Connecting You with the Truth

রাজধানীতে “হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রব্যবস্থা” শীর্ষক আলোচনা সভা

হেযবুত তওহীদের সংস্কার প্রস্তাবই জাতির মুক্তির সনদ -বলে মন্তব্য করেছেন হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। ‘ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা। গোড়ায় থাকা এই গলদের ফলাফল হিসেবে আমাদের সামনে বহু সমস্যা দৃশ্যমান হচ্ছে। আর সবাই মিলে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে, অথচ গোড়াতে কেউ হাতই দিচ্ছে না। গোড়াতে হাত দিতে হবে। রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি হবে আল্লাহর হুকুম। তা না হলে যত সংস্কারই করা হোক না কেন জাতির মুক্তি মিলবে না।’

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজধানীতে আইডিইবিতে অনুষ্ঠিত হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রব্যবস্থা” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, রাজনীতির নামে এখানে আমরা যা কিছু চর্চা করছি, এটা একটা ভুল সিস্টেম, ভুল ব্যবস্থা। এই রাজনীতি করতে আল্লাহ আমাদেরকে বলেন নি, আল্লাহর রসুলও আমাদের এটা শেখান নি। পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের উপর এটা চাপিয়ে দিয়েছে।

‘পশ্চিমাদের শেখানো এই অপরাজনীতি, ধাপ্পাবাজির রাজনীতি করে করে এদেশের সরল মানুষ ধূর্ত হয়, ভদ্র ঘরের ছেলেরা সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখায়, কিশোর গ্যাং হয়। শিক্ষিতরা দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠে। লাখ টাকার মালিক শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়। আর যারা ভালো থাকতে চায়, এত খারাপের ভিড়ে তারা একসময় হারিয়ে যায়।’
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, শুধু রাজনীতিই নয় প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ অন্যান্য ক্ষেত্রগুলো এখনও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তাই কাঠামোগত সংস্কার করে লাভ নেই। এই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে।

‘সংবিধানের ভিত্তি আল্লাহর বিধান হওয়া উচিত এবং কোর’আনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ আইন প্রণয়ন করা উচিত’- বলেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা।

তিনি আরও বলেন, বিপ্লবের অর্থ হলো আমূল পরিবর্তন। ছাত্র-জনতার বিপ্লব তখনই সফল হবে যখন মৌলিক পরিবর্তন আনা হবে। যদি কোনো মৌলিক পরিবর্তন না ঘটে, তবে এই বিপ্লব ব্যর্থ হবে। একমাত্র আল্লাহর দেওয়া জীবন ব্যবস্থা প্রবর্তন করলেই বিপ্লবের প্রকৃত সুফল অর্জিত হবে।

অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আল্লাহর দেওয়া সুদমুক্ত অর্থনীতির প্রস্তাব করে তিনি বলেন, বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করে সমাজে ন্যায়সঙ্গত ভারসাম্য আনা সম্ভব।
শিক্ষাব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব করেন তিনি। বহুমুখি শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলো উল্লেখ করে একমুখি শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের তাগিদ দেন তিনি। শিক্ষাব্যবস্থায় মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষাকে একত্রিত করে কারিগরী শিক্ষা, নীতি-নৈতিকতা, ধর্মীয় শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা দেওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবনা অত্যন্ত বাস্তবভিত্তিক ও আধুনিক সমাজের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বলে দাবি করেন তিনি। সরকার এই প্রস্তাবনা গ্রহণ করলে, দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণরূপে প্রতিফলিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা।

হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, তথ্য সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, কেন্দ্রীয় যুগ্ম নারী বিষয়ক সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সভাপতি আল আমিন সবুজ, মিরপুর থানা সভাপতি আব্দুল হক বাবুল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, এক বুক আশা নিয়ে যে সরকারের হাতে দেশের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছিল, এরই মধ্যে নানা ইস্যুতে তাদের ব্যাপারে সমালোচনা শুরু হয়েছে। দিন যত যাবে এই সমালোচনা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকবে। কারণ- চলমান সিস্টেমটাই ভুল। আমাদের ব্যবস্থাটাই ভুল, আর সেই ভুলটাও আবার ঘুণে ধরা, পচাগলা। এই ভুল ব্যবস্থার মধ্যে যারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসুক, যত ভালো, শিক্ষিত, চরিত্রবান, ধার্মিক ও সৎ মানুষই আসুক, দিন শেষে তারা নিজেরাও ভালো থাকতে পারবেন না, নিজেরাও পচে যাবেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ থেকে শুরু করে আজকের বাংলাদেশ পর্যন্ত প্রতিটি সরকারের ব্যর্থতার কারণ এটিই। প্রচলিত সিস্টেমকে বাদ দিয়ে তাই আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন করতে হবে- বলেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগগর দপ্তর সম্পাদক তসলিম উদ্দিন।

Comments
Loading...