Connect with us

জাতীয়

এখনো আশঙ্কামুক্ত নন গোলাম আযম

Published

on

golam-azamস্টাফ রিপোর্টার:
শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে গেলেও এখনও আশঙ্কামুক্ত নন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন গোলাম আযম।
গতকাল পৌনে একটার দিকে চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহ হিল আমান আযমী জানান, তার বাবার শরীর ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও আশঙ্কামুক্ত নন তিনি। তার শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ এবং খেতে না পারাটাই মূল সমস্যা। এগুলো নিয়ন্ত্রণে এলে শরীরের কিছুটা উন্নতি হবে। সিসিইউএ’র ৪ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আছেন গোলাম আযম। বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজা ভোগরত গোলাম আযম। সকাল সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎই শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপ বেড়ে গেলে প্রিজন সেল থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয় তাকে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী জানান, গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে গোলাম আযমের রক্তচাপ বেড়ে গেলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের সিসিইউতে নেওয়া হয়। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান তিনি। হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সিদ্দিক ও ডা. মেসতাক আহমেদের তত্ত্বাবধানে গোলাম আযমের চিকিৎসা চলছে। ডা. মো. আবু সিদ্দিক বলেন, সকালে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় গোলাম আযমকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। তিনিও জানান, রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী আরও জানান, সকাল দশটার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় তার বাবাকে সিসিইউতে নেওয়ার খবর তাদের জানান।
গত বছরের ১৫ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তার বিরুদ্ধে আনা ৫ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬১টির অভিযোগের সবক’টিই প্রমাণিত। তথাপি বয়স বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির পরিবর্তে এ-সাজা দেওয়া হয় বলে রায়ে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল। সে সময়কার চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর এবং বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে বলেন, গোলাম আযম মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য। তিনি সবকিছুর জন্য দায়ী। তিনি শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করেছিলেন। চাইলে তিনি তার অনুসারীদের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারতেন। কিন্তু সজ্ঞানে তিনি তা করেন নি। এখন তার বয়স ৯১ বছর। শুধু এই বিবেচনা করেই এ লঘু রায় দেওয়া হলো। পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত ছয়টি, সহযোগিতা সংক্রান্ত তিনটি, উস্কানির ২৮টি, সম্পৃক্ততার ২৩টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা-নির্যাতনের ১টিসহ মোট ৬১টি অভিযোগ আনা হয়েছিল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে। মামলার রায়ে এ ৬১টি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল এ পাঁচ ধরনের অভিযোগের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগে ১০ বছর করে, তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগে ২০ বছর করে ও পঞ্চম অভিযোগে ৩০ বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন গোলাম আযমকে। এ সাজা তিনি একাধারে ভোগ করবেন বলেও রায়ে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে সরকারি-বেসরকারি পদে যেন স্বাধীনতাবিরোধীদের চাকরি না দেওয়া হয়, সেজন্য সরকারকে আদেশ দেন। একই সঙ্গে জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, এরা দলবদ্ধভাবে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। এ দলটি ১৯৪৭ সালে যেমন পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে, তেমনিভাবে বাংলাদেশ সৃষ্টির সংগ্রামেরও বিরোধিতা করেছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *