Connect with us

খাগড়াছড়ি

ফেনীতে অপহৃত স্কুল ছাত্র আশিক রামগড়ে উদ্ধার

Avatar photo

Published

on

20150901_185347 copyএমদাদ খান, রামগড়, খাগড়াছড়ি : প্রবাসী মামার কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আপন মামাত ভাইকে ফেনী থেকে অপহরণ করে আনা শিশু আইনুল ইসলাম আশিক(১৩)  মঙ্গলবার রামগড়ে উদ্ধার হয়েছে। রামগড় থানার পুলিশ অপহরণকারীকেও গ্রেফতার করেছে।

থানার উপ পরিদর্শক মো: মানিক মিয়া জানান, গত সোমবার আজহারুল ইসলাম(২২) প্রকাশ আজাদ নামে এক যুবক শিশু আশিককে ফেনী সদর থেকে অপহরণ রামগড়ে নিয়ে আসে। ফেনীর ছাগলনাইয়ার দক্ষিণ মোনদিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র আজহারুল ইসলাম প্রকাশ আজাদ শিশু আশিকের আপন মামাত ভাই। আশিকের পিতা নুরুল আমিন ভুইয়া সৌদি প্রবাসী। অপহরণকারী আজাদ শিশুটির বাবাা ও মায়ের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রামগড় বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকানে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে শিশুটির আত্মীয়স্বজনের সাথে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সূত্র ধরে পুলিশ অপহরণকারীকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে থানার অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন খানের নেতৃত্বে পুলিশের একটিদল অভিযান চালিয়ে রামগড় বাজার থেকে অপহৃত শিশু আশিককে উদ্ধার করে।

এদিকে খবর পেয়ে ফেনী মডেল থানার পুলিশ ও অপহৃত’র আত্মীয় স্বজন এসে রাতে আশিককে তার বাড়িতে নিয়েগেছে। উদ্ধার হওয়া শিশু আইনুল ইসলাম আশিক(১৩) জানায়, সে ফেনীর বিরলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। ফেনী সদরের শিবপুর এলাকায় তাদের বাড়ি। বাবা নুরুল আমিন ভুইয়া সৌদি প্রবাসী। ভাই বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। তার দুটি বোন আছে।

সে জানায়, গত সোমবার তার আপন ফুফাত ভাই আজাদ স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে তাদের বাসায় নিয়ে আসে। স্কুল ড্রেস পরিবর্তন করে ফুফাত ভাই আজাদ বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে তাকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। অটোরিকসায় করে ফেনীর মহিপাল এনে সেখান থেকে খাগড়াছড়ির বাসে করে রামগড়ের সোনাইপুল বাজারে নিয়ে আসে আজাদ। সোমবার সন্ধ্যার একটু আগে তারা সোনাইপুলে পৌঁছে। সোনাইপুল বাজারের পাশের জনৈক কামরুলের বাসায় শিশু আশিককে নিয়ে যায় আজাদ। ঐ বাড়ির গৃহকত্রীকে দূর সম্পর্কের খালা হিসাবে পরিচয় দেয়া হয় আশিকের কাছে। শিশু আশিক জানায়, আজাদ তার সাথে স্বাভাবিক আচরণ করে সার্বক্ষণিক। তাই সে বুঝতে পারেনি ফুফাত ভাই তাকে অপহরণ করেছে। অপহরণকারী আজাদের সহোদর নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার সন্ধ্যার পরও আশিক বাসায় না ফেরায় তারা সবাই সম্ভাব্য সব জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। রাতে আশিকের বাবা সৌদি আরব থেকে আজাদের মোবাইল ফোনে কল করে নিখোঁজ শিশু পুত্রের খোঁজখবর জানতে চাইলে সে জানায়, আশিক তার কাছে আছে। ১২ লক্ষ টাকা দিলে আশিককে ফিরিয়ে দেয়া হবে। আজাদের এ কথায় হতভম্ব হয়ে পড়েন আপন ভগ্নিপতি প্রবাসী নুরুল আমিন। টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একমাত্র শিশুপুত্র আশিকের কোন ক্ষতি না করার অনুরোধ জানান তিনি।

পরে বিষয়টি আশিকে মা অর্থাৎ অপহরণকারী আজাদের মামী আনজুমান আরা ও আজাদের বড় ভাই নজরুলকে জানান তিনি। নজরুল ইসলাম আরও জানান, আশিকের বাবার কাছ থেকে এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনে আজাদের সাথে কথা বলেন তিনি। আজাদ তাকেও সাফ জানিয়ে দেন মুক্তিপণ ছাড়া আশিককে ফিরিয়ে দেয়া হবে না। পরে আশিকের মা অর্থাৎ আজাদের মামী আনজুমান আরা কল দিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়ার আকুতি-মিনতি জানালে তার কাছেও একইভাবে মুক্তিপণ দাবী করে সে। মোবাইল ফোনে অনুরোধের পর মুক্তিপণের টাকা ১২ লক্ষ থেকে কমিয়ে ৮ লক্ষ টাকায় আনে আজাদ। আশিকের মা পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে রাজী হন। মঙ্গলবার সকালে আশিকের মা আনজুন আরা বেগম বাদি হয়ে ফেনী সদর থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী ২০০৩) ৭/৮ ধারায় দায়ের করা এ মামলার নম্বর ০৩, তারিখ ০১.৯.১৫।

