Connect with us

খেলাধুলা

শেষ ম্যাচে হেরেই সিরিজ ড্র

Published

on

অবশেষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি হেরেই গেলো বাংলাদেশ। লঙ্কানদের করা ২৮০ রানের জবাব দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ৪৪ ওভার ৩ বলে ২১০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে শেষ ম্যাচে ৭০ রানের জয় পায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।

আপাতত বাংলাদেশের জন্য সিরিজ ড্রয়ের সান্তনা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ প্রথম ম্যাচের জয় পেয়ে এগিয়েই ছিলো টাইগাররা। স্বপ্নটা ছিলো সিরিজ জয়েরও। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টির জন্য পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে শেষ ম্যাচটিই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে পরিনত হয়। যেখানে বাংলাদেশের প্রত্যাশাও ছিলো একটু বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশার প্রাপ্তি আসেনি। ফলাফলের হিসেবে সিরিজ ড্র।

২৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কঠিন বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। মাত্র ১১ রানে হারাতে হয়েছে তিনটি উইকেট। প্রথম ওভারের শেষ বলে তামিম ইকবাল, তৃতীয় ওভারের শেষ বলে সাব্বির রহমানের পর চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হয়ে গেলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহীমও।

মাঝে সাকিব আর সৌম্য ৭৭ রানের জুটি গড়ে চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের ইনিংস মেরামত করার; কিন্তু ভালো খেলতে খেলতে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলেন সৌম্য সরকার। এরপর মোসাদ্দেক আর সাকিব মিলে চেষ্টা করেন জুটি গড়ার।

২৩ রানের জুটি গড়ার পর বোল্ড হয়ে গেলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২ ওভার পরই উইকেট হারান সাকিব আল হাসান। দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করার পর দিলরুয়ান পেরেরার বলে গুনাথিলাকার হাতে ক্যাচ দেন সাকিব। ৫৪ রানের ইনিংসি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নও শেষ করে দেন সাকিব। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ করেন ৭ রান। মাশরাফি ১৬ ও তাসকিন আহমেদ ১৪ রান করেন।

প্রথম তিন ওভারে দ্রুত তিন উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেছিলেন ওপেনার সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান। লঙ্কান বোলারদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে এ দু’জন উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি চেষ্টা করছেন রানের চাকাও সচল রাখার।

১১ রানে তিন উইকেট পড়ার পর চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব-সৌম্য মিলে ৭৭ রানের জুটি গড়েছেন। তবে ১৬তম ওভারে বরাবরের মতই ভুলটা করে বসলেন সৌম্য সরকার। ভালো খেলতে খেলতে খেই হারিয়ে ফেললেন যেন তিনি।

দিলরুয়ান পেরেরার অফস্ট্যাম্পের বাইরে করা ডেলিভারিটি এগিয়ে গিয়ে খেলতে যান সৌম্য। বল ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। সহজ সুযোগ ছাড়লেন না চান্দিমাল। সঙ্গে সঙ্গে উইকেট ভেঙে দিলেন। মৃত্যু ঘটল সম্ভাবনাময়ী একটি ইনিংসের। ৪৪ বলে ৩৮ রান করে আউট হলেন সৌম্য।

ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে কুলাসেকারাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। তার আগে একটি বাউন্ডারির মার ছিল তার ব্যাটে। এরপরই ক্যাচটা দিলেন দিলেন তিনি।

তামিম আউট হওয়ার পর সুরাঙ্গা লাকমালের ওভারটি কোনমতে কাটিয়ে দিলেন সৌম্য আর সাব্বির। পরের ওভারে বল করতে এসে আবারও বাংলাদেশের ইনিংসের ওপর আঘাত হানেন নুয়ান কুলাসেকারা। এবারও ওভারের শেষ বলে।

এবার কুলাসেকারার বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বলটিকে খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক দিনেশ চান্দিমালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাব্বির রহমান। রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে গেলেন বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ব্যাটসম্যান।

সৌম্য সরকারের সঙ্গে এসে জুটি বাধেন মুশফিকুর রহীম। প্রয়োজন ছিল এ দু’জনের একটি ভালো জুটির; কিন্তু পরের ওভারেই সুরাঙ্গা লাকমালের তৃতীয় বলটিতে পুরোপুরি পরাস্ত মুশফিক। এলবিডব্লিউর আবেদন উঠতেই আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দিলেন। মুশফিক রিভিউ নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। তাতে লাভ কিছুই হলো না। রানের খাতা খোলার আগে বিদায় নিলেন মুশফিকও।

এর আগে শনিবার সকালে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা ও দানুশকা গুনাথিলাকারার দারুণ ব্যাটিং ৭৬ রানের জুটি গড়ে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দেয় দলটি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন গুনাথিলাকারা। এরপর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি থারাঙ্গাও। তাসকিনের বলে বোল্ড হন তিনি।

এরপর চান্দিমালকে নিয়ে দলের হাল ধরেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কুশল মেন্ডিস। ৪৯ রানে জুটি গড়েছিলেন তারা। তবে চান্দিমালের নিজের ভুলে রানআউট হলে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা।

তবে ম্যাচের শেষ দিকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন থিসারা পেরেরা। অষ্টম উইকেটে দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকেন থিসারা। ৪৫ রানের দারুণ এক জুটি গড়লে ২৮০ রানের সংগ্রহ পায় স্বাগতিক শিবির। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন কুশল মেন্ডিস। এছাড়া শেষ দিকে ঝড় তুলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন থিসারা পেরেরাও। ৪০ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

বাংলাদেশের পক্ষে ৩টি উইকেট পান মাশরাফি। ২টি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া মিরাজ ও তাসকিন ১টি করে উইকেট নেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *