Connect with us

কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় জনজীবনে স্থবিরতা

Published

on

Kurigram Winter photo-(1) 24.01.2016

শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম


হামার কিছু নাই বাহে, গরম কাপড় নাই। ঠান্ডায় বাঁচি না, বাধ রাস্তায় থাকি। কেউ হামার খোঁজ নেয় না। কথাগুলো বলেছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভেলাকোপা গড়ের পাড় এলাকার ছবরন বেওয়া (৬০)। এতিম পাঁচ নাতি-নাতনি নিয়ে ছাত্রদের মেসে রান্না করে কোন রকমে সংসার চলান তিনি। তার উপর গরম কাপড় কেনাটা তার নিকট দুঃস্বপ্নের মতো। হঠাৎ করে প্রচন্ড ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গরম কাপড়ের আভাবে বিপাকে পড়েছেন ছবরন বেওয়ার মতো হতদরিদ্র হাজারো মহিলা।
গত ২ দিন ধরে কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
উত্তরীয় হিমেল হওয়ায় ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কাজে যেতে পারছে না শ্রমজীবি মানুষেরা। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের অভাবে বিপাকে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে নদ-নদীর অববাহিকার চর ও দ্বীপচরের মানুষজন। রেহাই পাচ্ছেনা গবাদি পশুরাও। বোরো মৌসুম শুরু হলেও কনকনে ঠান্ডায় মাঠে কাজ করতে পারছে না কৃষি শ্রমিকরা। অনেকে কাজের সন্ধানে বের হলেও কাজ জুটছে না তাদের।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হরিকেশ এলাকার কৃষি শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, আমরা গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। ঠান্ডা হলেও উপায় নাই, কাজে না গেলে না খেয়ে থাকতে হবে। এজন্য জমির রোয়া লাগানোর কাজ করছি। কিন্তু থাকা যায় না। একটু খানি কাজ করে আবার উপরে উঠতে হয়।
এদিকে সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের কৃষক জব্বার আলী জানান, বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু জমি তৈরি করেও চারা লাগাতে পারছি না। শ্রমিক পাওয়া যায় না। ফলে চারা রোপন করতে বিলম্ব হচ্ছে।
কড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শওকত আলী জানান, কৃষকরা জমিতে বোরো চারা লাগাতে শুরু করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জমিতে চারা লাগানোর কাজ কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। তবে দু-চারদিন দেরিতে চারা লাগালেও ফসলের কোন সমস্যা হবে না।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, হঠাৎ করে শীতের মাত্রা বেড়ে গেছে। আমরা ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ৩০ হাজার কম্বল বিতরন করেছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন করে বরাদ্দ চাওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, আজ এ জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ অবস্থা আরো দু-একদিন চলতে পারে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *