সৌদিতে পাড়ি জমালেন ইয়েমেন প্রেসিডেন্ট
সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছেন ইয়েমেনের আব্দ রাব্বু মনসুর হাদি। ইয়েমেনে উপসাগরীয় দেশগুলোর সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার একদিনের মাথায় তিনি দেশ ছাড়লেন। শুক্রবার (২৭ মার্চ) সৌদি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে। তবে কবে নাগাদ তিনি দেশে ফিরবেন তা জানা যায়নি। এদিকে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের দমনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে যৌথ সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক সময় রাত ১১টায় এ অভিযান শুরু হয় বলে নিশ্চিত করেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আদেল আল-জুবেইর। হুথি দমনে ইয়েমেন সরকারের জাতিসংঘ ও গালফ কাউন্সিলভুক্ত উপসাগরীয় ছয় দেশ- সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ‘হস্তক্ষেপ’ কামনার অংশ হিসেবে এ অভিযান শুরু হয় বলে জানা গেছে। সৌদি আরব ছাড়া বাহরাইন, কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও প্রেসিডেন্ট হাদির ডাকে সাড়া দেবে বলে জানা গেছে। ‘ডিসিসিভ স্টর্ম’ নামের এই অভিযানে দেড় লাখ সৌদি সেনা ও অন্তত একশ’ যুদ্ধ বিমান অংশ নিচ্ছে। এছাড়া সহযোগী দেশগুলোর পক্ষ থেকেও সেনা ও প্লেন যোগ দিয়েছে। এর আগে ইরানি পৃষ্ঠপোষকতাপুষ্ট শিয়া হুথি বিদ্রোহীরা সম্প্রতি ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে হাদিকে সানা থেকে পালিয়ে এডেনে চলে যেতে বাধ্য করেন। আনসার আল্লাহ বা হুথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনে একটি জায়দি সম্প্রদায়ভুক্ত শিয়া সংগঠন। জায়দি শিয়ারা হযরত হোসেনের (রা.) দৌহিত্র জায়দ ইবনে আলির অনুসারী। সংগঠনটির নামকরণ করা হয় হুসেইন বাদরেদ্দিন আল-হুথির নাম থেকে। ২০০৪ সালে ইয়েমেনে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হন তিনি। তাকেই নিজেদের আধ্যাত্মিক নেতা মনে করে হুথিরা। এদিকে ইয়েমেনে সৌদি সামরিক অভিযানকে ‘বিপজ্জনক‘ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছে ইরান। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্যিয়েহ আফখাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলবে। সেই সঙ্গে সংকট বাড়ানোর পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাধানের সব পথ অবরুদ্ধ করে দেবে। অভিযানের ব্যাপারে সৌদি আরবকে হুঁশিয়ারি দিয়ে হুথি বিদ্রোহীদের ঊর্ধ্বতন নেতা মোহাম্মদ আল-বুখাইতি বলেন, ইয়েমেনে আগ্রাসন চালালে এই অঞ্চলে বিশাল এক যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটবে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সামরিক অভিযান শুরুর পর এখন পর্যন্ত ইয়েমেনে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সেনা ও বিদ্রোহীদের সংঘাতে নিহত হয়েছে আরো অন্তত ১৮ জন।