দিনাজপুর
দিনাজপুরে সোনার দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি লুণ্ঠিত ৮০ভরি স্বর্ণালংকা উদ্ধার হয়নি॥ মামলা দায়েরর॥ ১৭টি তাজা ককটেল উদ্ধার
বৃহস্পতিবার মাগরিবের আজানের সময় দিনাজপুর শহরের সোনার মার্কেট চকবাজারের জুয়েলারী জড়োয়া ঘরে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ঠিক ইফতারের সময় ১০ থেকে ১২ জন কালো মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদল অসংখ্য ককটেল বিস্ফোরণ করে সোনার দোকান জড়োয়া ঘরে প্রবেশ করে স্টাফ ও শ্রমিকদের জিম্মি করে ফেলে। এসময় রিভলবার ও চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করা হয়। ডাকাতদের চাপাতির হামলায় দোকানের শ্রমিক নয়ন, রনি ও ম্যানেজার গোপাল রায় গুরুতরভাবে আহত হন। এদের মধ্যে নয়নকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, ডাকাতেরা ২৫/৩০টি শক্তিশালী ককটেল বিস্ফোরণ করে সমগ্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ডাকাতেরা ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি সম্পন্ন করে সিলভর কালার মাইক্রোবাসে নিরাপদে পালিয়ে যায়। মাইক্রোর নাম্বার প্লেটটি সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে দেয়া ছিল। ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার সময় উপযুপুরি ককটেল বিস্ফোরণ করে শহরের বাঞ্চারামপুল বালুবাড়ী দিয়ে দ্রুতগতিতে মাইক্রোযোগে চলে যান। পুলিশ জড়োয়া ঘরের অদূরে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকে ১২টি তাজা ককটেল এবং পাশের ড্রেন থেকে আরো ৫টি শক্তিশালী ককটেল উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত ১৭টি ককটেল পরে কোতয়ালী থানায় পানির বালতিতে নিস্ক্রিয় করা হয়।
বিস্ফোরনের পরপরই অদূরের চকবাজার আহলে হাদিস মসজিদের প্রায় ৪শ মুসল্লি ও এলাকার অসংখ্য মানুষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে রটে যায় যে, জড়োয়া ঘর থেকে ২শ গজ অদূরের আবাসিক হোটেল মৃগয়া ডাকাত দলের ২ জন সদস্য আশ্রয় নিয়েছে। উত্তেজিত জনতা মৃগয়া হোটেলের ২টি ভবনে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। ঘটনার ৪৫ মিনিট পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়। জনতার দাবীর মুখে রাত ১০টা পর্যন্ত মৃগয়া হোটেলের ২টি ভবনের প্রত্যেকটি কক্ষসহ ছাদ ও অন্যান্য স্থাপনায় পুলিশ ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) আবুল হাসনাত ঘোষনা করেন যে হোটেলে কোন ডাকাত দলের সদস্য পাওয়া যায়নি।
জড়োয়া ঘরের স্বত্বাধিকারী জগবন্ধু রায় জানান, অনুমান করা হচ্ছে ৩৬ লক্ষ টাকার ৮০ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতেরা লুট করে নিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কোতয়ালী থানায় জড়োয়া ঘরের পক্ষ থেকে মামলা করেন দোকানের ম্যানেজার গোপাল রায়।
কোতয়ালী থানার ওসি খালেকুজ্জামান পিপিএম জানান, শুক্রবার ভোরে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের সদর উপজেলার চুনিয়াপাড়া নামকস্থান থেকে ৪০টি গহনার বক্স ও ২টি কালো মুখোশ এলাকাবাসী উদ্ধার করে পুলিশের কাছে জমা দেন। তিনি জানান, সোনার দোকানে ডাকাতির সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানায় তার বার্তা প্রেরণ করে জোরদার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।