা লঙ্ঘন করেছে।

ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান দালবির সিং বলেন, ‘বারবার যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন ও অনুপ্রবেশের কারণে পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জম্মু-কাশ্মীরে অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। কোন পূর্ব সতর্কতা ছাড়া যে কোন সময় কোন যুদ্ধ বেঁধে গেলে তার জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি।’

ভারতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে আসা পাকিস্তানিরাও সীমান্তে গুলিবিনিময়ের নিন্দা জানিয়ে দুই দেশকে এসব ঘটনাকে প্রশ্রয় না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শান্তি আলোচনা-ই একমাত্র সমাধান বলেও উল্লেখ করেন তারা। ভারত ও পাকিস্তানের শান্তি আলোচনায় বসা উচিৎ। গুলিবিনিময়ের এসব ঘটনায় দুই দেশেরই নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। আমার দুই দেশেই আত্মীয় আছে। সীমান্ত পার হওয়ার সময় সব সময়ই উদ্বিগ্ন থাকি। দুই দেশের প্রতি-ই আমার আহ্বান, গুলি চালাবেন না।

এর আগে গত সপ্তাহেও আরএস-পুর সেক্টরের কাছে পাকিস্তানি ও ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ে ২ নারীসহ মোট ৩ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ২২ জন। ভারতের অভিযোগ, সম্প্রতি বেড়ে গেছে সীমান্তে জঙ্গি হামলার ঘটনাও। গত ২৭ আগস্ট উত্তর কাশ্মীর থেকে এক পাকিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীকে আটকের কথা জানায় ভারতীয় গণমাধ্যম। ওই অভিযানে আরো ৩ জঙ্গি মারা যায়।এই উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে দুপক্ষকেই ধৈর্য ধারণ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর

Comments
Loading...