ফেনী থানার পুলিশের দেয়া প্ল্যান অনুযায়ি বড় ভাই নজরুল আজাদকে ফোন করে একটি বিকাশ এজেন্টের নম্বর দিতে বলে মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর জন্য। এরপ্রেক্ষিতে আজাদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রামগড় বাজারের একটি মোবাইল ফোন দোকানে গিয়ে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করে নজরুলকে জানায়। ঐ দোকান থেকে বড় ভাই নজরুলের সাথে মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর কথপোকথন শুনে বিষয়টি রামগড় থানা পুলিশকে জানালে থানার অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দ্রুত এসে আজাদকে আটক করে।

থানায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর আজাদ তার আপন মামাত ভাইকে অপহরণের কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ি পুলিশ বাজারের একটি স্থান থেকে অপহৃত আশিককে উদ্ধার করে। রামগড় থানা পুলিশ ঘটনাটি ফেনী সদর থানায় জানানোর পর ঐ থানার উপ পরিদর্শক ও অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এবং আশিকে মামা নজরুল ও রনি মঙ্গলবার রাতে রামগড় থানায় ছুটে আসে। মঙ্গলবার রাতেই রামগড় থানা পুলিশ হস্তান্তরের পর ফেনী থানার পুলিশ অপহরণকারী আজাদ ও উদ্ধার হওয়া শিশু আশিককে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে বাস খাদে; নারী ও শিশুসহ নিহত ৩

Avatar photo

Published

on

খাগড়াছড়ির গুইমারায় বাস খাদে পড়ে এক নারী ও শিশুসহ তিনজনের প্রাণ গেছে; আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

গুইমারা কালাপানি এলাকার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বুধবার সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে গুইমারা থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। আহতদের পাঠানো হয়েছে মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে।

ওসি শরিফুল ইসলাম জানান,“সকালে বাসটি খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। “পথে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি রাস্তার পাশে একটি খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।”

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে বলে জানান তিনি।

Continue Reading

খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে বাস খাদে পড়ে নিহত ৬

Avatar photo

Published

on

khagrachariরামগড়(খাগড়াছড়ি)সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন ।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন টিটু জানান, বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি সদর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাসটি মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারা এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি রাস্তার পাশে প্রায় ২০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন যাত্রী নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে আনার পর এক শিশু মারা যায়। এ ছাড়া খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে আরো দুইজন মারা যায়। তাৎ ক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

Continue Reading

খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে একই রশিতে মা ও শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

Avatar photo

Published

on

খাগড়াছড়িতে একই রশিতে মা ও শিশুর ঝুলন্ত লাশরামগড়(খাগড়াছড়ি)সংবাদদাতা: খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গায় একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা ও তার এক বছরের শিশু পুত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের রমিজ কেরানি পাড়ায় হৃদয়বিদারক এ ঘটনাটি ঘটে।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: সাহাদাত হেসেন টিটো ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার বিকালে হতভাগ্য মা হোসনে আরা বেগম (২৫) ও তার এক বছরের শিশু পুত্র মো: জাহেদুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এদিকে ঘটনার পর থেকে হোসনে আরা বেগমের স্বামী মো. ইয়াছিন, তার বাবা ও ভাই গা ঢাকা দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে ঘরের ভিতর হঠাৎ চিৎকারের শব্দ শুনে হোসনে আরা বেগমের ঝাঁ রাবেয়া আক্তার দৌঁড়ে এসে দেখেন ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকানো। অনেক ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে কোন সাড়া না পেয়ে তিনি প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন। প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন ঘরের সিলিং থেকে একই রশিতে হোসনে আরা বেগম ও তার এক বছরের শিশু পুত্র জাহেদুল ইসলামের মৃতদেহ ঝুলে আছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবরটি পেয়ে মাটিরাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মা ও শিশু পুত্রের ঝুলন্ত লাশ দুটি উদ্ধার করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ৬ বছর আগে ইয়াছিনের সাথে পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয় বেলছড়ি ইউনিয়নের হোসনে আরা বেগমের। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা(ওসি) মো: সাহাদাত হেসেন টিটো জানান, মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা না কি হত্যা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তিনি জানান, এ ব্যাপারে নিহতের মা ছানোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের পলাতক স্বামী ইয়াছিনসহ অন্যান্যদের আটকের জন্য তৎপরতা চলছে।

Continue Reading