Connecting You with the Truth

সিলেটে রিসোর্টে ১২ তরুণ-তরুণীকে আটকে কাজী ডেকে বিয়ে, রিসোর্টে অগ্নিসংযোগ

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়নের একটি রিসোর্টে বেড়াতে যাওয়া ৮ তরুণ-তরুণীকে ধরে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে কাজী ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। এ সময় রিসোর্টের একটি অংশে অগ্নিসংযোগও করা হয়।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে মোগলাবাজার থানা এলাকার রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ঘোষণায় রিসোর্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের রিজেন্ট পার্কে শুরু থেকেই অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছিল। গত ৫-৬ মাস ধরে এটি আরও বেড়েছে। এই পার্কে বেশ কয়েকটি বিশ্রাম কক্ষ রয়েছে। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও প্রেমিক-প্রেমিকারা এসব কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এ সুযোগে পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার দুপুরে ১২ জন ছেলে-মেয়ে কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে থাকে। খবর পেয়ে, দুপুরে স্থানীয় লোকজন এসে পার্কে হানা দিয়ে ওদের কক্ষের ভেতরেই আটক করেন। আটক ছেলে-মেয়েদের বয়স ১৬ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মোগলাবাজার থানা পুলিশ। পরে এলাকার মুরুব্বিরা আটক তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকদের খবর দেন এবং কাজী নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের কাজী আব্দুল বারী বলেন, “এলাকাবাসী ছেলে-মেয়েদের আটক করেন। তারপর আমাকে খবর দিয়ে নেওয়া হয়। তখন এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে চার ছেলে ও চার মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি বিয়ের দেনমোহর ১০ লাখ; আরেকটির দেনমোহর ১২ লাখ টাকা।”

কাজী আরও বলেন, “এসব ছেলে-মেয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ, মোগালাবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার এলাকার বাসিন্দা বলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন। বিয়ের সময় কয়েকজন বিএনপি নেতা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।”

জানা গেছে, এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা রিসোর্টের একটি অংশে অগ্নিসংযোগ করেন। খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এখানে ১২ জন তরুণ-তরুণী ছিলেন। তাদের বিভিন্ন কক্ষে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় আটক করা হয়। পরে এলাকার মুরব্বীরা তাদের অভিভাবকদের খবর দেন।”

ঘটনাস্থলে থাকা জাতীয়তাবাদী কৃষকদল সিলেট জেলার সদস্যসচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল বলেন, “অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ১২ জন ছেলেমেয়েকে আটক করেছিল এলাকাবাসী। এর মধ্যে আটজনের বিয়ে এবং বাকিদের পরিবারের সদস্যদের কাছে দেওয়া হয়েছে।”

এ ব্যাপারে রিসোর্টের ম্যানেজার হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনার সময় তিনি বাইরে ছিলেন, কী হয়েছে তিনি জানেন না। রিসোর্টটি লিজ নিয়েছেন নগরীর বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন। -ঢাকা ট্রিবিউন

Comments
Loading...