সিরিয়ার বোমা হামলায় নিহত ৬০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কর দক্ষিণে সাঈদা জয়নব শিয়া মাজারের কাছে একটি গাড়ি বোমা ও দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৫ শিয়া যোদ্ধাসহ অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বহু মানুষ। ‘দ্য অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ রোববার একথা জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় টিভি ফুটেজে ভবন জ্বলতে দেখা যাওয়াসহ আশেপাশে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাড়ি দেখা গেছে।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে। আইএস সমর্থিত বার্তা সংস্থা আমাক এ খবর জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, ‘দামেস্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিয়া মিলিশিয়া ঘাঁটিতে দুটি অভিযান চালানো হয়েছে।’ ‘দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ বলেছে, সাঈদা জয়নব এলাকায় আত্মঘাতী হামলায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এলাকাটিতে লেবাননের হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য ইরাকি ও ইরানি মিলিশিয়াদের শক্তিশালী উপস্থিতি আছে।
অবজারভেটরি প্রধান রমি আব্দুলরহমান বলেন, আত্মঘাতী হামলাকারীরা শিয়া মিলিশিয়াদের বহনকারী একটি সামরিক বাসে হামলা চালায়।সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সিরিয়া সরকার এবং বিরোধী পক্ষগুলোর প্রতিনিধিরা জাতিসংঘ-উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় যোগ দেওয়ার সময়টিতে এ সিরিয়ায় এ হামলা হল। সাঈদা জয়নব মাজারটি সিরিয়ার শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে পবিত্র ধর্মীয় স্থান বলে গণ্য। ইরান, লেবানন এবং মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকেও শিয়া মুসল্লিরা এ মাজারে ভিড় করে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, একদল জঙ্গি মাজারটির পার্শ্ববর্তী কুয়া সুদান এলাকায় গণপরিবহন রাখার একটি গ্যারেজে প্রথমে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। লোকজন সেখানে উদ্ধার কাজ চালানোর সময় দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ভিড়ের মধ্যে নিজেদের উড়িয়ে দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ এবং আহতের সংখ্যা ১১০ উল্লেখ করেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল জানায়, ‘এখনও ধ্বংসস্তুপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।’ ‘সন্ত্রাসীদের দল’ এ হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ওয়ায়েল আল-হালাকি। তিনি বলেন, ‘সেনাবহিনীর কাছে ক্রমাগত হারতে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের মনোবল চাঙ্গা করতে এ হামলা চালিয়েছে।’
ওদিকে, জেনেভা আলোচনার ব্যাপারে জাতিসংঘ বলেছে, তারা সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ছয়মাস ধরে আলোচনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। প্রথমে তারা যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা করবে। তারপর একটি নির্ভরযোগ্য সমাধানের পথ খুঁজে বের করবে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে এখন পর্যন্ত আড়াই লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গৃহহীন হয়েছে প্রায় এক কোটি মানুষ।
গৃহযুদ্ধের প্রথম কয়েক বছর সাঈদা জয়নব মাজার এলাকায় প্রচণ্ড সংঘর্ষ হলেও বর্তমানে এলাকাটি সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্র হিজবুল্লাহদের সুরক্ষায় ছিল।