জাতীয়
১৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধুর ৯৫ তম জন্মদিন
১৭ মার্চ, মঙ্গলবার । বাঙালি জাতির জীবনের এক মহা আনন্দের দিন। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সাহেরা খাতুনের কোলজুড়ে বাঙালির বহু শতাব্দীর পরাধীনতার শেকল ভাঙতে শান্তি ও মুক্তির বার্তা নিয়ে জন্ম নেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর বাল্যকাল টুঙ্গীপাড়া গ্রামেই কাটে। টুঙ্গীপাড়া প্রথমে কোটালীপাড়া এবং পরে গোপালগঞ্জ সদর থানার অন্তর্গত ছিল। মধুমতি আর বাঘিয়ার নদীর তীরে এবং হাওড়-বাঁওড়ের মিলনে গড়ে ওঠা বাংলার অবারিত প্রাকৃতিক পরিবেশে টুঙ্গীপাড়া গ্রামটি অবস্থিত। স্বাধীনতা লাভের পর টুঙ্গীপাড়াকে পৃথক থানা ঘোষণা করা হয়।
টুঙ্গীপাড়া গ্রামেই শেখ মুজিবুর রহমান ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা শস্য-শ্যামলা রূপসী বাংলাকে দেখেছেন। তিনি আবহমান বাংলার আলো-বাতাসে লালিত ও বর্ধিত হয়েছেন। শাশ্বত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ছেলেবেলা থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজা পীড়ন দেখেছেন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িকতার। আর পাড়া-প্রতিবেশী দরিদ্র মানুষের দুঃখ, কষ্ট তাকে সারাজীবন সাধারণ দুঃখী মানুষের প্রতি অগাধ ভালবাসায় সিক্ত করে তোলে। বস্তুত সমাজ ও পরিবেশ তাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রাম করতে শিখিয়েছে। তাই পরবর্তী জীবনে তিনি কোনো শক্তির কাছে, সে যত বড়ই হোক, আত্মসমর্পণ করেননি; করেননি মাথানত।
চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সাহেরা খাতুন দম্পতির তৃতীয় সন্তান।
শিশু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশবের কোনো চাওয়াই পিতা-মাতা অপূর্ণ রাখেননি। শিশু বঙ্গবন্ধু গ্রামের অনেক গরিব অসহায় পরিবারকে নিজের বাড়ির ধান দিয়ে, টাকা দিয়ে সাহায্য করতেন। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে গরিব বন্ধুদের স্কুলে আসতে দেখে তিনি নিজের ছাতা দিয়ে দিতেন। বই কেনার অভাবে অনেক বন্ধু যখন পড়াশোনা করতে পারতেন না, তখন নিজের বাড়ির ধান বিক্রি করে ওই সব বন্ধুদের বই কিনে দিতেন। শৈশবকাল থেকে গ্রামের মানুষের দুঃখে শেখ মুজিবুর কাঁদতেন এবং গরিব অসহায় মানুষদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন।
৭ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু পার্শ্ববর্তী গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে তিনি মাদারীপুর ইসলামিয়া হাইস্কুল, গোপালগঞ্জ সরকারি পাইলট স্কুল ও পরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে লেখাপড়া করেন। গোপালগঞ্জ মিশনারী স্কুলে পড়াকালীন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এলে কিশোর শেখ মুজিবুর তার পথ আগলিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ সংস্কার ও ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার হোস্টেল কত দিনের মধ্যে নির্মাণ করা হবে’।
শৈশব থেকেই শেখ মুজিবুর ছিলেন মানবিক গুণে গুণান্বিত, সাহসী ও দানশীল।
মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সময় তিনি চোখের দুরারোগ্য বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে কলকাতায় তাঁর চোখের অপারেশন করা হয়। এসময় কয়েক বছর তার পড়াশোনা বন্ধ থাকে। ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে কলকাতায় গিয়ে বিখ্যাত ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং খ্যাতনামা বেকার হোস্টেলে আবাসন গ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিএ পাশ করেন। শেখ মুজিবুর রহমান এই সময়ে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই সময়ে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সংস্পর্শে আসেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের একমাত্র চাওয়া-পাওয়া। যার জন্য জীবনে তিনি জেল-জুলুম-হুলিয়া কোনকিছুই পরোয়া করেননি। শত যন্ত্রণা, দুঃখ, কষ্ট-বেদনাকে তিনি সহ্য করেছেন, ফাঁসির মঞ্চও তার কাছে ছিল তুচ্ছ। এক কথায় বলতে গেলে বাংলা, বাঙালি, শেখ মুজিবুর একবৃত্তে তিনটি চেতনার ফুল। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধু চিরদিন অম্লান থাকবেন। তদ্রুপ বাংলার শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত-মেহনতি জনতার হৃদয়ে চিরভাস্বর থাকবেন তিনি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশ গড়ায় মনোনিবেশের পাশাপাশি শিশুদের কোমল মনোবৃত্তি বিকাশের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে শিশু পার্ক নির্মাণসহ অনেক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। শিশুদের প্রতি চরম মমত্ববোধের জায়গা থেকে এবং ‘আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ’ এই নীতিকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কার্যকরী ভূমিকার কারণে বাংলার জনগণ ১৭ মার্চকে জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
Highlights
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে জাতিকে নিরাপদ রাখার শপথ কুমিল্লা হেযবুত তওহীদের
Highlights
‘দেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে উগ্রবাদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান’
Highlights
হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে উগ্রবাদ-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
গ্রিস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিমানের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু
-
স্বাস্থ্য8 years ago
গলা ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা
-
দেশজুড়ে8 years ago
আজ চন্দ্র গ্রহন সন্ধা ৬টা ১২ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত
-
বিবিধ9 years ago
আর অটো রিক্সা নয় এবার অবিশ্বাস্য কম দামের গাড়ি!
-
জাতীয়8 years ago
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
-
জাতীয়9 years ago
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা
-
ফিচার8 years ago
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের ইতিহাস