Connect with us

Highlights

কেরুর বিষাক্ত বর্জ্যের পানিতে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ, মশার উপদ্রব

Published

on

কেরুর বিষাক্ত বর্জ্যের পানিতে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ, মশার উপদ্রব

কেরুর বিষাক্ত বর্জ্যের পানিতে ৪ মাস ধরে বন্দি হয়ে আছে মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়। এতে করে একদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন করা হচ্ছে অবমাননা অপরদিকে বিঘ্ন হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধােদের কার্যক্রম। চোখের সামনে ৪ মাস ধরে পানি বন্দী থাকলেও দিবা ঘুমে আছন্ন কেরুর কর্মকর্ত কর্মচারীরা। মুক্তিযোদ্ধা কোটার দাবিতে আন্দোলন করার খেশারত কিনা সে রহস্য খুজে পাচ্ছেন না মুক্তিযোদ্ধা সন্তানসহ সচেতন মহল।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ চিনিকল ও ডিস্টিলারি। কেরু এন্ড কোম্পানির বর্জ্যের দুর্গন্ধে এলাকাজুড়ে মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটছে। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে চিনিকলের আশপাশ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা- কর্মচারিদের নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার কারণে এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, কেরু এন্ড কোম্পানির জৈবসার তৈরির কাঁচামাল চিনিকল ও ডিস্টিলারির বর্জ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাব মিলের বর্জ্যপানি নিষ্কাশন লাইনের পাইপ ফেটে নোংড়া পানি বের হয়ে বিভিন্ন এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় মারাত্মকভাবে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে শহরে বসবাসকারী লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের সময় মিলের মানুষ তরল বর্জ্য ও মিলের যন্ত্রপাতি ধোয়ামোছাসহ আবাসিক এলাকার নোংরা পানি নিষ্কাশনের জন্য চিনিকল থেকে মাথাভাঙ্গা নদী পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাইপ লাইন বসানো হয়েছিলো। এ পাইপ লাইনটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ায় পাইপের বিভিন্ন অংশ ফেটে ও ভেঙ্গে মিলের তরল বর্জ্যসহ নোংড়া পানি বের হয়ে গোটা এলাকায় মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। কয়েক বছর আগে চিনিকল কর্তৃপক্ষ টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে পাইপ লাইনটি মেরামত করে। মেরামতকালে চিনিকলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুর্নীতির করণে নিয়োজিত ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার ফলে সংস্কারের কিছুদিনের মাথায় পাইপটি ফাটল দেখা দেয়। আবারোও পাইপ লাইনের বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল ধরে আগের অবস্থায় ফিরে গিয়ে অসহনীয় দুর্গন্ধে অতিষ্ট করে তুলেছে দর্শনা শহরবাসীকে। এর ফলে পথচারিরাও পড়ছে বিপাকে। দুর্গন্ধের কারনে কেরু এলাকা ছাড়াও শহরের আনোয়ারপুর, শান্তিপাড়া, পাঠানপাড়া, মোবারকপাড়া, ইসলামবাজার, পুনাতনবাজার, মহম্মদপুর, আজমপুরসহ গোটা শহর জুড়ে মারাত্মকভাবে বায়ুদূষন ঘটছে। ফলে বায়ুদুষনজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকায় বসবাসকারী মানুষ।

সরেজমিনে কেরুজ বাজারমাঠ সংলগ্ন এলাকা ও মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নোংড়া পানি উপচে গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেই পানি থেকে বের হচ্ছে পচা দূর্গন্ধ। ছড়িয়ে পড়া এই পানিতে জন্ম নেয়া মশা-মাছি দেখে মনে হয়েছে কেরু কোম্পানি চিনি ও স্পিরিট উৎপাদনের পাশাপাশি মশা-মাছিরও উৎপাদন শুরু হয়েছে। এর ফলে বাড়তে পারে ডেঙ্গু মশার উৎপাত। এমন পরিস্থিতিতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে চিনিকলের আশপাশ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। একটি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানের কারণে এলাকায়
এভাবে পরিবেশ দূষণের ঘটনায় জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। দীর্ঘদিন থেকে এ অবস্থা চলতে থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই। পরিবেশদূষণ রোধে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী বলেন আমরা দির্ঘদীন ধরে অফিসের ভিতর বর্জ্য পানি থাকার কারণে আমাদের কার্যক্রম করতে পারছি না। আমাদেরকে রিতিমত অবমাননা করছে কেরু চিনিকল কতৃপক্ষ। তবে আমি কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি অতিসত্বর ঠিক করে দেবে বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শেখ মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, বাজারমাঠ সংলগ্ন এলাকায় বর্ডার পানি বের হচ্ছে এমন খবর কেও আমাকে জানায়নি, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমাকে জানালে ব্যবস্থা নিতাম। ওই এলাকার পানিনিষ্কাশনের লাইন পৌরসভার ড্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। আমি যতদুর জানি ড্রেনের কাজ শুরু হয়নি ফলে পানি ওভারফ্লু হয়ে রাস্তায় চলে এসেছে। আর মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ের সামনে আমরা মাটি ভরাটের কাজ শুরু করবো, বাজেট হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ব্যাবস্হাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *