Connect with us

Highlights

রাজশাহীতে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ধর্মব্যবসা সাম্প্রদায়িকতা ও মাদকের বিরুদ্ধে করণীয় শীর্ষক হেযবুত তওহীদের বিভাগীয় আমির সম্মেলন অনুষ্ঠিত

Avatar photo

Published

on

আবু রায়হান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সবকটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মাদক, নারী নির্যাতন, ধর্ষনসহ যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনসচেতনামূলক কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। জঙ্গিবাদকে ইস্যু করে একটির পর একটি মুসলিম দেশকে যখন ধ্বং সকরে দেওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশকে নিয়েও যখন একই ষড়যন্ত্র চলছে তখন দেশকে নিরাপদ রাখতে ষোল কোটি মানুষকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। হেযবুত তওহীদ এই ষোলকোটি মানুষের মাঝে ঐক্য সৃষ্টির জন্য নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৬এপ্রিল) সকাল ১০ টায় রাজশাহী জেলার পদ্মা কমিউনিটি সেন্টার হলরুমে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত অরানৈতিক আন্দলোন হেযবুত তওহীদের রাজশাহী বিভাগের সকল পর্যায়ের সভাপতি/সম্পাদকদের নিয়ে বিভাগীয় আমির সম্মেলন-২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আমির সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুয্যামান মনির এর সভাপতিত্বে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাকীব আল হাসান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শফিকুল আলম উখবা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ যোবায়ের আহম্মেদ নূহু, রাজশাহী বিভাগীয় হেযবুত তওহীদের নারী বিষয়ক সম্পাদক আফরোজা মনির, রাজশাহী জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মোঃ আলফাজ হোসেন (মুকুল) প্রমুখ।
উক্ত আমির সম্মেলনে মূখ্য আলোচক রাকীব আল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমান সময় অত্যন্ত ভয়াবহ। মানুষ অন্য সৃষ্টির মতো নয়, আল্লাহ তার মধ্যে অসম্ভব চিন্তাশক্তি দান করেছেন, কাজেই এই সময় নিয়ে মানুষকে ভাবতে হবে, চিন্তা করতে হবে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত বিশ্বের বহু দেশ, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো। এখন আমাদেরকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে, সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। অন্যথায় ধর্মব্যবসায়ীরা ধর্মবিশ্বাসী সাধারণ মানুষের ঈমানকে ভুলখাতে প্রবাহিত করে দেশে সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটাতেই থাকবে। ফলে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিকেও ইরাক-সিরিয়ার মতো করুণ পরিণতি বরণ করতে হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন একটি সঠিক আদর্শের। এই সঠিক আদর্শটি হেযবুত তওহীদের কাছে আছে।
তিনি আরো বলেন এই ভয়ঙ্কর সঙ্কট থেকে রক্ষা করতে পারেন একমাত্র মহান আল্লাহ। এই সঙ্কটে পড়ে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়া ইত্যাদি দেশ ধ্বং সহয়ে গেছে, এখন যদি বাংলাদেশকে এই সঙ্কট থেকে বাঁচাতে হয় তবে একমাত্র উপায় হলো আমাদের মো’মেন হওয়া। কারণ মো’মেনের সাথে আল্লাহর ওয়াদা, তিনি মো’মেনদের রক্ষা করবেন, তিনি মো’মেনদের অভিভাবক। আর এই মো’মেন হতে হলে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যায় যে-ই করুক তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ইসলামের নামে আমাদের সমাজে বহু অনৈসলামিক কার্যক্রম চলছে। এগুলো আল্লাহর সুলের ইসলাম নয়। তিনি প্রকৃত ইসলাম ও বিকৃত ইসলামের রূপ তুলে ধরে বলেন, প্রকৃত ইসলাম মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, শত্রুকে ভাই বানিয়েছিল, আরবের অবজ্ঞাত, উপেক্ষিত, অশিক্ষিত একটা জাতিকে শ্রেষ্ঠজাতি, শিক্ষকের জাতিতে পরিণত করেছিল। আর বর্তমানের বিকৃত ইসলাম মানুষের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে, এক জাতিকে হাজার হাজার ফেরকা, মাজহাব, দল-উপদলে ভাগ করে পরস্পর শত্রুতে পরিণত করে।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি, মুসলিমজাতির করুণ দুর্দশার চিত্র, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি কীভাবে হলো, কীভাবে পরাশক্তিরা মুসলমানদের ঈমানকে কিছু ভাড়াটে আলেমদের মাধ্যমে হাইজ্যাক করে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করল সেটাও ইতিহাসের আলোকে তুলে ধরেন। হেযবুত তওহীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, মানবজাতির মধ্য থেকে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অনৈক্য, ভেদাভেদ দূরকরে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য রসুলাল্লাহ (সা.) এর প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা তুলে ধরে মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। এটা করার জন্য হেযবুত তওহীদের সদস্যরা তাদের জীবন ও সম্পদ মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করে যাচ্ছেন। এই কাজের পুরস্কার তারা মহান আল্লাহর নিকট আশা করেন, তারা এর বিনিময়ে পার্থিব কোনো স্বার্থ আশা করেন না। তাদের কোরবানীর বিনিময়েই হেযবুত তওহীদ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে। কাজেই হেযবুত তওহীদের কোনো আর্থিক ও রাজনীতিক স্বার্থ নেই। হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে যাবতীয় অপপ্রচারের জবাব দেন এবং হেযবুত তওহীদের বৈধতার দলিলপত্র উপস্থাপন করেন। হেযবুত তওহীদ যে গত ২৪ বছরে একটিও আইন ভঙ্গ করেনি তার স্বপক্ষে আদালতের রাইয়ের শত শত কপি সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। দেশবাসীর প্রতি তিনি ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান করে বলেন, ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রচারিত ধর্মের অপব্যাখ্যা থেকে বের হয়ে আমাদের ধর্মের প্রকৃত চেতনা দ্বারা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
এ সময়ে প্রধান অতিথি শফিকুল আলম উখবা তার বক্তব্যে বলেন ধর্ম এসেছে মানবতার কল্যাণে আর ধর্মকে ব্যবহার করে সন্ত্রস সৃষ্টি করা বৈষিয়িক স্বার্থ উদ্ধার করা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার করাকে কোন ধর্মই অনুমোদন দেয় না তবুও ধর্মের নামেই চলছে এসব অধর্ম। এ অবস্থায় ধর্মের প্রকৃত ধর্মের শিক্ষা সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরার কোন বিকল্প নেই। সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে নিঃস্বার্থভাবে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরার কাজটিই করে যাচ্ছে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত অরানৈতিক আন্দলোন হেযবুত তওহীদ। আজ বাংলাদেশের মানুষ চরম সংকটময় পরিস্থিতিতে বসবাস করছে তার কারণ হলো বর্তমানে যে ধর্ম আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত আছে সেটা প্রকৃত ধর্ম নয়, একটি অসাধু কুচক্রি মহল সাধারণ ধর্মভিরু মানুষের ধর্মিয় মন-ঈমানকে হাইজ্যাক করে তাদের ধর্মবিশ্বাশকে ভূলখাতে প্রবাহিত করে দেশে নৈরাজ্য ও হানাহানি ও অশান্তি জনক কর্মকান্ডে লিপ্ত করছে। এ চরম সংকটময় পরিস্থিতি থেকে জাতির মুক্তির পথ নিয়ে হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমাম মাননীয় এমামুয্যামানের অনুসারিরা মানবতার কল্যাণে নিজেদের জীবন সম্পদ উৎসর্গ করে সারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিঃসার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
উক্ত আমির সম্মেলনের সভাপতি মনিরুয্যামান মনির তার বক্তব্যে বলেন দুনিয়াময় এই মুসলিম জাতির উপর কী অবর্ণনীয় দুর্দশা চলছে তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে কারন কেউ যেন আমাদের ধর্ম বিশ্বাসকে ভ’লখাতে ব্যাবহার করে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদি কর্মকান্ডে লিপ্ত করতে পারে। সারা দেশে ওয়াজ মাহফিল, আলোচনা, বক্তৃকা, সেমিনার অনেকই হলো কিন্তু সমাধান এলোনা এবার একটু থেমে সুস্থ মাথায় চিন্তা করতে হবে আমরা আসলে কোন পথে এগোচ্ছি জানতে হবে যে, আজ মানবজাতি যে পথ ধরে এগোচ্ছে সেটা সঠিক পথ কিনা, যদি সঠিক পথে থাকি তাহলে আজ এমন পরিস্থিতি কেন, আর যদি পথ হারাই তাহলে সেটা কোথায় হারিয়েছি, কখন হারিয়েছি তা নিয়ে ভাবতে হবে তানাহলে আমাদের এ জাতি বিনাশ হয়ে যাবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে হেযবুত তওহীদের রাজশাহী জেলা হেযবুত তওহীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এ,কে,এম রাশেদ হাসান এর সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলোয়াত করেন বিশিষ্ঠ্য আলেম মোঃ মেহেদী হাসান সাগড়।

Highlights

How to Choose the Most Effective Essay Writing Service

Avatar photo

Published

on

If you are looking to know what the best online essay writing services are I’ve compiled some guidelines for you. There are many websites on the web that claim to offer quality essay writing assistance, however they’re often frauds. Be aware of the scams to avoid being swindled. Read and study as much information as you can on each website. Check (more…)

Continue Reading

Highlights

অধিকার আদায়ে শেরপুর প্রেসক্লাবে তালা দিয়ে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন

Avatar photo

Published

on

শেরপুর প্রতিনিধি:

শেরপুর প্রেসক্লাবের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলসহ ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে অধিকার বঞ্চিত জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা শেরপুর প্রেসক্লাবে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছে। পরে পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে উভয়পক্ষ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জেলায় কর্মরত শতাধিক সাংবাদিক প্রথম দিনের অবস্থান কর্মসূচী তুলে নেয়।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, পেশাজীবী সংগঠন পেশার মান উন্নয়ন, নিপীড়িত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের বিপদে সহযোগিতা এবং পেশায় কর্মরতদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করার কথা। কিন্তু প্রেসক্লাবের মত একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কিছু ব্যক্তির জন্য কুলুষিত হচ্ছে। যা এই শেরপুরের জন্যেও লজ্জাজনক। দেশের প্রথম সারির মিডিয়াতে কাজ করা কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হিংসা বসবত হয়ে কালো তালিকার ঘটনাও ঘটিয়েছে। এছাড়াও বিএনপি জামাত নেতৃবৃন্দের হাত থেকে প্রেসক্লাব মুক্ত করার দাবিও জানান তারা।

এসময় দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও মানবাধিকার সংস্থা আমাদের আইনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নূরে আলম চঞ্চলের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার আদিল মাহমুদ উজ্জল, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রফিক মজিদ, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মারুফুর রহমান মারুফ, দেশ রুপান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শফিউল আলম সম্রাট, দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অপস), শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল সহ উভয়পক্ষের তিনজন প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠক হয়। এসময় শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জাল, মহিউদ্দিন সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফুর রহমান মারুফ ও বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরে আলম চঞ্চল বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হিসেবে আগামীকাল পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এছাড়াও পরবর্তিতে এ বিষয়ে জেলার শীর্ষ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকতা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে পরবর্তীতে বৈঠক করে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা যায়।

Continue Reading

Highlights

কর্মচারী ‘নয়ন সিন্ডিকেটের’ দাপটে তটস্থ রমেক হাসপাতাল

Avatar photo

Published

on

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রকেম) হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের হয়রানি নতুন কিছু নয়। বিষয়টি সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী, রোগীর স্বজন, চাকুরি প্রত্যাশীদের হয়রানি, কথায় কথায় হাসপাতালের নিরীহ কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি, হাসপাতাল প্রশাসনকে দাপটের সাথে দাবিয়ে রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ‘নয়ন সিন্ডিকেট’র বিরুদ্ধে।

জানা যায়, নয়ন সিন্ডিকেটের প্রধান নয়ন হাসপাতাল থেকে বরখাস্ত হলেও ‘কর্মচারি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড’ এর সাধারণ সম্পাদক এর পদ ব্যবহার করে সব পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে জিম্মি করে রেখেছে। তার বিস্তর অপরাধের কাহিনী এখন ভুক্তভোগীসহ চিকিৎসাসেবীদেরও মুখে মুখে। এদের দৌরাত্মের নিকট অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন স্বয়ং হাসপাতালের বিদায়ী পরিচালক ডা. শরিফুল হাসানও। এক সাক্ষাতকারে এই নয়ন সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণ করে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সূত্র জানায়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০টি ওয়ার্ড রয়েছে। যার প্রতিটি ওয়ার্ডে বহিরাগত লোকবল নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছে ওষুধের দালালিসহ সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ ও সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি চুরি করার মোটা কমিশন হাতিয়ে নেয় নয়ন সিন্ডিকেট। এমন কি নয়নের সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বহিরাগত মাদকসেবীদের দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ডিউটি করান। যেসব মাদকসেবীদের দিয়ে অবৈধভাবে ডিউটি করান দিন শেষে তাদের হাজিরা না দিয়ে উল্টো তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় সারাদিনের কু-কর্মের ভাগ বাটোয়ারার হিস্যা।

সেবাগ্রহীতা, স্বজন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নয়ন ও তার গ্রুপের লোকেরা একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজদের সামান্য বিষয় নিয়ে লাঞ্ছিত, রোগী ও চিকিৎসাসেবীদের সাথে দুর্ব্যবহার, ওষুধ-সরঞ্জামাদি চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এছাড়ও হাসপাতাল প্রশাসনকে দাপটের সাথে দাবিয়ে রাখাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা নয়ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংঘঠিত হয় না। বরখাস্ত হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালের কর্মচারি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড এর খুঁটির নামে হাসপাতালের সব পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে জিম্মি করে রাখছে তার সিন্ডিকেট। প্রতিনিয়ত এই সিন্ডিকেটের নানামুখি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অসহায় ও উদ্বিগ্ন রমেক কর্তৃপক্ষও। এদের হয়রানি ও অত্যাচারের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না বলেও জানান অনেক ভুক্তভোগী।

আরও জানা যায়, নয়ন চাঞ্চল্যকর হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামি। হাসপাতালেও অভ্যন্তরে হত্যা, হত্যার উদ্দেশে মারপিট, গুরুত্বর জখম, চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা ও হুকুমদাতার অপরাধে আসামী নয়নের বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিনের কোতয়ালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও নানাবিধ ন্যাক্কারজনক অপরাধ অব্যাহতভাবে সংঘটিত করে আসছে এরা। নয়ন সিন্ডিকেটের এমন অপকর্ম রোধে দক্ষ প্রশাসনিক দায়িত্বের কোনো পরিচালক রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে বেশিদিন টিকতে পারেন না বলে একটি কথা এখন কর্মচারীদের মুখে মুখে প্রচলিত হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি বদলি হওয়া রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান সরকারের নির্দেশে হাসপাতালে আউর্সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কিছুসংখ্যক জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। বিদায়ী ওই পরিচালককে সেই নিয়োগ নয়ন সিন্ডিকেট মনোনীত ঠিকাদারকে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন যা বিধিবহির্ভূত হওয়ায় হাসপাতাল প্রশাসন তা মানেন নি। পরে তাদের মনগড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জনবল নিয়োগ বানিজ্যের সুযোগ করে না দেয়ায় সেই সূত্রপাত ধরে তৎকালীন পরিচালকের বিষয়ে নানা মিথ্যা অপবাদ তুলে অযৌক্তিক আন্দোলনের ধোয়া তুললে পরিচালক বদলি হন।

কথা বলতে চাইলে বিদায়ী পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান টেলিফোনে জানান, ‘যুদ্ধে আমি পরাজিত সৈনিক। অনেক চেষ্টা করেও রমেক হাসপাতালের দীর্ঘদিন থেকে গড়ে ওঠা দুর্নীতিবাজ অপশক্তি নয়ন সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছি। যতদিন এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে হাপাতালকে মুক্ত করা না হবে, ততোদিন উত্তরাঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্ছিত হতেই থাকবে।’

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে বরাদ্দ ছাড়াই সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নয়ন একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ রমেক ক্যাম্পাসের ১০নং কোয়ার্টারে থাকেন কিভাবে? এছাড়াও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) সহ গৃহস্থালি নানা রকম ইলেক্ট্রিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে সরকারি বিদ্যুৎ অপচয় করছেন নির্বিঘ্নে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে কর্মচারীদের মধ্যেও কানাঘোষা চলছে কিছুদিন ধরে।
এ বিষয়ে রমেক হাপাতালের কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নয়ন এর সাক্ষাতকার নিতে চাইলেও তাদের দেখা মেলেনি। পরে টেলিফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে অসুস্থতার কথা বলে ফোন কেটে দেন নয়ন। কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি শাহিনের সাথে রোববার (২৮ মে’ ২৩) তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।

হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী জানান, দীর্ঘদিন থেকে জিইয়ে রাখা অযুত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সময় ও সবার সহযোগিতা পেলে হাসপাতালের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবেন বলে তিনি আশাবাদী। তবে সংঘবদ্ধ নয়ন সিন্ডিকেটের ব্যাপারে বলেন, আমি সদ্য যোগ দিয়েছি। এখনও ভালো করে বুঝে উঠতে পারিনি। যথাযথ অভিযোগ পেলে দায়িদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Continue Reading