জাতীয়
হাসনাতই গুলশান হামলার পরিচালক, হত্যাকাণ্ডেও অংশ নেয় সে
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমই ছিলেন রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার অন্যতম পরিচালক। তিনি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে হামলা পরিচালনা ও মনিটরিং করেন। গুলশান হামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের একটি গোয়েন্দা সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলাকারীদের সঙ্গে হাসনাত করিমের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই। রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে রেস্টুরেন্টে হামলা হয়। এর ১১ মিনিটের মাথায় ৮টা ৫৭ মিনিটে হাসনাতের মোবাইল ফোনটি সন্দেহ করার মতো বেশ কিছু কাজে সক্রিয় হয়ে ওঠে। হাসনাত করিম হামলার খবরাখবর জানাতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ওপর নজর রাখতে শুরু করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, হামলা শুরুর পর দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া জানার জন্য তিনি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ওপর নজর রাখছিলেন। একইসঙ্গে রেস্টুরেন্টের বাইরে আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা ও বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে জঙ্গিদের আপডেট রাখছিলেন তিনি।
আর তার এসব কাজে সহযোগিতা করেন কানাডা প্রবাসী ছাত্র তাহমিদ খান। এমনকি নিজ হাতে অস্ত্র চালিয়ে তাহমিদও এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞে অংশ নেয় বলে তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনার শুরু থেকেই এই দুইজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আসলেও সম্প্রতি পাওয়া দুটি স্থিরচিত্র ও হাসনাত করিমের মোবাইল ফোনের ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে এসব চাঞ্চল্যকর ক্লু বেরিয়ে এসেছে।
স্থিরচিত্র দুটিতে দেখা যায়, জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের গলায় সামরিক কায়দায় ঝোলানো আছে একটি অত্যাধুনিক অস্ত্র। আর তার পাশে ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তাহমিদ খান ও হাসনাত করিম। ছবিতে তাহমিদের হাতেও অস্ত্র দেখা যায়। তিনজনই ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে একেবারে স্বাভাবিকভাবে একে অপরের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন।
জানা গেছে, প্রভাবশালী ও স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান হওয়ায় একটি পক্ষ শুরু থেকেই হাসনাত করিম ও তাহমিদ খানকে নির্দোষ প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছিলো। যে কারণে প্রথম দিকে বিভ্রান্তিতে পড়েন তদন্তকারীরা। তবে সর্বশেষ পাওয়া কয়েকটি ছবি এবং হাসনাত ও তাহমিদকে রিমান্ডে নেয়ার পর শনিবার তদন্তকারী সংস্থা হাসনাত করিম ও তাহমিদের জড়িত থাকার অকাট্য প্রমাণ পায়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আজ-কালের মধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জাতির সামনে পরিস্কার করা হতে পারে।