Connect with us

Highlights

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর

Published

on

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্ষপূর্তি আজ। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় এই যুদ্ধ। যুদ্ধ এখনো কোনো পক্ষ জয় পাইনি। প্রতিদিন শোন যায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও মৃত্যুর খবর। বৃস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতপ্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের শান্তির গন্তব্য বহুদূরে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে যুদ্ধের বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে পুতিন সেই নির্দেশের সমর্থনে কথাও জানান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের পক্ষে সমর্থন খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুতিন যখন জাতীয় ভাষণে জ্বালাময়ী কথা বলছেন, ঠিক তখনই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি খেরসনে রাশিয়ার হামলার শোকে বিলাপ করছেন।

তবে আলজাজিরার বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মত দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন কারও পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই। আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়াকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য জয় আসা উচিত বলেও মনে করেন অনেকে। এ ছাড়া রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।

যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কার যেন শেষ নেই দাবি করে তিনি বলেন, দুই দেশের কোনো পক্ষেরই জয়ের সরাসরি কোনো পথ পরিষ্কার নয়। ইউক্রেনকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়ার লক্ষ্যে পরিবর্তন আসেনি বলে মনে করেন ওয়াশিংটনভিত্তিক জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পাভেল লুজিন।

জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসবিদ নিকোলায় মিত্রোখিন বলেন, মৌলিক দৃশ্যকল্প রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন কোনো দেশই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।

রাশিয়ার গোটা দোনবাস দখলের সক্ষমতা নেই বললেই চলে। দেশটি জাতি হিসেবে ইউক্রেনকে ধ্বংস করে দেবে এটি অনেকের ধারণা।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সাবেক উপপ্রধান ইহর রোমানেঙ্কো বলেন, জানুয়ারির শেষ দিক থেকে রাশিয়ান বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। খারকিভের কিপিয়ানস্ক থেকে দীর্ঘ একটি যুদ্ধক্ষেত্র রয়েছে। পাঁচ দিক— কুপিয়ানস্ক, লেম্যান, বাখমুত, আদভিভকা ও শাখতার থেকে ভুহলেদার পর্যন্ত সব পথ, হাজার কিলোমিটারের বেশি হবে।

লন্ডনের কিংস কলেজের রুশ রাজনীতির অধ্যাপক গুলনাজ শরাফুতদিনোভা বলেন, যুদ্ধের শুরুতে থাকা লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি সামরিক বিপর্যয় সত্ত্বেও এখনো পুতিনের অবস্থান সুদৃঢ়।

রাশিয়ার সক্ষমতাকে উপেক্ষা করা যাবে না বলে দাবি করেছেন ওয়াগনারের সাবেক যোদ্ধা মারাত গাবিদুলিন।

রুশ সাংবাদিক ফারিদা রাস্তামোভা বলেন, পুতিনের অবস্থান আগের মতোই স্থির। তার নিরাপত্তা কৌশল, রাশিয়ায় নিজের শক্তি দেখাতে তিনি যেসব ব্যবহার করেন, সেগুলোর কোনো কিছুতে সামান্য পরিবর্তনও আসেনি। কার্যত সব শান্তি প্রক্রিয়াই শুরু হয় যুদ্ধরতদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক কথোপকথনের মাধ্যমে, বিশেষ করে মানবিক ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে। এভাবেই বিশ্ব কাজ করে থাকে, সবসময় এভাবেই করে এসেছে। শুধু কয়েকটি কারণে ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হচ্ছে না।

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে সাত হাজার ১৯৯ বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন হাজারও মানুষ।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভ ও খারকিভে আক্রমণ চালালেও সফল হয়নি তারা। আবার খেরসন নিয়ন্ত্রণে নিলেও তা ধরে রাখতে পারেননি রুশ সেনারা।

রাশিয়ার আগ্রাসনে প্রাণ বাঁচানোর জন্য লাখ লাখ ইউক্রেনীয় বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যে বলা হয়েছে— রাশিয়া হামলা শুরুর পর এক কোটি ৮৬ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছেন।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনের মানুষ সবচেয়ে বেশি আশ্রয় নিয়েছেন পোল্যান্ডে। এ ছাড়া ইউক্রেনীয়রা শরণার্থী হিসেবে হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *