Connect with us

বিবিধ

জিরাফের ঘাড়নৃত্য!

Published

on

Giraffe Fight Club Iরকমারি ডেস্ক:

চাঁদ উঠেছে, ফুল ফুটেছে, কদম তলায় কে, হাতি নাচে ঘোড়া নাচে, খুকুমনির বে। খোকা-খুকুদের জমকালো বিয়ের আয়োজন ছাড়াই এবার ধুমিয়ে নাচল আফ্রিকান জিরাফ। গানের সুরে তাল মিলিয়ে, মাথা ও ঘাড় দুলিয়ে। কেনিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মাসাই মারাতে জিরাফের এই মনোরম নাচ দেখা গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা প্রাণী জিরাফ। অর্থাৎ, দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ আঠারো ফুট লম্বা হতে পারে এরা। যেমন দীর্ঘ দুটি পা, তেমন উঁচু তার ঘাড়। যদিও শরীরটা সেই তুলনায় অত্যন্ত ছোট। সারাদিন জাবর কাটে। নিজের কান পরিষ্কার করতেও একুশ ইঞ্চি লম্বা জিভ ব্যবহার করে। যাইহোক, জিরাফের এই নাচকে ইংরেজিতে বলা হয় নেকিং (হবপশরহম)। নেক মানে ঘাড়। কিন্তু জিরাফের বেলায় আমরা বলতে পারি ঘাড়তেড়ামি! নিজের দীর্ঘ ঘাড় ব্যবহার করে পুরো এই নাচ প্রদর্শন করল জিরাফ। তবে নাচ হিসেবে মানুষের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হলেও আসলে দুই পুরুষ জিরাফের আধিপত্য ছড়ানোর লড়াই ছিল এটি। যাতে ঘাড়ই তাদের প্রধান ও একমাত্র অস্ত্র। লড়াইয়ে বিজয়ী পুরুষ জিরাফই স্ত্রী জিরাফের সং¯পর্শে আসতে পারে। অথচ শান্ত, ভদ্রশিষ্ট ও নিরীহ স্বাভাবের প্রাণী বলেই পরিচিত জিরাফ। যদিও আক্রমণ করতে এসে জিরাফের লাথি খেয়ে সিংহেরও হার্টফেল করে মারা যাওয়ার নজির আছে। দীর্ঘ আকাশিয়া গাছের পাতাই এদের অন্যতম খাদ্য। অন্য প্রাণীরা অবশ্য এই লম্বা গাছের পাতা খেতেও পারে না। ছবিতে দেখা যায়, একটি জিরাফ ঘাড় বাকিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। একে অপরকে হারাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে ও লড়ে যাচ্ছে তারা। অবিশ্বাস্য হলো, দু’টি জিরাফের পর¯পরের প্রতি নিজেদের ভয়াবহ ও আক্রমণাÍক আচরণের পরেও তাদের এই লড়াই নাচের মতোই দৃষ্টিনন্দন ও অদ্ভুত আকর্ষণীয় লাগে। দর্শকরাও চোখ পাকিয়ে এ দৃশ্য দেখতে থাকেন। জিরাফ দেখতে এমনিতেই সুন্দর একটি প্রাণী, কিন্তু নাচের সময় সেই সৌন্দর্য দর্শকের ভেতরেও আবেশ ছড়ায়। রুশ বন্যপ্রাণি আলোকচিত্রী আন্দ্রেই গুডকভ (৪২) মাসাই মারা অঞ্চল থেকে নাচের সেই মনোরম দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন। আন্দ্রেই বলেন, জিরাফদের এই আচরণ আপাতত দৃষ্টিতে নাচ প্রদর্শন বলে মনে হবে। কিন্তু নিজেদের দলের মধ্যে কে বেশি শক্তিশালী তা প্রদর্শন করতেই মূলত তারা লড়াই করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই লড়াই অত্যন্ত নৃশংস ও নিষ্ঠুরও হতে পারে। কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে স্থায়ী হতে পারে ঘণ্টাখানেক। নাচের সময় দুটি জিরাফ একটি অপরটির ওপর ঘাড় এলিয়ে দিয়ে মোহনীয় দৃশ্য তৈরি করেছে। মানুষের কাছে এটা যুদ্ধ বলে অভাবনীয়। আসলে ওদের কাছে যেটা যুদ্ধ, সেটা আমাদের চোখে নৃত্য। তবে বনের ভেতরে সচরাচর এমন দৃশ্য দেখাও যায় না। আন্দ্রেই বলেন, এই অসাধারণ মজার দৃশ্যগুলো ক্যামেরাবন্দি করে দর্শকদের কাছে তুলে ধরাই একজন আলোকচিত্রীর কাজ। আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি বন্যপ্রাণি সংরক্ষিত আছে মাসাই মারা অঞ্চলে। বনবিড়াল, চিতা, সিংহসহ বহুসংখ্যক বণ্যপ্রাণি সংরক্ষণ করা হচ্ছে এখানে। বিশেষ প্রথা পালন ও পোশাক পরার জন্যেও বিখ্যাত এ অঞ্চলের লোকজন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *